সমাজের সর্বত্র জুলুম-অত্যাচার ছড়িয়ে পড়েছে: এ টি এম মাসুম
Share on:
সমাজের সর্বত্র জুলুম-অত্যাচার ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাসুম।
শুক্রবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. মো. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রটারি মো. দেলোয়ার হোসেন, কামাল হোসাইন, অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান প্রমুখ।
এ টি এম মাসুম বলেন, দেশে মানুষের মৌলিক অধিকার আজ ভূলুণ্ঠিত। সমাজের সর্বত্রে এখন অন্যায়-অনাচার ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষের জীবনের কোনো ক্ষেত্রেই শান্তি নেই, স্বস্তি নেই, নিরাপত্তা নেই। মানুষ তার ধর্মীয় অধিকার থেকে বঞ্চিত, রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত, সামাজিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।
তিনি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে কথা বলার স্বাধীনতাও হরণ করা হয়েছে। যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করারও স্বাধীনতা নেই। সভা-সমাবেশ করার অনুমতি মেলে না। দুই বা চারটি দলকে রাজপথে কথা বলতে দিলেও এরই মাঝে সবচেয়ে বেশি জুলুম-নিপীড়ন চলছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপরে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আজ কঠিন সময় পার করছে। তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির ফলে মানুষ আজ চরম অসহায় অবস্থায় রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের জনগণের মুক্তির জন্য জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, ইসলামের দাওয়াত মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে রাজধানীর নেতাকর্মী, বিশেষ করে ইউনিট দায়িত্বশীলদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
মাওলানা এটিএম মাসুম বলেন, আজ তথাকথিত গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী জামায়াত ও ছাত্রশিবির এই দু’টি সংগঠনের বিপুল-সংখ্যক দেশপ্রেমিক নাগরিকদের কোনো অধিকারই দিতে চায় না। শুধু তাই না, দেশের সাধারণ জনগণের আজ জান-মাল ইজ্জতের কোনো নিরাপত্তা নেই। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে ছল-চাতুরিসহ নানাবিধ পায়তারা চলছে। শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের এই বাংলাদেশে বর্তমানে প্রশাসনিক পোস্ট পদবিতে তাকালে বুঝা যায়, এই মুসলমানরা আজ পরবাসী হয়ে গেছে। দীর্ঘ দিন ধরে দেশপ্রেমিক জনগণ সোনালী দিনের অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছে। কিন্তু আওয়ামী গোষ্ঠী বিরোধী দল ও মতের মানুষের ওপর জুলুম নির্যাতন করার পাশাপাশি মিথ্যা দোষারোপ করে জনগণকে ভুলভাবে পরিচালনা করছে।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আল্লাহর রাসূল সা: বলেছেন, যার আজকের দিনটি গতকালকের চেয়ে উত্তম হলো না, তার জন্য ধ্বংস। সত্যিকারভাবে তারাই সফল হয়েছে, যারা নিজেদের নফসকে পরিশুদ্ধ করতে পেরেছে। জামায়াতের একজন ইউনিট দায়িত্বশীল হিসেবে আমাদেরকে অবশ্যই পরিশুদ্ধ জীবনযাপন করতে হবে। ইকামতে দ্বীনের এই কাফেলায় নিজেকে সত্যিকার ঈমানদার হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ঈমান, ইসলাম, তাকওয়া, ইহসানে পরিপূর্ণভাবে নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে। নাফসে মুতমাইন্নার দিকে নিজেকে উত্তরণ করতে হবে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সকল জনশক্তিকে দাওয়াতি কাজ বাড়াতে হবে। সমাজের সকল মানুষের কাছে কোরআনের শিক্ষা পৌঁছে দিতে হবে। সংগঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আরো তৎপর হতে হবে। সমাজের সকল সেক্টরে সৎ, যোগ্য ও দক্ষ লোক তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘জামায়াত কর্মী মানেই সমাজকর্মী’। ফলে সামাজিক কাজের মাধ্যমে মানুষের ঘরে ঘরে ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। সামাজিক নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। সার্বিকভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সাহায্য কামনা করতে হবে।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, জীবনের সবচেয়ে ভালোবাসার বস্তুকে ইসলামের স্বার্থে যারা কুরবানি করেছে, তারাই সফল মুমিন হয়েছে। সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে আল্লাহকে ভালোবাসতে হবে। এরপর তার প্রেরিত রাসূল সা. কে ও জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর কাজকে ভালোবাসতে হবে। এই তিনটি কাজকে ভালোবাসতে যদি কেউ ব্যর্থ হয়, তার জন্য সতর্কবাতা। আল্লাহর পক্ষ থেকে ফায়সালার অপেক্ষা করো।
ভালোবাসার জীবন কুরবানি করেই আল্লাহর প্রিয় পাত্রে উপনীত হতে হবে। রাসুলুল্লাহ সা. ও সাহাবী আজমাইনের মতো পরিকল্পিত ও টার্গেটভিত্তিক ইসলামের আদর্শিক দাওয়াত সবার কাছে পৌঁছাতে হবে। প্রত্যেকের মনোজগতে চিন্তার বিপ্লব সৃষ্টি করতে হবে। জামায়াতের সদস্য ইউনিট দায়িত্বশীল হিসেবে সমাজের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি
এমআই