পানি বিপৎসীমার ওপরে, তিস্তা পাড়ের মানুষ আতঙ্কে!
Share on:
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। ফলে নির্ঘুম রাত কাটছে লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার তিস্তা পাড়ের মানুষের।
শনিবার (১৫ জুলাই) সকালে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২.৩৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তার পানি বাড়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিংঙ্গীমারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালমাটি, পলাশী এবং সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, খুনিয়াগাছ, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ডুবে গেছে চলাচলের রাস্তা। দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসি মানুষের।
নদী তীরবর্তী প্রায় লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। কয়েক হাজার একর আমন ধানের বীজতলাসহ অনেক ফসলি জমি তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে। ইতিমধ্যে চর এলাকাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে গেছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারি ইউনিয়নের দোয়ানি গ্রামের বাসিন্দা আক্কাস আলী বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করে। শুক্রবার সকাল নাগাদ ঘরের ভেতর হাঁটু পানি। আজকেও (শনিবার) বাড়িতে পানি রয়েছে ফলে রান্নাবান্না বন্ধ। সবাই শুকনো খাবার খেয়ে আছি।
পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ভারত থেকে আসা ঢলের পানিতে দহগ্রামের গুচ্ছগ্রাম যাওয়ার রাস্তাটি ভেঙে গিয়ে প্রায় হাজারখানেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।
সদর উপজেলার কালমাটি এলাকার বাসিন্দা খয়বর আলী বলেন, তিস্তার পানি বেশ কয়েকদিন থেকে বাড়া-কমার মধ্যে রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। শুনেছি ব্যারাজ পয়েন্ট পানি কমেছে। কিন্তু আমাদের এলাকায় পানি এখনও ঢুকছে। চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা ঢলে তিস্তা ও ধরলার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা পাড়ের মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ্ জানান, ইতিমধ্যে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের পানিবন্দি বন্যাদুর্গত মানুষদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জেলার পাঁচ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের বানভাসি মানুষের সার্বিক খোঁজখবর রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এন