ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করছে সরকার
Share on:
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলছেন, ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে সরকার দেশে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটিয়ে চলেছে।
ভোটাধিকার হরণ করে জনগণের সম্মতি ছাড়া ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে সরকার গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ গায়েবি মামলা করছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক দমন পীড়ন করে সর্বজনীন মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লঙ্ঘন ঘটিয়ে চলেছে। একতরফা তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে আরও একটি একতরফা তামাশার নির্বাচন অনুষ্ঠানের পাঁয়তারা করছে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে কারওয়ান বাজারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয়ে সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন বক্তারা।
নেতারা বলেন, খেয়াল খুশিমতো হাজার হাজার বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, অত্যাচার-উৎপীড়ন এবং ফরমায়েশি সাজার মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক তৎপরতাকে নিশ্চিহ্ন করতে চাইছে। বাংলাদেশে যে একটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আছে সেটাই এখন বোঝা যায় না। এই কমিশন দেশের মানুষের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কোনো উদাহরণ আর রাখছে না। তাদের ন্যূনতম দায়িত্বও পালন না করে সরকারের তাবেদারি করে চলেছে। এইভাবে তারা বাংলাদেশকে এবং দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক পরিসরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে স্যাংশনের মুখোমুখি করেছে এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ও কূটনৈতিক দিক থেকে ভয়ংকর ও বিপজ্জনক খাদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
নেতারা আরও বলেন, উন্নয়নের নামে গণতন্ত্র হরণ করে সরকার লুটপাট টাকা-পাচার, ব্যাংক লোপাট এবং সিন্ডিকেটের এক ভয়াবহ রাজত্ব তৈরি করেছে। দেশে রিজার্ভ সংকট এবং ঋণের বোঝা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে একটি অর্থনৈতিক বিপর্যয় আসন্ন হয়ে উঠছে। সরকারের লুটপাটের রাজত্ব যে দেশে একটা দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি আসন্ন করে তুলছে সেটা আঁচ করে প্রধানমন্ত্রী সেই দায় বিরোধীদলের ওপর চাপিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা করছেন। দেশের মানুষের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে এইভাবে ছিনিমিনি খেলা জনগণ কোনোভাবেই মেনে নেবে না। জনগণ দেশ নিয়ে এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দিবে না।
তারা হুঁশিয়ার করে বলেন, অবিলম্বে একতরফা তফসিল স্থগিত করে আলোচনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। আর তা না হলে জনগণ গণআন্দোলনে সরকারের পতন ঘটিয়ে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নাগরিক অধিকার ও দেশের অস্তিত্ব রক্ষা করবে। চলমান আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি হিসেবে আগামী ১২ ডিসেম্বর সকাল ৬টা থেকে টানা ৩৬ ঘণ্টা দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমম্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)র সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন। সমাবেশ পরিচালনা করেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু।
এমএইচ