যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমেই কেয়ারটেকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হবে: জামায়াত আমির
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশে কেয়ারটেকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনীতি মারাত্মক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে মজলিসে শূরা সম্মেলন ও শপথ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াত, বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী ডান বাম, জোট সকলকে সাথে নিয়ে যুগপৎ দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতিকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে হবে। সংগ্রাম করে জাতিকে মুক্ত করার মহান দায়িত্ব পালনে আগামী দিনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে দেশের জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ একটা সমাবেশ, অবস্থানকে অশান্ত করে তোলা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গভীর রাতে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে বাসা থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আনা হয়েছে। এর শেষ পরিণতি আওয়ামী সরকারের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক হবে।
জামায়াত আমির বলেন, রাসূল স: সর্বদা মানুষের মাঝে শান্তি প্রতিষ্ঠা, মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করা, সমাজ-দেশ-রাষ্ট্রে সাম্য ন্যায় প্রতিষ্ঠার কাজে নিজেকে উজাড় করে মানব সভ্যতায় দৃষ্টান্ত দেখিয়ে গিয়েছেন। তবুও রসূলের সা. একটা মুহূর্ত তার দুশমনদের ষড়যন্ত্রের বাহিরে ছিলো না। প্রতি পদে পদে দুশমনরা কাটার মতো প্রিয় নবীর পায়ে লেগে থাকতো। মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করার পরেও তাকে শান্তিতে থাকতে দেয়া হয়নি। সেখানেও নানা যাদুটোনা ও ষড়যন্ত্রের জাল পেতে রাখা হয়েছিল। তাকে হত্যার পরিকল্পনা করাও হয়েছিল। হাজার হাজার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল মদিনা রাষ্ট্রের নায়ক প্রিয় নবী মুহাম্মদ সা:-এর বিরুদ্ধে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামের এই সুমহান দায়িত্ব যারা পালনে সক্রিয় থাকবেন, তাদেরও এরকম নানাবিধ ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করে সম্মুখে এগিয়ে যেতে হবে। আল্লাহর পক্ষ থেকে নবী রাসূলদের কাছে যে আমানত নাযিল করা হয়েছে, সেই একই আমানত আমরা বহন করছি। বিশ্বাস রাখতে এ কাজের মাধ্যমেই আমার পূর্ণ সফলতা অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ।
জামায়াত আমির বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। অবিলম্বে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার সকলকে মুক্তি দিতে হবে।
সরকার জামায়াতের নেতা-কর্মীদের উপর জুলুম-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে উল্লেখ করে তিনি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেন, জুলুম-নির্যাতন করে জামায়াতে ইসলামীর কণ্ঠরোধ করা যাবে না। তিনি অবিলম্বে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এ টি এম আজহারুল ইসলাম, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানান।
দেশের বরেণ্য আলেমদেরকে মাসের পর মাস মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি কাজী ইবরাহীম, মুফতি আমীর হামজাসহ আটক ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামাদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মাওলানা এ টি এম মাসুম বলেন, দুনিয়াব্যাপী জুলুম নিপীড়নের মধ্য দিয়ে সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চলছে। এই সংগ্রামের জন্য সব সময় একদল ডেডিকেটেড, একনিষ্ঠ ও ত্যাগী মানুষের প্রয়োজন। যারা সব কাজে আল্লাহ ও তার রাসূল সা. এর সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দিবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে জামায়াতে ইসলামীই সেই ত্যাগের জন্য নিজেদের উপস্থাপন করছে।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ এক গভীর সঙ্কটের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সম্মানিত মজলিশে শূরার সদস্যগণ ইকামাতে দ্বীনের এ কাজকে আরো বেগবান করার জন্য আল্লাহকে হাজির-নাজির জেনে শপথ নিচ্ছেন, এজন্য তাদের প্রতিও বিশেষ দরদ-ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি। তারা যেন দ্বীনের এ শপথের উপরে নিজেদের মজবুত ও দৃঢ় রাখতে সক্ষম হন এই দোয়া করছি’।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাসুম। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আবদুস সবুর ফকির। উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি ড. অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য মোকাররম হোসেন খান, মাওলানা ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি
এমআই