tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জীবনযাপন প্রকাশনার সময়: ২৫ জুলাই ২০২৩, ২২:০৯ পিএম

মশাবাহিত ৭ রোগ থেকে সাবধান থাকুন


6

ডেঙ্গু ছাড়াও মশার কামড়ে মারাত্মক সব রোগ সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি এসব মশাবাহিত মারাত্নক রোগের কারণে মৃত্যুঝুঁকিও থাকে।


আজকাল দেশে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। শিশু , যুবক, বয়স্ক প্রায় সব বয়সের মানুষ ডেঙ্গু আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। বর্ষাকালে মশা প্রজননের সাথে মশার উপদ্রব্যও বাড়ে।

মশার কামড়ে ডেঙ্গু ছাড়াও হতে পারে চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়াসহ নানা ভয়াবহ রোগ। তাই এ সময় সবাইকে সচেতন ও সাবধান হতে হবে।

জেনে নিন মশাবাহিত ৭ টি রোগ সম্পর্কে:-

ইয়েলো ফিভার:

টাইগার মশা, এডিস প্রজাতির আরো কিছু মশার মাধ্যমে ইয়েলো ফিভার ছড়ায়। একে আবার ফ্লাভিবাইরাসও বলা হয়ে থাকে। আফ্রিকার ৩৪ টি, দক্ষিণ ও মধ্য অ্যামেরিকার ১৩ টি দেশে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ রোগে শুরুতে জ্বর হলেও পরে বমি দেখা দেয়। এরপর তা মেনিনজাইটিসে রূপ নেয়। যেটা শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

ডেঙ্গু:

বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব খুব বেড়েছে। মূলত, এডিস ইজিপ্টাই নামের মশার কামড়ে এ রোগের সৃষ্টি হয়। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে ব্যাথা হয়, লাল গুটি দেখা দেয়। এছাড়া মাংসপেশী ও হাড়ের জোড়াতে ব্যাথা হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে তা রক্তক্ষরণের ফলে মৃত্যুও হতে পারে। তবে ডেঙ্গু রোগে কেউ ২য় বার আক্রান্ত হলে, তা ১ম বারের চেয়ে মারাত্মক হতে পারে।

চিকুনগুনিয়া:

এ রোগে আক্রান্ত হলে জ্বর কাটিয়ে উঠতে প্রায় ৩-৪র দিন লাগে। তবে হাড়ের জোড়ায় অতিরিক্ত ব্যথা কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হয়। এছাড়া চামড়ায় ক্ষত দেখা দিতে পারে। তবে প্রথমবার চিকুনগুনিয়া হয়ে গেলে দ্বিতীয়বার এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।

ম্যালেরিয়া:

মশাবাহিত রোগের ভেতর ম্যালেরিয়া সবচেয়ে বেশি মারাত্মক একটি রোগ। মূলত অ্যানোফিলিস নামের মশার মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে। এটির কার্যকর ওষুধ এখনো আবিষ্কার হয়নি। তবে সতর্ক থাকলে এতে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা কম থাকে।

জিকা:

এডিস ইজিপ্টাই, টাইগার মস্কিউটো ও এডিস আলবোপিকটাস জিকা নামক মশা এই ভাইরাস ছড়ায়। ২০১৫ সালে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় ব্রাজিলে অসংখ্য শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাইক্রোসিফেলি নামের ভয়াবহ প্রতিবন্ধিত্ব নিয়ে জন্মায় এ মশা। গর্ভবতী মায়েরা জিকায় আক্রান্ত হলে নবজাতকের ক্ষতি হবার ঝুঁকি থাকে। এতে করে শিশুদের মাথার আকৃতি বিকৃত হয়ে যায়।

ওয়েস্ট নাইল ফিভার:

বয়স্ক, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মানুষের শরীরে এই রোগ মারাত্নক ক্ষতি করে। এতে করে মেনিনজাইটিস ও মায়োকার্ডিটিস হতে পারে। অন্যান্য মশাবাহী রোগের মতো কাঁপুনি, ঠান্ডা লাগা, জ্বর, মাথা ব্যাথা, ঝিমুনি ও ব়্যাশ হবার সম্ভাবনা থাকে। এ রোগের কোনো ওষুধ এখনো আবিষ্কার হয়নি।

লাইশম্যানিয়াসিস :

গর্ভবতী স্ত্রী মশাদের কামড়ে এ রোগ ছড়ায়। ৩০ ধরনের ভিন্ন প্রজাতির শরীরে লাইশম্যানিয়াসিস জীবাণু আছে। যা ১০ টি মানবদেহে রোগ ছড়ায়। লক্ষণ হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে জ্বর ও মাথাব্যথা দেখা দেয়। কিছু ক্ষেত্রে স্কিন আলসার হয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়। দ্রুত ডাক্তার না দেখালে লিভার, কিডনিসহ বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ অঙ্গে এসব সমস্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। চিকিৎসার অভাবে এ রোগে মৃত্যু ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে।

সিন্ডবিস :

কুলেক্স নামের নিশাচর মশার কামড়ে এই রোগ হয়। মূলত আফ্রিকায় এ রোগ হলেও সম্প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে মানব শরীরে এই জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এই মশার কামড়ে তীব্র জ্বর ও মস্তিষ্কে প্রদাহ লক্ষণ দেখা দেয়। পুরো শরীরে এই রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন হাড়ের সংযোগে ব্যাথার সৃষ্টি হয়। কয়েক সপ্তাহ পর এ রোগ সেরেও যায়। তবে এখন পর্যন্ত এ রোগের কোনো ওষুধ বের হয় নি।।

মশাবাহিত এসব রোগে থেকে সাবধান থাকতে মশা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। এজন্য উচিত মশা যেন না কামড়ায় তা নিশ্চিত করা। তাই ঘরে-বাইরে থাকাকালীন সময়টা যথেষ্ট নিরাপত্তা বজায় রেখে চলুন।

এন