সরকার বিরোধীদলকে নির্মূল করার চেষ্টায় লিপ্ত : মির্জা ফখরুল
Share on:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার বিরোধীদলকে নির্মূল করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। শুক্রবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগেও বিরোধী দলকে নির্মূল করার জন্য, বিরোধীদলের সমস্ত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে মাঠশূন্য করার চেষ্টা করেছিল। ২০১৪ সালে একইভাবে তারা এ কাজই করেছিল। এখন আবার একই চেহারায় আবির্ভূত হয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার মামলা ভয়-ভীতি ছড়িয়ে বিরোধীদলকে নির্মূল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ২০২৩ সালে যে তথাকথিত নির্বাচন করতে চায়, সেই নির্বাচন তারা যেন এককভাবে আগের মতই করতে পারে এমন কৌশলই তারা অবলম্বন করেছে।
তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দল নয়। আওয়ামী লীগের অধীনে কখনোই কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। আওয়ামী লীগের শাসনামলে কখনই গণতন্ত্র একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেতে পারে না। আওয়ামী লীগের শাসনামলে কখনোই রাজনৈতিক দলগুলো নিরাপদ নয়। গণতন্ত্র নিরাপদ নয়ই। আজকে তারা গণতন্ত্রের মোড়ক দিয়ে সম্পূর্ণভাবে একটি কর্তৃত্ববাদী একনায়কতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘৭৫ সালে আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। ঠিক একই কায়দায় তারা শুধু এখানে কৌশলটা পরিবর্তন করেছে। তারা এখানে গণতন্ত্রের একটি মোড়ক, লেবাস পড়েছে আর ভেতরে সম্পূর্ণভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এটা করতে গিয়ে তারা যে ভয়াবহ কাজ করছে তা হলো - বাংলাদেশের যে আত্মা সেটাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। মূল ক্ষতিটা আওয়ামী লীগ যেটা করছে - গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা ধ্বংস করে দিচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে দিয়ে আবারও একইভাবে বিএনপিকে নির্মূল করার চেষ্টা করছে। একদিকে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছে, অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে মূল বিরোধীদলকে নির্মূল করার চেষ্টা করছে। এছাড়া অন্যান্য বিরোধীদলগুলো যখন কোনো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে এসেছে তাদেরকেও একইভাবে মামলা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ৬ এপ্রিল দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে লিফলেট বিতরণকালে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে বিনাউস্কানিতে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় অনেক কর্মীদেরকে মারধরও করা হয়। পরে আদালত চত্বরেও বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২ শত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। মহানগর দক্ষিণের নেতৃবৃন্দ এবং সকল থানা সভাপতি ও সম্পাদকের নামে এই মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য কী? সেই একই কায়দায় পার পেয়ে যাওয়া। একজন হজে গিয়েছেন আর তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাই এই সরকার যতদিন ক্ষমতা থাকবে ততদিন মানুষের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাবে, বলেন বিএনপি মহাসচিব।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র আহ্বায়ক আব্দুস সালামসহ দক্ষিণ বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এমআই