tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ১৩ জুন ২০২২, ০৯:৩৫ এএম

চীনের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে কারও সংশয় থাকা উচিৎ নয়


China-2022

তাইওয়ান ইস্যুতে চীন একেবারে শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পরাশক্তিধর দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী।


গত শুক্রবার (১০ জুন) সিঙ্গাপুরে আয়োজিত এশিয়ার নিরাপত্তা বিষয়ক সম্মেলনে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এক কথার জবাবে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়ে ফেঙ্গি এই মন্তব্য করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের সামরিক উত্তেজনা যখন তীব্র হয়ে উঠছে, তখন চীন এরকম হুঁশিয়ারি দিল।

যদিও তাইওয়ান একটি স্বশাসিত পৃথক দ্বীপরাষ্ট্র, চীন এটিকে নিজেদের অংশ বলে গণ্য করে, তারা মনে করে এটি চীনের মূল অংশের সঙ্গে একীভূত হওয়ার অপেক্ষায় আছে।

চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়ে ফেঙ্গি সিঙ্গাপুরে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলন সাংগ্রিলা ডায়ালগে বলেন, চীনের সাথে মার্কিন সম্পর্ক এখন এক সংকটময় মুহূর্তে পৌঁছেছে।

সম্মেলনে তিনি এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে চীনের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করেন এবং বলেন যে তাইওয়ান যাতে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে না পারে, তার জন্য চীন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে যাবে।

সম্প্রতি তাইওয়ানের আকাশ সীমায় বার বার তাদের সামরিক বিমান পাঠিয়েছে চীন, ফলে ঐ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সামরিক উত্তেজনা যথেষ্ট বেড়ে গেছে।

শনিবার ( ১১ জুন ) সিঙ্গাপুর সম্মেলনে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন অভিযোগ করেন যে, বেইজিং এরকম সামরিক তৎপরতা চালিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে তুলতে চাইছে।

পাল্টা জবাব দিয়ে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, "যদি তাইওয়ানকে চীন থেকে আলাদা করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে লড়াই করা ছাড়া চীনের কোন উপায় থাকবে না। নিজেদের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় চীনের সশস্ত্র বাহিনী কতটা সংকল্পবদ্ধ এবং সক্ষম, সেটা নিয়ে কারও কোন সংশয় থাকা উচিৎ নয়।"

তিনি আরও বলেন, "যারা চীনকে বিভক্ত করতে তাইওয়ানের স্বাধীনতার জন্য কাজ করছে, তাদের পরিণতি কখনোই ভালো হবে না।"

তিনি চীনের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলানো এবং এবং চীনের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ না করার জন্য ওয়াশিংটনকে হুঁশিয়ার করে দেন।

তবে তিনি একই সঙ্গে এমন কথাও বলেন, বিশ্ব শান্তি বজায় রাখার জন্য চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটা স্থিতিশীল সম্পর্ক থাকা দরকার।

সিঙ্গাপুর সম্মেলনে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মধ্যে এই হুঁশিয়ারি-পাল্টা হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও দুজনের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও হয়। দুপক্ষই দাবি করছেন, বেশ 'হৃদ্যতা-পূর্ণ পরিবেশে' এই বৈঠক হয়েছে।

চরম উত্তেজনাপূর্ণ কথাবার্তার মধ্যেও যে দু'দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এরকম বৈঠক করছেন, এটিকে বিশ্লেষকরা বেশ ইতিবাচক লক্ষণ বলে বর্ণনা করেছেন।

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মাসেই জাপান সফরের সময় বলেছিলেন, তাইওয়ানে যদি চীন হামলা চালায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষায় সামরিকভাবে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে।

তাইওয়ানের ব্যাপারে আমেরিকার দীর্ঘদিনের নীতির ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই মন্তব্যকে একধরণের বিচ্যুতি বলে মনে করা হয়।

তবে এরপর থেকে হোয়াইট হাউজ বলার চেষ্টা করছে যে, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হস্তক্ষেপ করবে কীনা, তা নিয়ে আমেরিকা যে 'কৌশলগত অস্পষ্টতার' যে নীতি অনুসরণ করে, সেটিতে কোন পরিবর্তন আনা হয়নি।

এইচএন