‘মাহবুব আলীর কারণে সুমনের মতো বাটপার নির্বাচিত হয়েছিল’
Share on:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে হোটেল কর্মী সিয়াম সরদারকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় সাবেক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেন এ আদেশ দেন।
শুনানিতে বিএনপিপন্থি আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, মাহবুব আলী এলাকায় এতো চুরি করেছেন যে সেখানে যেতে পারেন না। যার কারণে সুমনের মতো বাটপার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি অবৈধ ভোট চোরাকারবারি। তার শিক্ষা-দীক্ষা কাজে লাগাননি।
তিনি বলেন, মাহবুব আলী সুপ্রিমকোর্ট বারের সদস্য। আমাদের গোত্র এক। কিন্তু গোত্র এক হলে কী হবে। চুরি করলে একই গোত্র আর থাকে না। বিমান প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে দুটি বোয়িং বিমান কিনে লুট করেছেন। এ কারণে তাকে সব জায়গা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এরা জামিন পেলে দেশে নৈরাজ্য, ফ্যাসিবাদ, মানুষ হত্যার আবার ষড়যন্ত্র করবে। এরা জনগণের দুশমন, বিকৃত, মৌলিক অধিকার হরণকারী। মানুষ এখন মন খুলে হাসছে। এরা আবার আসলে তা বন্ধ হয়ে যাবে। তার জামিনের বিরোধিতা করছি।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রহমান সাবেক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। তার পক্ষে আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
মাহবুব আলীর আইনজীবী বলেন, তিনি এজাহারভুক্ত নন। ঢাকা সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সেক্রেটারি ছিলেন। নিয়মিত প্র্যাকটিস করেন। আওয়ামী লীগের লোকাল কমিটি থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে শেখ হাসিনা সরকারের অরাজকতার সঙ্গে একমত ছিলেন না। তিনি বিমান প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে সেক্টরকে লাভজনক করেছেন। অসুস্থ, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তিনি আইনজীবী, তার পালানোর সম্ভাবনা নাই।
রাষ্ট্রপক্ষে ইন্সপেক্টর মো. আসাদুজ্জামান জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, এটা হত্যা মামলা। তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। জামিনের বিরোধিতা করছি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর তাদের আদালত থেকে গারদখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় মাহবুব আলীর ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন আইনজীবীরা। সেটা গিয়ে তার মুখে লাগে।
গত রোববার রাতে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে মাহবুব আলীকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভিকটিম সিয়াম সরদার (১৭) রাজধানীর মিরপুরের হোটেল রাব্বারিতায় চাকরি করতেন।গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ডিউটি শেষে বাসায় যাওয়ার পথে মিরপুর ১০-এ গুলিতে আহত হন।তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গত ৪ সেপ্টেম্বর তার বাবা সোহাগ সরদার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মিরপুর থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আসাদুজ্জামান নূরসহ ১১৪ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় তাকে সন্ধিগ্ধ আসামি হিসেবে গ্রেফতার করা হয়।
এনএইচ