রমাদানের পবিত্রতা রক্ষা : তাকওয়া অর্জন ও কুরআনের সমাজ গঠনে জামায়াতের আহ্বান
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ঢাকা নগরবাসীর প্রতি মাহে রমাদানের শুভেচ্ছা, সিয়াম সাধনার এই মাসের পবিত্রতা রক্ষা, ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে তাকওয়া অর্জন এবং কুরআনের আলোকে জীবন পরিচালনার আহ্বান জানিয়ে এক যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন।
রবিবার (১০ মার্চ) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্যের এক বৈঠকে এই আহ্বান জানান ।
যৌথ বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, মাহে রমাদান হলো প্রশিক্ষণের মাস। আত্মশুদ্ধি-আত্মগঠন ও তাকওয়া অর্জনের মাস। সিয়াম সাধনার মাসে যাবতীয় পাপাচার থেকে নিজের নফস ও প্রবৃত্তির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে নিজেকে আল্লাহর কাছে গ্রহণ যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলাই রমাদানের অন্যতম শিক্ষা। এই মাসের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ বাকি এগারোটি মাস সত্য ও সুন্দরের পক্ষে চলার পাথেয় অর্জন করে। মাহে রমাদান কুরআন নাজিলের মাস। কুরআন হচ্ছে মানবতার মুক্তির সনদ। কুরআনের অনুশাসন মেনে চলার মাধ্যমেই দুনিয়ার শান্তি ও পরকালিন মুক্তি নিশ্চিত সম্ভব। তাই কুরআন নাজিলের মাসে কুরআনের বিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে শামিল হতে নেতৃবৃন্দ নগরবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কুরআন থেকে হেদায়াত লাভের জন্য যে মন-মানসিকতা ও চরিত্রের প্রয়োজন, সেই মন ও চরিত্র গঠনের উদ্দেশ্যেই আল্লাহ তা’য়ালা মাহে রমাদানের সিয়াম পালনকে আমাদের জন্য ফরজ করেছেন। পূর্ণ মর্যাদা ও তাকওয়ার সাথে হক আদায় করে মাসব্যাপী সিয়াম পালনের মাধ্যমে মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। তারা বলেন, আজ বাংলাদেশ সহ বিশ্বের মুসলমানেরা এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দিকে দিকে মুসলমানদের উপর ইসলাম বিরোধী শক্তি জুলুম-নিপীড়নের স্টিম রোলার চালাচ্ছে। বিশেষ করে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিচ্ছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ এবং তাদের পূর্ণ-স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান করছি।
মহানগরীর নেতৃবৃন্দ বলেন, রমাদান মাস শুরুর পূর্বেই চাল, ডাল, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। সরকারের ভুল নীতি ও দলীয় লোকদের সিন্ডিকেটের কারণে তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্পুর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়াও এই সরকার ইসলামে নিষিদ্ধ মদের উপর শুল্ক ফ্রি করে খেজুরের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে। যার ফলে ইফতারের সবচেয়ে প্রচলিত খাদ্য খেজুরের মূল্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের মানুষ যেন সাচ্ছন্দ্যে সেহরি ও ইফতার করে সিয়াম পালন করতে পারে তার জন্য আমরা সিন্ডিকেট ও মজুতদারি বন্ধ করে দ্রব্যমূল্য সকল শ্রেণির মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে নিয়ে আসার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানাচ্ছি।
নেতৃবৃন্দ মাহে রমাদানের পবিত্রতা রক্ষায় দিনের বেলায় হোটেল রেস্তোরা বন্ধ, অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা বন্ধ করে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে অশ্লীল পোষ্টার ও বিলবোর্ড অপসারণ, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, গ্যাস ও বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত, যানজট দূরীকরণ, ঈদের এক সপ্তাহ পূর্বেই শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ, আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে বিরত থেকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃত আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ সকল রাজবন্দী ও আলেম-ওলামাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি//এমএইচ