দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে : অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, “দ্বীন কায়েমের পথে প্রতিকূলতা হলো চিরন্তন বাস্তবতা। আর সফলতার শর্ত হচ্ছে দৃঢ়তার সাথে দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) রাজধানীর এক মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ‘থানা দায়িত্বশীল সম্মেলন-২০২৪’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ছাত্রশিবিরের প্রচেষ্টার কারণে ছাত্রসমাজের বিশাল অংশ বুঝতে পেরেছে যে, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টায় সম্পৃক্ততা ছাড়া পূর্ণাঙ্গ ইসলাম পালন সম্ভব নয়। সার্বিক জীবনে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন পালনের মধ্যেই দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা রয়েছে। এ সংগঠন শুধু দ্বীনের দাওয়াত দিয়েই কর্তব্য শেষ করে না; বরং কুরআনের আলোকে সৎ, দক্ষ ও আদর্শিক নাগরিক উপহার দিয়ে যাচ্ছে। যা জাতির জন্য রহমতস্বরূপ।
সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ছাত্রশিবির হত্যা, গুম, জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন ও সার্বিক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেও তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। কারণ, ছাত্রশিবির সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন ধারণ করেছে। ছাত্রশিবির জাহেলিয়াতের তাগুতি জীবনব্যবস্থা পরিবর্তন করে সেখানে দ্বীনের আলোকে সমাজ বিনির্মাণ করতে চায়। আমরা জানি এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন সহজ নয়। লক্ষ্যে পৌঁছাতে যোগ্যতা ও নৈতিকতার আলোকে সৎ, দক্ষ এবং আদর্শিক নাগরিক তৈরি করার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে ছাত্রশিবির। একই সাথে জনগণকে পূর্ণাঙ্গ ইসলাম সর্বস্তরে বাস্তবায়নের গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা দেশ ও ইসলামের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে জনগণের কাছে প্রত্যাশার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।”
তিনি বলেন, এদেশের মানুষ ইসলামপ্রিয়। আমরা বিশ্বাস করি, সময়ের ব্যবধানে জনগণ ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থাকে সমর্থন করবে। এখন ছাত্রশিবিরের প্রচেষ্টাকে আরো তীব্র করতে হবে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার শর্তগুলো পূরণ করতে হবে। ইসলামী বিপ্লব মানে ব্যক্তির ক্ষমতা গ্রহণ নয়; বরং ইসলামের আলোকে সর্বস্তরের মানুষের চিন্তা ও কর্মের পরিবর্তন। আগামীর দিন সম্ভাবনার। ধৈর্য, সাহসিকতা ও মহান আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা এবং বিশ্বাস রেখে যেকোনো মূল্যে দাওয়াতি কাজ অব্যাহত রাখা, সংগঠনের মজবুতি অর্জনসহ যোগ্য নাগরিক তৈরির প্রচেষ্টা আরো বৃদ্ধি করতে হবে। দৃঢ়তার সাথে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলে সময়ের ব্যবধানে আমরা সফল হবই।
কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর সেলিম উদ্দিন ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, হক বাতিলের সংঘাত চিরকালের। হকের পথের বড় পাওয়া হলো এ পথের সাথে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা থাকেন। সুতরাং হকপন্থিদের হতাশ বা চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। সময়ের ব্যবধানে বাতিলকে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাই ধ্বংস করে দেন। দেশে সার্বিক অপশাসন ও দুর্বিষহ জীবনযাত্রায় দেশের মানুষ হতাশ। তারা মুক্তির প্রহর গুনছে। দেশবাসী প্রত্যাশা করে ছাত্রশিবির মুক্তির দূতের ভূমিকা পালন করবে, ।
কেননা, দেশের ছাত্ররাজনীতিতে ছাত্রশিবির মেধাবী, চরিত্রবান ও অপ্রতিরোধ্য ছাত্রসংগঠনের নাম। এখন সংগঠনের দায়িত্ব আরো বেড়ে গেছে। ছাত্রশিবিরের দায়িত্বশীলদের সর্বাবস্থায় পরিকল্পিতভাবে ময়দানে সক্রিয় থাকতে হবে। কুরআন-হাদিসের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। মেধার স্বাক্ষর রাখা সময়ের দাবি। পরিচ্ছন্ন ও আকর্ষণীয় জীবনযাপন করতে হবে। সর্বস্তরের শিক্ষার্থীর কাছে দাওয়াত পৌঁছানো নিশ্চিত করা জরুরি। সকল পরিস্থিতিতে মহান আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা, বিশ্বাস ও ভরসা করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের এ আন্দোলন আমাদের মুক্তির পথ দেখায়। এ আন্দোলনের কোনো শর্টকার্ট পদ্ধতি নেই; বরং ২৩৪ জনের শাহাদাত, অসংখ্য জনশক্তির ত্যাগ, জুলুম, নির্যাতন সহ্য করা ও প্রতিকূলতার মোকাবিলা করে এ কাফেলা দীর্ঘ যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। আমাদের মূল লক্ষ্য সকলের কাছে ইসলামের সুমহান আদর্শের দাওয়াত পৌঁছে দিয়ে মহান আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন। আমরা জানি ময়দান এখন আরো প্রতিকূল। কিন্তু ধৈর্য, সাহসিকতা ও ত্যাগের মাধ্যমে দাওয়াত, প্রশিক্ষণসহ সার্বিক সাংগঠনিক কাজ অব্যাহত রাখতে হবে।”
প্রস বিজ্ঞপ্তি