নিজেদের জয় ও বার্সার হারে লা লিগা চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
Share on:
একই রাতে খেলা ছিল দুই স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার। প্রথমে নিজেদের ম্যাচে কাদিজকে হারিয়ে কেবল ১ পয়েন্টের অপেক্ষায় ছিল রিয়াল।
পরে জিরোনার কাছে বড় পরাজয়ে লস ব্লাঙ্কোসদের অপেক্ষার অবসান ঘটায় বার্সা। জিরোনার মাঠে কাতালানরা ৪-২ গোলে হেরে গেছে। এর আগে কাদিজকে ৩-০ গোলে হারায় কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। চার ম্যাচ হাতে রেখেই লা লিগার ৩৬তম শিরোপা উঠল রিয়ালের হাতে।
এর আগে সর্বশেষ সান্তিয়াগো বার্নাব্যু বাহিনী ২০২১-২২ মৌসুমে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল। এক মৌসুম বিরতি দিয়ে তারা সেই শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে। এ জয়ে লা লিগায় নিজেদের সবচেয়ে শিরোপা জয়ের রেকর্ডও সমৃদ্ধ করল রিয়াল। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা বার্সেলোনার শিরোপা ২৭টি। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত দুইয়ে থাকা জিরোনার চেয়ে রিয়াল ১৩ পয়েন্টে এগিয়ে। তারা যদি বাকি চার ম্যাচে হারে এবং জিরোনা নিজেদের চার ম্যাচে জেতে, তবুও রিয়ালকে ছুঁতে পারবে না তারা।
৩৪ ম্যাচে ২৭ জয় ও ৬ ড্রয়ে রিয়ালের পয়েন্ট ৮৭। জিরোনা সমান ম্যাচে ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে উঠেছে, গতবারের চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে নেমে গেছে তিনে।
- রিয়াল মাদ্রিদ ৩:০ কাদিজ
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা ম্যাচের ঘণ্টা দুয়েক আগে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে কাদিজকে আতিথ্য দেয় রিয়াল। এই ম্যাচ দিয়ে দীর্ঘদিন পর চোট সেরে রিয়ালের একাদশে ফেরেন থিবো কোর্তোয়া। ফলে ম্যাচটি বিশেষভাবে স্মরণীয় ছিল বেলজিয়াম গোলরক্ষকের জন্য। একইসঙ্গে নিজ দেশের ফুটবল ফেডারেশনের প্রতি একটা জবাবও। কারণ বেলজিয়ামের কোচ ইতোমধ্যে চোটের কারণে কোর্তোয়ার আসন্ন ইউরোতে খেলা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন!
রিয়াল বড় জয় পেলেও ম্যাচে গোল পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ৫১ মিনিট পর্যন্ত। লুকা মদ্রিচের বাড়ানো পাস পেয়ে ব্রাহিম দিয়াজ তার পাশে ঘিরে থাকা চার প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের মাঝেও দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বল জালে পাঠান। এর মিনিট খানেক আগে কাদিজের গোল ঠেকিয়ে দেন কোর্তোয়া। দীর্ঘদিন পর খেলতে নেমে তার ছোট কীর্তিও বিপুল করতালিতে স্বাগত জানায় বার্নাব্যুর গ্যালারি।
ম্যাচের ৬৬ মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন জ্যুড বেলিংহ্যাম। তার মিনিট দুয়েক পরেই এই ইংলিশ মিডফিল্ডার দিয়াজের বাড়ানো বল পেয়ে পায়ের টোকায় জালে জড়ান। পরে বদলি হিসেবে নামেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়রও। যদিও তিনি গোল কিংবা অ্যাসিস্টে ভূমিকা রাখতে পারেননি। রিয়ালের শেষ গোলটি আসে যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে। ভিনি আর নাচো হয়ে জোসেলু বল পান, এরপর রিয়ালকে ভাসান তৃতীয় গোল ও বড় জয়ের আনন্দে।
- বার্সেলোনা ২ : ৪ জিরোনা
বার্সা-জিরোনা ম্যাচ হলেও এদিকে তাকিয়ে ছিল রিয়াল। তাদের সেই অপেক্ষা বৃথা যেতে দেয়নি কাতালানরা। গত ডিসেম্বরের পর আবারও তারা জিরোনার কাছে পা হড়কেছে। সে সময় বার্সা নিজেদের মাঠে হেরেছিল ৪-২ গোলে। এবার জিরোনার মাঠেও তারা একই ব্যবধানে হেরে গেল। যদিও দু’বারই প্রথমে লিড নিয়েছিল জাভি হার্নান্দেজের শিষ্যরা। পরে রবার্ট লেভান্ডফস্কিরা সেটি আর ধরে রাখতে পারেননি। শিরোপার স্বপ্ন আগেই শেষ হয়েছে, এখন তারা কেবল রানার্স-আপের জন্য লড়তে পারে।
এদিন ম্যাচের মাত্র তৃতীয় মিনিটেই আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টিনসেনের গোলে এগিয়ে যায় বার্সা। সেই উল্লাস এক মিনিটও স্থায়ী হয়নি। চতুর্থ মিনিটেই যে আর্তেম দোভবিকের গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। তবে বার্সা প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে ফের লিড নেয়। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে গোল করেন লেভান্ডফস্কি। পেনাল্টিতে সফল স্পট কিকে বার্সাকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন পোলিশ তারকা।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমে শুরুতেই লন্ডভন্ড ক্যাম্প ন্যু বাহিনী। বদলি হিসেবে মাঠে নামার কয়েক সেকেন্ড পরেই জিরোনাকে ৬৫ মিনিটে সমতায় ফেরান পোর্তু। এই পর্তুগিজ উইঙ্গার এর পরের গোলেও অবদান রেখেছেন। তার বাড়ানো পাস পেয়ে জিরোনাকে ৩-২ গোলে এগিয়ে দেন স্প্যানিশ লেফটব্যাক মিগুয়েল গুতিয়েরেজ। বার্সার কফিনে শেষ পেরেক হিসেবে আসা চতুর্থ গোলটিও করেন পোর্তু। দারুণ এক ভলিতে ম্যাচটি ৪-২ ব্যবধানে পরিণত করেন ২৪ বছর বয়সী এই ফুটবলার। এই জয়ে আগামী মৌসুমে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলাও নিশ্চিত করেছে জিরোনা।
এনএইচ