আমেরিকার সরকার বললেই পোশাক রপ্তানি বন্ধ হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
Share on:
বাংলাদেশ থেকে সস্তায় পায় বলে পোশাক কেনে আমেরিকা। সুতরাং সেদেশের সরকার বললেই পোশাক রপ্তানি বন্ধ হবে না বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশের পোশাকশিল্প মালিকরা ডায়নামিক উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় আমাদের ভয় ছিল যে আমেরিকা কোটা সিস্টেম উঠিয়ে দিলে না জানি কী ভরাডুবি হবে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমেও এ নিয়ে শোরগোল উঠেছিল। পরে দেখা যায়, আমাদের ব্যবসায়ীরা এতই স্মার্ট যে কোটা সিস্টেম উঠিয়ে দেওয়ার পরে রপ্তানি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিলো।
এখন কী হবে না হবে জানি না। তবে আমাদের গতিশীল প্রাইভেট সেক্টরের ওপর আমার আস্থা আছে। আমি বিশ্বাস করি, আমেরিকার সরকার বললেই এটা বন্ধ হবে না। কারণ ওখানের প্রাইভেট খাতগুলো তাদের সরকারকে অনেকসময় পাত্তাই দেয় না। আর তারা কেনে, কারণ তারা সস্তায় পায়।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শ্রমনীতি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এক চিঠিতে সতর্ক করেছে ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস। এটা কী কারণে জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘দুনিয়ার মজদুরদের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র একটি ভালো কাজ করছে বলে আমি শুনেছি। আপনাদের মনে হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট লিডন বি. জনসন যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন তিনি দুনিয়া থেকে দারিদ্র্য দূর করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। এটা বড় কর্মসূচি ছিল। এতে অনেক দেশের দারিদ্র্য কমে গিয়েছিল। সেই কর্মসূচির কারণে আমরাও উপকৃত হয়েছি।’
‘সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মতো সবচেয়ে ধনী দেশ, যেখানে তাদের মাথাপিছু আয় ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার, সেই দেশও যদি দুনিয়ার মজদুরদের জন্য, তাদের জীবনমানের উন্নয়নের জন্য একটি ভালো কর্মসূচি নিয়ে আসে, সেটা অনেক বড় উদ্যোগ। আমি আশা করবো, তারা পৃথিবীর আবহাওয়াজনিত সমস্যা দূর করতে কর্মসূচি নিয়ে আসবে, মজদুর ও উদ্বাস্তুদের জন্য একটি ভালো প্যাকেজ নিয়ে আসবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর সবার আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক আমেরিকা। তারাই শেষ আশ্রয়, জীবনের শান্তির জন্য। তারা যদি এমন সুন্দর সুন্দর কর্মসূচি নিয়ে আসে, আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাবো। আমরা চাই, দুনিয়ার সব শ্রমিকরা ভালো থাকুক।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই আইনটা আমি পড়িওনি। দুঃখজনক, আমাদের দেশের প্রতি প্রেমের অভাব আছে। তারপর অনেক গোপনীয় নথি সংবাদমাধ্যম ও আমাদের সহকর্মীরা প্রকাশ করে দেন। এটা অন্য দেশে হয় না। বিদেশের লোকজনের দেশের প্রতি মমত্ববোধ অনেক বেশি।’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা চাই না আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হোক। তৈরি পোশাকখাতের বড় বড় ক্রেতারা ইউরোপীয় ও আমেরিকার। এটা আমাদের বড় রপ্তানি। এক্ষেত্রে ব্যাঘাত হলে অসুবিধা হবে। তবে এতটুকু বলে রাখতে চাই, এগুলো সব প্রাইভেট সেক্টরের, আর যারা ক্রেতা, তারাও প্রাইভেট সেক্টরের। সুতরাং, তারা সরকারের কারণে কেনে না, তারা কেনে সস্তা ও ভালো মানের পণ্যের কারণে এবং সঠিক সময়ে ডেলিভারি হয় বলে।’
এমএইচ