tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
খেলা প্রকাশনার সময়: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:৪৫ পিএম

বাফুফের বেতনের হিসাবে গরমিল বেরিয়েছে


00

অর্থসঙ্কট দেখিয়ে মিয়ানমারের অলিম্পিক বাছাইয়ে সাফজয়ী সাবিনা খাতুনদের না পাঠানোর জের ধরেই এসব আলোচনার উত্থান। এরপর বাফুফে সংশ্লিষ্ট একের পর এক অনিয়মের কথা উঠে আসছে। জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটিতে কর্মরতদের বেতনেও গরমিল পাওয়া গেছে।


যে কোনো চাকরিতেই বছর ঘুরলে বেতন বৃদ্ধি পায় কিংবা অন্তত আগের বছরের প্রাপ্য সম্মানীই বহাল থাকে। কিন্তু চলতি বছর বাফুফের অধিকাংশ এক্সিকিউটিভের ক্ষেত্রে ঘটেছে তার উল্টো। বাফুফেতে কর্মরত বেশ বড় সংখ্যক এক্সিকিউটিভ গত বছরের চেয়ে এই বছর কম বেতন পাচ্ছেন। একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বাফুফেতে প্রশাসনিক কর্মকর্তার সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে। এই প্রশাসনিক ব্যক্তিদের সম্মানী ফিফা ও এএফসির খাত থেকেই মূলত নির্বাহ করা হয়। কোনো এক্সিকিউটিভকে এএফসিতে আবার কাউকে ফিফার তালিকায় সংযুক্ত করা হয়।

চলতি বছরে এএফসির তালিকায় থাকা কয়েকজনের (৭ জনের বেশি নয়) বেতন বেড়েছে। এদের মধ্যে একটি বিভাগের ম্যানেজার রয়েছেন, যার বেতন বেড়েছে ২০-৩০ হাজারের মতো। অন্যদিকে, ফিফার খাতে নাম থাকা এক্সিকিউটিভ অনেকেরই বেতন কমেছে। অধিকাংশের বেতন গত বছরের চেয়ে কমলেও, হাতে গোণা কয়েকজনের বেতন বেড়েছে (অন্তত ২-১ জনের অধিক)। এই বৈষম্যের ফলে বাফুফের প্রশাসনে বিরাজ করছে অসন্তোষ।

বেতন কমার কারণ হিসেবে এক্সিকিউটিভদের অনেকে জানতে পেরেছেন, গত বছর অতিরিক্ত বেতন দেওয়া হয়েছে বিধায় এই বছর সেটি সমন্বয় করা হচ্ছে। গত বছর কোন সময় থেকে কতটুকু বেশি এবং এই সমন্বয় কতদিন চলবে তা জানতে পারেননি ভুক্তভোগীরা।

এ পরিস্থিতিতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্টাফ বলছেন দুর্ভোগের কথা, ‘দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে চলছে। যেখানে চাকরিবিধি অনুযায়ী আমাদের ১০% ইনক্রিমেন্ট হওয়ার কথা, সেখানে উল্টো গত বছরের চেয়ে কম অর্থ পাচ্ছি। সংসার পরিচালনায়ও হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

‘দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে চলছে। যেখানে চাকরিবিধি অনুযায়ী আমাদের ১০% ইনক্রিমেন্ট হওয়ার কথা, সেখানে উল্টো গত বছরের চেয়ে কম অর্থ পাচ্ছি। সংসার পরিচালনায়ও হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাফুফে স্টাফ বলেন ,স্টাফদের বেতনের হিসাবে এই গরমিলের ব্যাপারে ফেডারেশনের কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তাই আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেননি। তবে ফিন্যান্স বিভাগের ভুলেই এমনটা হয়েছে বলে প্রকারান্তরে স্বীকার করেছেন কেউ কেউ। আর্থিক বিষয়ে অসঙ্গতির জন্য ফিন্যান্সের একজন এক্সিকিউটিভ ফিফার চিঠি পেয়েছিলেন, এমনকি জুরিখ পর্যন্তও গিয়েছিলেন। চলমান বেতন কাঠামোতে অধিকাংশ স্টাফের বেতন কমলেও হাতেগোণা বৃদ্ধি পাওয়া কয়েকজনের মধ্যে রয়েছেন ফিন্যান্স বিভাগের সেই কর্মকর্তাও।

ফেডারেশনের প্রশাসনিক স্টাফদের বেতনে এই তারতম্য ও বৈষম্যের বিষয়ে নির্বাহী কমিটি অনেকটাই অজ্ঞাত। সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে চেয়ারম্যান ও চার সহ-সভাপতিকে সদস্য করে ফিন্যান্স কমিটি গঠিত। কয়েকজন সহ-সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, তারাও স্টাফদের বেতনের তারতম্যের বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত নন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্বাহী কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘ফেডারেশনের স্টাফদের কার কত বেতন আমাদের জানার অধিকার থাকলেও জানি না। মাথাভারী প্রশাসনের পেছনে এত অর্থ ব্যয় করে মাঠের ফুটবলে কী প্রভাব পড়ছে সেটিও বোধগম্য নয়।’

‘ফেডারেশনের স্টাফদের কার কত বেতন আমাদের জানার অধিকার থাকলেও জানি না। মাথাভারী প্রশাসনের পেছনে এত অর্থ ব্যয় করে মাঠের ফুটবলে কী প্রভাব পড়ছে সেটিও বোধগম্য নয়।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই ফুটবল ফেডারেশনের আর্থিক বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এত আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা নির্ধারিত ছুটির বাইরেও গত বছর অনেক ছুটি কাটিয়েছেন। বাফুফের অর্থ সঙ্কটের পেছনে অনেকেই আর্থিক ব্যবস্থাপনার সঙ্কটকে দায়ী করেন।

ফেডারেশনের স্টাফদের বেতনের হিসাবই এমন এলেমেলো হলে সেখানে ফিফা, এএফসি, স্পন্সরদের নানা শর্তযুক্ত অর্থের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন থেকেই যায়!

এন