হঠাৎ বৃষ্টি, বিপাকে আলু চাষীরা
Share on:
কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও দাম নিয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন চাষিরা। তারা বলছেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে, তবে দাম কম হওয়ায় আলু চাষিরা বিপাকে পড়েছেন।
রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার পদ্মার চরে গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে।
কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও দাম নিয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন চাষিরা। তারা বলছেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে, তবে দাম কম হওয়ায় আলু চাষিরা বিপাকে পড়েছেন।
অপরদিকে গতকাল দিনভর বৃষ্টি থাকায় কেউ থালা দিয়ে জমির পানি সেচছেন, কেউ নালা করে পানি অপসারণের চেষ্টা করছেন আবার কেউ পানিবন্দি জমিতে কাঁদার মধ্যেই আলু তুলছেন।
গতকাল শুক্রবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জয়পুরহাট সদর, ক্ষেতলাল ও কালাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে এমন দৃশ্যই দেখা গিয়েছে।
মাঘ মাসে হঠাৎ বৃষ্টিতে শঙ্কিত জয়পুরহাটের আলুচাষিরা। বৃষ্টি বেশি হলে জমিতে পানি জমে আলু নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। তবে কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, জমে থাকা পানি দ্রুত অপসারণ করলে আলুর তেমন ক্ষতি হবে না।
কালাইয়ের থুপসারা গ্রামের আলুচাষি রবিউল ইসলাম, রনি হোসেন বলেন, এমনিতেই বাজারে আলুর দাম কম। প্রতি বিঘায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। তার ওপর বৃষ্টির পানি। আলুর খেত নিচু জমিতে হওয়ায় পানি জমেছে। আলুর জমিতে পানি জমে থাকলে পচন ধরবে। এতে আলুর ব্যাপক ক্ষতি হবে।
ক্ষেতলালের বিনশিরা মাঠে পাকরি আলু তুলছেন রফিকুল ইসলাম ও তার মা। রফিকুল ইসলাম বলেন, টানা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে গেছে। এই আলু তোলার এখনো সময় হয়নি।
কিন্তু বৃষ্টির পানি বের করে দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। পানি জমিতে থাকলে আলু পচে নষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য কাঁদার মধ্যে আলু তোলা হচ্ছে। পরে তা ফের পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।
সদরের বম্বু ঘোনাপাড়া গ্রামের আলুচাষি আবদুল খালেক জানান, নিজের ২ বিঘা এবং বর্গা নেওয়া ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। ইতোমধ্যে এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করে প্রায় ৩ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। এখন বৃষ্টির কারণে আলুতে পচন ধরলে পথে বসতে হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭ হাজার হেক্টর, কালাইয়ে ১১ হাজার ১০০ হেক্টর, ক্ষেতলালে ৯ হাজার হেক্টর ও আক্কেলপুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার ( ৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৩টা থেকে শুক্রবার ( ৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলায় ১৭.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। রাত থেকে বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে পানি জমেছে।
আরও পড়ুন:
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে মাঠ থেকে কিছু আলু তোলা হয়েছে। দিনভর বৃষ্টি হওয়ায় আলুর ক্ষেতে পানি জমেছে। তবে কৃষকরা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করছেন। জমে থাকা পানি দ্রুত অপসারণ করলে এবং বৃষ্টি না হলে তেমন ক্ষতি হবে না।
এইচএন