tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ২১ জুন ২০২৪, ১৯:৪১ পিএম

সদরঘাটে ভিড়ছে যাত্রীবোঝাই লঞ্চ


sadarghat-launch-tarminal-20240621180124

পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষে সরকারি ছুটির দিনেও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঢাকামুখী মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন নাড়ির টানে বাড়ি যাওয়া মানুষজন।


ঢাকামুখী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করলেও বাড়তি চাপ নেই রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। স্বাভাবিক সময়ের মতোই রয়েছে ঢাকামুখী যাত্রীদের সংখ্যা। তবে রাজধানীর প্রধান এ নদীবন্দরে একদিকে যেমন দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ যেমন আসছেন, অন্যদিকে ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন অনেকেই।

শুক্রবার (২১ জুন) দুপুরের পর থেকেই ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের সবগুলো লঞ্চ ডেকে পরিপূর্ণ যাত্রী নিয়ে ঘাটে ভেড়ে। ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী নিয়েও কিছু লঞ্চ ঢাকার এসে পৌঁছায়।

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সকাল থেকেই একে একে ভিড়তে থাকতে দেখা গেছে বিভিন্ন রুটের লঞ্চ। দুপুরের পর থেকে গ্রিন লাইন-৩, পারাবত- ৯, ১০, ১২ ও ১৮, মানামী, কুয়াকাটা-২, কীর্তনখোলা- ২ ও ১০, সুরভী- ৮ ও ৯, অ্যাডভেঞ্চার-১ ও ৯, সুন্দরবন-১২ লঞ্চসহ মোট ১৫টি লঞ্চ বরিশাল নদীবন্দর থেকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এসে পৌঁছায়।

মানামি লঞ্চের চালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এবার ঈদের আগে যেমন যাত্রীচাপ ছিল, পরে তেমন হচ্ছে না। এদিন সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় অনেকেই ঢাকা ফিরছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা মো. আল আমিন পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী থেকে ফিরেছেন ঢাকায়। তিনি বলেন, এমভি এ আর খান লঞ্চের টিকিট পেয়েছি। তবে লঞ্চে অনেক মানুষের ভিড় ছিল। ঠিকভাবে ঢাকায় আসতে পেরেছি এটাই অনেক।

এদিকে রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাটে যেমন ঢাকামুখী মানুষের ভিড় তেমনি ফিরতি যাত্রীর ভিড়ও কম নয়। বরিশাল, ভোলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা লঞ্চগুলোর কর্মীরা যাত্রীদের ডাকাডাকি করছেন। মানুষ একে একে লঞ্চে উঠছেন। বেশ কয়েকটা লঞ্চের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ডেক ভর্তি বসে আছেন মানুষ। কেউ আবার কেবিন নিয়ে দরদাম করছেন।

বিকেল সাড়ে ৫টায় হাতিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে এমভি ফারহান-৩ নামের লঞ্চ। লঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের ডাকাডাকি করছিলেন ওই লঞ্চের কর্মী আবুল হোসেন। তিনি জানান, বেশ কয়েকদিন থেকে বেশি লোক বাড়ি যাচ্ছেন। যারা ঢাকায় ঈদ করেছেন তাদের অনেকেই এখন গ্রামে যাচ্ছেন।

ঢাকা থেকে মনপুরা, হাতিয়ার দিকে যাবে এমভি তাসরিফ। লঞ্চের কর্মী মাসুম বলেন, লঞ্চে এরই মধ্যে পাঁচ-ছয়শো মানুষ উঠেছে। আর কিছুক্ষণ পর লঞ্চ ছাড়বে। এর মধ্যে আরও মানুষ উঠবে।

ভোলার চরফ্যাশন ও বেতুয়া যাবে এমভি টিপু-১৩। লঞ্চটিতে গিয়ে দেখা যায়, ডেক ভর্তি মানুষ। ভোলাগামী যাত্রী সাদিক বলেন, কাপড়ের দোকানে কাজ করি। ঈদের আগের দিনও খোলা ছিল। তাই ভাবলাম ঈদ ঢাকায় করে যাই। তাড়াহুড়ো করে গিয়ে রাস্তায় ঈদ করার চেয়ে পরে যাওয়া ভালো। লঞ্চটির ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ডেকে বসে আছেন শত শত মানুষ।

হাতিয়ার যাত্রী সুজন মিয়া বলেন, আমাদের আত্মীয়স্বজন সবাই ঢাকায়। এজন্য ভিড় ঠেলে বাড়ি না গিয়ে ঢাকাতেই ঈদ করেছি। এখন একটু স্বস্তিতে বাড়ি গিয়ে ঘুরে আসি।

ডলার কোম্পানির ২৪টি লঞ্চের মালিক ও যাত্রী পরিবহন সংস্থার সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কালাম বলেন, আমাদের লঞ্চ আছে অনেক, কিন্তু সেই অনুযায়ী যাত্রী নেই। তাই লঞ্চ কম ছাড়ছে। যেগুলো ছাড়ছে সেগুলোতে ভরে যাচ্ছে। ঈদের পরও আমরা যাত্রী চাপ আশা করেছিলাম। কিন্তু পাইনি। এসময় তিনি লঞ্চ যাত্রা আরামদায়ক বিধায় যাত্রীদের নৌপথে যাতায়াতের অনুরোধ জানান।

লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ঈদের আগে যাত্রী চাপ বাড়ায় আশা পেয়েছিলাম। এখন সে আশা আর দেখছি না। সামনের দিনগুলোতে কি হয় দেখা যাক।

বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাটের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম-পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, ঈদের পর যাত্রীচাপ স্বাভাবিক রয়েছে। আমাদের নিয়মিত লঞ্চগুলোই চলাচল করছে। অতিরিক্ত কোনো লঞ্চের প্রয়োজন পড়ছে না। ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সদরঘাট নৌপুলিশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম বলেন, সদরঘাট এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। পাশাপাশি নৌ পুলিশ সার্বক্ষণিক ঘাট ও আশপাশের এলাকায় নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। যেকোনো ধরনের অরাজক পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা তৎপর রয়েছি।

এমএইচ