tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ১৪ জুন ২০২৪, ০৯:৩০ এএম

হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু


hajj-20240614081723

সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। আরবি হিজরি সন ১৪৪৫ এর জিলহজ মাসের ৮ তারিখ আজ।


আরবি বর্ষপঞ্জিকার শেষ মাস জিলহজের ৮ তারিখ থেকে শুরু হয় হজ। এরপর ৯ জিলহজে হয় আরাফাতের দিন। আর ১০ জিলহজে পশু কোরবানি করেন হাজিরা। পশু কোরবানি শেষে আরও দুইদিন থাকে হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা। অর্থাৎ হজ সম্পন্ন করতে সবমিলিয়ে সময় লাগে পাঁচদিন।

প্রথমদিন হজযাত্রীরা (পুরুষ) সেলাই ছাড়া ইহরাম বা সাদা কাপড় পরেন। অপরদিকে নারীরা ঢিলেঢালা পোশাক পরেন। এদিন আরও কিছু নিয়ম নীতি মানতে হয়। যেমন কারও সঙ্গে রাগারাগি না করা এবং যৌন সম্পর্কে লিপ্ত না হওয়া।

ইহরাম বাধার পর দলে দলে হাজিরা মিনায় যান। বেশিরভাগ মানুষ বাসে ও গাড়িতে গেলেও কেউ কেউ হেঁটেও মিনায় যান। এটি ৮ কিলোমিটারের একটি পথ।

হজযাত্রীরা এদিন মিনাতেই কাটান। এর পরের দিন ভোরে তারা সেখান থেকে চলে আসেন। হজযাত্রীরা মিনায় নামাজ এবং আল্লাহকে স্মরণ করে সময় কাটান।

দ্বিতীয় দিন হজযাত্রীরা যান আরাফাতের ময়দানে। সেখানে তারা পুরো দিনটি কাটান। আরাফাত শুধু হজের কারণেই গুরুত্বপূর্ণ নয় এটি ইসলামিক বর্ষপঞ্জিকার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত আরাফাত পাহাড়ে দাঁড়িয়ে নিজের জীবনের শেষ ভাষণটি দিয়েছিলেন হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)। মিনা থেকে ১৪ দশমিক ৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আরাফাতের ময়দানে উপস্থিন হন লাখ লাখ মানুষ। বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় এদিন রোজা রাখা হয়।

আরাফাতের ময়দানে সারাদিন কাটানোর পর সূর্যাস্তের পর মুজদালিফায় যান হাজিরা। যা ৯ কিলোমিটারের একটি পথ। সেখানে খোলা আকাশের নিচে রাত্রি যাপন করেন তারা। ওই সময় প্রতীকি শয়তানের দিকে ছুড়ে মারার জন্য ছোট পাথর সংগ্রহ করেন তারা।

তৃতীয় দিনের শুরুটা হয় মুজদালিফায়। কিন্তু এদিন সূর্যোদয়ের আগে হজযাত্রীরা মুজদালিফা থেকে মিনার দিকে রওনা দেন। মিনায় পৌঁছে তারা প্রতীকি শয়তানকে লক্ষ্য করে ছোট ছোট সাতটি নুড়ি পাথর নিক্ষেপ করেন।

মহান আল্লাহ ইব্রাহিম (আঃ)-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি যেন তার পুত্রকে কোরবানি করেন। মিনার এই স্থানে যখন আল্লাহকে খুশি করতে ইব্রাহিম (আঃ) তার পুত্রকে নিয়ে আসেন তখন এখানে উপস্থিত হয় শয়তান। যেটি নবী ইব্রাহিমকে আল্লাহর আদেশ অমান্য করতে প্ররোচনা দিচ্ছিল। ওই সময় ইব্রাহিম (আঃ) শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করেন। এখন হাজিরা এই স্থানে প্রতীকি শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর মারেন।

পাথর নিক্ষেপ শেষে হাজিদের কোরবানি করতে হয়। ইব্রাহিম (আঃ) যখন তার পুত্রকে কোরবানি করতে যান তখন সেখানে আল্লাহ তায়ালা একটি ভেড়াকে এনে দেন।

কোরবানি শেষে হাজিরা (পুরুষ) তাদের মাথা মুণ্ডণ করেন এবং ইহরামের কাপর খোলেন। এরপর তারা কাবা তাওয়াফ করতে মক্কায় যান। যা মূল তাওয়াফ হিসেবে পরিচিত। কাবায় সাত চক্কর দেওয়ার পাশাপাশি সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে তারা সাতবার আসা যাওয়া করেন। সবকিছু শেষ হওয়ার পর মিনায় তারা তাদের ক্যাম্পে ফিরে যান।

চতুর্থ ও পঞ্চম এ দুইদিনও প্রতীকি শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়েন তারা। এই সময় প্রতীকি শয়তানের তিনটি স্তম্ভের প্রত্যেকটিতে সাতটি করে নুড়ি পাথর ছোড়েন হাজিরা। এখানে হাজিরা আরও দুইদিন অবস্থান করবেন।

মিনার আনুষ্ঠানিকতা শেষে হজযাত্রীরা মক্কায় ফিরে যান এবং শেষবারের মতো কাবা তাওয়াফ করেন। যা ‘বিদায়ী তাওয়াফ’ নামেও পরিচিত।

নিজ বাড়িতে বা দেশে ফিরে যাওয়ার আগে বেশিরভাগ হাজি যান মদিনায়। যেখানে শায়িত আছেন শ্রেষ্ঠ নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)। মদিনায় হাজিরা নবীজীর রওজা পরিদর্শন করেন।

সুত্র: গালফ নিউজ, আলজাজিরা

এনএইচ