নতজানু পররাষ্ট্রনীতে দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে : বুলবুল
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, ‘ভঙ্গুর ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ফলে আজ দেশের নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়েছে।
প্রতিদিন সীমান্তে প্রতিবেশী রাষ্ট্র সমূহ বাংলাদেশের জনগণকে লাশ উপহার দিচ্ছে। অথচ ফ্যাসিস্ট সরকার আধিপত্যবাদের তাবেদারী করতে গিয়ে তার কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না। দেশে অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘ সময় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার ফলে কার্যত দেশের ভৌগোলিক সীমানা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। দেশের ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আধিপত্যবাদের দোশর এই স্বৈরাচার সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য জামায়াতের দায়িত্বশীল ভাইদেরকে ভূমিকা পালন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রয়ারি) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের থানা ও বিভাগীয় দায়িত্বশীল সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশে একটি সফল ইসলামী বিপ্লবের স্বপ্ন দেখে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক এলাকা। দেশ পরিচালনার অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এখানে রয়েছে। দেশের মূল প্রশাসনিক অঞ্চল যখন আল্লাহর দ্বীন বিজয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় তখন সারাদেশে তখন খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সফলতা চলে আসে। তাই সংগঠনের সে লক্ষ্য পূরণে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে কঠিনভাবে চাষাবাদ করতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণ ভোট ও ভাতের ন্যায্য অধিকার হারিয়েছে, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, জনগণের কথা বলার অধিকার নেই, এমনকি মানুষের জান ও মালেরও কোনো নিরাপত্তা নেই। স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর লোকেরা ধর্ষণ করছে। প্রশাসনের কতিপয় ব্যক্তি গ্রেফতারকৃত স্বামীকে ফিরিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দিচ্ছে। দেশের এই ক্রান্তিকালে জনগণের অধিকার সুনিশ্চিত করতে মূল দায়িত্বশীলদেরকে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হবে এবং জনগণ তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আরো বক্তব্য প্রদান করেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির যথাক্রমে আব্দুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলাওয়ার হোসেন, কামাল হোসাইন. ড. আব্দুল মান্নানসহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণে কর্মপরিষদ সদস্যরা।
আব্দুস সবুর ফকির বলেন, মহানগরীর দায়িত্বশীলদের মজবুত ঈমানের বলে বলিয়ান হয়ে জাহেলিয়াতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য ইসলামী যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আরো তৎপর হতে হবে। সকল মানুষের কাছে কোরআনের শিক্ষা পৌঁছে দিতে হবে। সামাজিক কাজের মাধ্যমে মানুষের ঘরে ঘরে ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌঁছাতে হবে।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের প্রিয় জন্মভূমি এক গভীর সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠছে, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার হরণ করা হয়েছে। ফলে দেশ ও জাতির প্রয়োজনে জামায়াতের দায়িত্বশীলদের সম্মুখে থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।’
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রত্যেক দায়িত্বশীলকে নিজেদেরকে মানসম্পন্ন নেতৃত্বে পরিণত করার মধ্য দিয়ে দুনিয়ার পরিবর্তন সাধন করার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। একইসাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে আমাদের যাবতীয় কর্মতৎপরতা ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রত্যেক এলাকায় ইউনিট কায়েম করতে হবে। মহল্লা কমিটিগুলোকে আরো সু-সংগঠিত করতে হবে। আগামী দিনে ইসলামী আন্দোলনের মূলক্ষেত্র হিসেবে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে প্রস্তুত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য তিনি সকল থানা আমির ও সেক্রেটারিদের উদাত্ব আহ্বান জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি