tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
সারাদেশ প্রকাশনার সময়: ১৫ জানুয়ারী ২০২৪, ১৬:১২ পিএম

আগাম আলুর বাম্পার ফলন ও দামে খুশি চাষিরা


potato-1-20240115155754

ভরা মৌসুমের আলুর অধিক ফলন হলেও দাম কিছুটা কম থাকে। তবে আগাম আলুর দাম থাকে তুলনামূলক চড়া। আর ক্ষেতের আলুর ফলন ভালো হলে লাভবান হন চাষিরা।


এই আশায় আগাম জাতের আলু চাষ করে এবার জয়পুরহাটের চাষিরা ভালো ফলন পেয়েছেন। বাজারে দামও রয়েছে ভালো। ভালো ফলন ও দাম বেশি পাওয়াতে এবার খুশি সেখানকার আলু চাষিরা।

আলু উৎপাদনের অন্যতম শীর্ষ জেলা জয়পুরহাটে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩৫ হেক্টর বেশি জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এই মৌসুমে আলু চাষে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৮ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমি। আর আলু চাষ হয়েছে ৩৮ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করেছেন কৃষকরা।

আগাম মিউজিকা জাতের আলু চাষ করেছেন ক্ষেতলাল উপজেলার নওটিকা গ্রামের পবিত্র বর্মণ নামের এক কৃষক। তিনি বলেন, এবার পাঁচ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। এরমধ্যে তিন বিঘা আগাম জাতের আলু। এসব আলু উত্তোলন শুরু করেছি। ৫৭ থেকে ৫৮ দিনের মাথায় এসব আলু তোলা হচ্ছে। এক বিঘা মাটিতে হিসেব করে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর এসব আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকায়। আগাম জাতের আলুতে এমন বাজারমূল্য পাওয়ায় কৃষক হিসেবে আমি খুশি।

আলু চাষি মো. মোসলেম বলেন, আমি তিন বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করেছি। বাজার ভালো পাশাপাশি আলুর ফলনও ভালো হয়েছে। ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা দরে প্রতি মণ স্টিক আলু বিক্রি করেছি। এই দাম থাকলে আমরা কৃষকরা লাভবান হব। তবে এই দামের চেয়ে আলুর দাম কমে আসলে আমাদের লোকসান হবে। আমার তিন বিঘা জমিতে ৯০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। আর আলু বিক্রি করেছি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায়।

আট বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন সদরের বড়ই চকপাড়া গ্রামের কৃষক মো. সুলতান। তিনি বলেন, আগাম জাতের গ্যানোলা আলু উত্তোলন করছি। বর্তমানে যে বাজার যাচ্ছে এতে আমাদের লাভ হচ্ছে। সব আলু উঠানো পর্যন্ত এমন দাম থাকলে আমরা কৃষকরা লাভবান হব। প্রতি বিঘায় আগাম জাতের আলুতে প্রায় ৩০ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। ফলন হয়েছে ৪০ মণের মতো। আমি ১৫০০ টাকা মণে আলু বিক্রি করেছি। সেই হিসেবে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকায় আলু বিক্রি করা যাচ্ছে। সে তুলনায় আগের বছরের তুলনায় এবার আগাম জাতের আলুতে দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে।

আলু ব্যবসায়ী নাজমুল হক বলেন, আমরা কৃষকদের কাছ থেকে আলু কিনে থাকি। এসব আলু পরিষ্কারের পর বস্তা করে যশোর, খুলনা, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। আমরা আলু কেনার পর শ্রমিক খরচ বাদে প্রতিবস্তায় ১৫ থেকে ২০ টাকা লাভে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করি। সব খরচ হিসেব করার পর আলুর দাম নির্ধারণ করে বিক্রি করে। প্রতিদিন আমি ৬০০ থেকে ৭০০ বস্তা আলু বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করি। তবে আলুর আমদানি বাড়লে আলুর দাম কমে আসবে।

জয়পুরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা রতন কুমার রায় বলেন, আগাম জাতের আলুতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। বর্তমান বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি আলু প্রকারভেদে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা পর্যায়ে ৪৮ টাকা থেকে ৫০ টাকায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. রাহেলা পারভীন বলেন, এ বছর জয়পুরহাট জেলায় ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ হয়েছে। ইতিমধ্যে ৩ হাজার হেক্টর জমির আলু উত্তোলন হয়েছে। আমরা প্রতি বিঘায় ৪০ থেকে ৪৫ মণ ফলন পেয়েছি। কৃষকরা বাজারমূল্য ভালো পাচ্ছে।

এমএইচ