মজুতকারীদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী
Share on:
পণ্য মজুত করে যারা জনগণের পকেট কাটছে তাদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবজি আমাদের দেশে উৎপাদন হয়। এটা বাজারে না এনে রেখে দেবে। দাম বাড়িয়ে দেবে। পণ্য কারা মজুত করে জনগণের পকেট কাটার চেষ্টা করছে খুঁজে বের করতে হবে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে যার যার এলাকায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অগ্নিসন্ত্রাস যারা করে, তাদের ধরে ওই আগুনে ফেলতে হবে। যে হাতে আগুন দেয় ওই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। যেমন কুকুর তেমন মুগুর। তা না হলে তাদের শিক্ষা হবে না। প্রত্যেক এলাকায় কত বিএনপি-জামায়াত আছে, খুঁজে বের করতে হবে। এদের ধরিয়ে দিতে হবে। যাতে মানুষের জান-মাল নষ্ট করতে না পারে।
তিনি বলেন, দুষ্কৃতকারী কয়েকজনের লাফালাফিতে নির্বাচন বানচাল হবে না। তাদের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। তারা নির্বাচনে আসবে কিনা, জানি না। এলেও আসবে, ওই নমিনেশন বাণিজ্য করতে।
মনোনয়ন নিয়ে বিভাজন না করার জন্য সতর্ক করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এ কথা ভাবলে চলবে না, ওরা (বিএনপি) তো আসবে না। একটা সিট না পেলে কী হবে! এ চিন্তা যেন কারও মাথায় না থাকে। আমরা মনোনয়নে যে সিদ্ধান্ত দেব, সেটা মানতে হবে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আবারও ভোটের মাধ্যমে সরকারে আসতে হবে।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনে কী হচ্ছে? হাসপাতালেও বোমা মারছে। মা ভেবেছিলেন, সন্তান নিয়ে হাসপাতালে নিরাপদ থাকবেন। কিন্তু সেখানেও বোমা হামলা করছে ইসরায়েলিরা। আমরা খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠিয়েছি। ঢুকতে দিচ্ছে না। পাশে মিসরে রেখেছি। আমাদের দেশে বিএনপিও হাসপাতালে হামলা করেছে। তারা ফিলিস্তিনের ইস্যুতে কোনো কথা বলে না।
বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস ও হত্যাকাণ্ড আবারও ফিরে এসেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজ বিএনপির যে অগ্নিসন্ত্রাস, তাদের যে বীভৎস চেহারা, তারা যে পিটিয়ে পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করে, একজন নিরীহ পুলিশ চাকরি করে, তার কী অপরাধ ছিল? তাকে ওইভাবে, অমানবিকভাবে হত্যা করল।
তিনি বলেন, বিএনপি ২০১৩ সালে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে, ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করার জন্য একই ঘটনা ঘটিয়েছে। ২০১৫ তে ঘটিয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা, আগুনেও পোড়ানো, হাজার হাজার গাছ কেটে রাস্তা কেটে একটা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণ যখন প্রতিরোধ করেছিল তখনই তারা থেমেছে।
বিএনপি কাকে নিয়ে নির্বাচন করবে প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচন করলে তাদের নেতা কে? কাকে প্রধানমন্ত্রী করবে? কাকে দিয়ে মন্ত্রিসভা করবে? বিএনপি চেয়ারপারসন, সে তো এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। আর এখন তো অসুস্থ। ওরা (বিএনপি) জানে নির্বাচন করলে ওরা কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ২০১৮ নির্বাচনে তো মাত্র ২৯টা সিট পেয়েছিল। এখন তাদের অপকর্মের জন্য মানুষ আরও বিমুখ।
সরকারপ্রধান বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সাল থেকে মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকারের যে আন্দোলন সূচনা করেছিলেন, তারই পথ বেয়ে জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। জাতির পিতার নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়, স্বাধীনতা অর্জন হঠাৎ করে হয় না। দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রাম আর ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয় অর্জন। তার জন্য অনেক সংগ্রাম, অনেক রক্ত, ত্যাগ আমাদের করতে হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল আমাদের জাতীয় চার নেতাকে। কারাগার সবচেয়ে সুরক্ষিত জায়গা, এই কারাগারে ঢুকেই নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ড চালায়। আমি নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন মায়া বীরবিক্রম, সিমিন হোসেন রিমি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী, সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।