tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:৩৯ পিএম

কল্যাণকামী রাষ্ট্রগঠনে জামায়াতকে ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখতে হবে : মুজিবুর রহমান


816299_161

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, আজ দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি সবকিছুতেই নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। চলমান এমন অবস্থা থেকে দেশ ও জাতিকে উদ্ধার করতে হলে জামায়াতে ইসলামীর সকল নেতাকর্মীদেরকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে হবে।


নিজেদের জানমালের কোরবানি করার মাধ্যমে প্রতিটি ঘরে ঘরে পাড়া-মহল্লায় দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। দাওয়াতী কাজ যতো বাড়বে আমাদের মিছিলের সারিও ততো বড় হবে।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরী আয়োজিত বার্ষিক রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আগামী দিনে আমার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে একটি আদর্শিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে হলে জামায়াতে ইসলামীর সকল পর্যায়ের জনশক্তিকে জনকল্যাণমুখী কাজ করতে হবে। সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে আপসহীন হতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদেরকে নিজেদের আমল-আখলাক ও চারিত্রিক দিক থেকে সাহাবায়ে কেরামের প্রতিচ্ছবি হতে হবে। এই দেশের জুলুমবাজ, ফ্যাসিস্ট সরকারকে হঠাতে হলে আন্দোলন জোরদার করতে হবে।

তিনি বলেন, জনগণের সরকার হলো সেই সরকার যে সরকার জনগণকে ভালোবাসবে জনগণও সরকারকে ভালোবাসবে। কিন্তু বর্তমান জুলুমবাজ এই সরকার ছল চাতুরির মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার কেঁড়ে নিয়ে জগদ্দল পাথরের ন্যায় চেপে বসে আছে। যে সরকারকে জনগণ ভালোবাসে না সে সরকার জনগণের সরকার হতে পারে না।

জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদেরকে দুনিয়াবী চিন্তায় বেশি মগ্ন না হয়ে আখেরাতের চিন্তা ও জবাবদিহিতার অনুভূতি লালন করার আহ্বান জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত আমিরে জামায়াত আরো বলেছেন, দুনিয়ায় দান সদকার মাধ্যমে আমাদের জন্য আখেরাতে তৈরী করা হবে বাড়ি। তাই দুনিয়ার জীবনে ভোগবিলাসে মত্ত না থেকে আমাদেরকে আখেরাতের বাড়ি বানানোর কাজ করতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমির সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মহানগর সেক্রেটারী কেন্দ্রীয় মজলিস শূরার সদস্য অধ্যক্ষ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় অনলাইনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জালিমের কারাগারে এখনো বন্দি রয়েছে আমিরে জামায়াতসহ অনেক নেতাকর্মী। আজ পুরো দেশটাই একটি কারাগারে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থা থেকে দেশ ও জাতিকে উত্তরণ করতে হলে জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদেরকে নিজেদের শপথের আলোকে জীবন-যাপন করতে হবে। রুকনিয়াতের আসল চেতনা নিজেদের হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। রুকনরা হলো জামায়াতে ইসলামীর মূল চালিকা শক্তি। এই শক্তির উপর ভিত্তি করেই সকল ঝড়-তুফান অতিক্রম করে এগিয়ে যাচ্ছে বৃহত্তর এই সংগঠন। রুকনদেরকে পরকালীলন জবাবদিহিতার অনুভূতি প্রতিনিয়ত হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। দ্বীন প্রতিষ্ঠার সকল আন্দোলন সংগ্রামে রুকনদের সর্বোচ্চ ত্যাগের নাজরানা পেশ করতে হবে।

কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল এহসানুল হক মাহবুব যোবায়ের বলেছেন, কঠিন সময়ে অতিক্রম করছে দেশ। জামায়াতে ইসলামী এই দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ তৈরির কাজ করছে। আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করব। জামায়াতের প্রতিটি কর্মীকে সমাজকর্মী হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।

তিনি বলেন, এই দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যারাই কাজ করবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। আমরা শক্তিশালী গণভিত্তি তৈরী করতে চাই। জনশক্তিকে জনসম্পদে তৈরী করে একটি সৎ ও দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরী করবে জামায়াতে ইসলামী।

কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, পাশ্চাত্য ও পৌত্তলিকতা ধ্যানধারণার মানুষরা সারা পৃথিবীতে ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করছে। তাদের বিপরীতে দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করছি আমরা। কুরআনের জন্য পাগল এই জনপদের মানুষ তাদের পরিকল্পনা কখনো বাস্তবায়ন করতে দিবে না।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য আবদুর রব বলেছেন, আমরা চট্টগ্রামকে নিয়ে এক স্বপ্নে বাস করছি। চট্টগ্রাম হচ্ছে ইসলামের প্রবেশদ্বার। হতাশার সাগরে না ডুবে সাহসিকতার সাথে এগিয়ে যেতে হবে। সুষ্ঠু ও সুন্দর নেতৃত্ব দিতে পারলে ইসলামের বিজয়ের সূচনা চট্টগ্রাম থেকেই হবে ইনশাআল্লাহ।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, আখেরাতের সাফল্য হচ্ছে আসল সাফল্য। সেই ধারণাকে আঁকড়ে ধরেই আমাদের কাজ করতে হবে। আখেরাতের লক্ষকে সামনে রেখেই আমাদের দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ করতে হবে। এই পথচলার পথে বাঁধার পাহাড় রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াতের ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে এখনো হচ্ছে। সকল বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে জামায়াতে ইসলামী সারা বিশ্বে কাজ করে যাচ্ছে।

ওই সম্মেলন আরো বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমির ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও নগর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, নগর সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, এফ এম ইউনুছ, মো: মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, নগর অফিস সেক্রেটারি এ এইচ এম কামাল প্রমুখ।

বিজ্ঞপ্তি