আমিরসহ বন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি জামায়াতের আহ্বান
Share on:
অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি মেনে নিয়ে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের সকল নেতাকর্মী, আলেম-ওলামা ও সকল রাজবন্দীর মুক্তি প্রদান, অন্যায় গ্রেফতার, নির্যাতন, হামলা-মামলা বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক সভা এ আহ্বান জানানো হয়।
এ সভায় দেশে বিরাজমান পরিস্থিতি বিশেষ করে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ গ্রেফতার নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামাদের মুক্তি এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেআইনি ভূমিকার নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে নিম্নোক্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়।
গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অতি সন্নিকটে। এখনো দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি। দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বুদ্ধিজীবী মহল ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের মতামতকে কোনো রকম তোয়াক্কা না করে সরকার দেশকে একটি অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দেয়ার অশুভ চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। আমরা সরকারকে সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচন মুখী রাজনৈতিক দল। জামায়াত কখনো কোনো প্রহসন ও পাতানো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। গত ১৫ বছর ধরে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে আসছে। মানুষ তার সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ সরকারের আমলে কোনো নির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি।
জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ মনে করে, বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের জুলুম-নিপীড়ন অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীগণ। জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে বিচারের নামে প্রহসন করে ফাঁসির দণ্ড দিয়ে তা কার্যকর করা হয়েছে। লক্ষাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। আমিরে জামাযাত ডা. শফিকুর রহমানকে গত বছর ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও সাবেক এমপি জনাব শাহজাহান চৌধুরীকে দুই বছরের অধিক সময় ধরে জেলে আটক রাখা হয়েছে। তারা উচ্চ আদালত থেকে বারবার জামিন লাভ করলেও মুক্তি পাচ্ছেন না। উচ্চ আদালত থেকে তাদেরকে পুনরায় গ্রেফতার না করার নির্দেশনা দেয়া সত্ত্বেও তা মানা হচ্ছে না।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সাথে যে নিষ্ঠুর আচরণ করছে তা অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নয়। পুলিশ প্রতিনিয়ত জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে হানা দিচ্ছে। বাড়ি-ঘরে ঢুকে ভাঙচুর ও তছনছ করছে। বাড়িতে থাকা নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের সাথে অসম্মানজনক আচরণ করছে যা অত্যন্ত গর্হিত ও নিন্দনীয় কাজ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা কিন্তু বর্তমানে তারা তাদের সে দায়িত্ব পালন করার পরিবর্তে বিরোধী দল দমনের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি