tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ১০ জুলাই ২০২৪, ১৯:২৭ পিএম

দেশে আজ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সৎ মানুষের : ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদ


848587_135

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলছেন, ‘মানুষ হিসেবে আমাদের যেকোনো অর্জনে প্রথম কৃতজ্ঞতা পাওয়ার একমাত্র হকদার মহান আল্লাহ। আজকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সৎ মানুষের।’


বুধবার (১০জুলাই) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘শিক্ষার এই সময়ে সবচেয়ে বড় ঘাটতি হচ্ছে, ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের মতো করে কুরআন-হাদিস তথা সুন্নাহর শিক্ষা প্রচার করবে, কিন্তু কোনো শিক্ষার্থীকে এটা বুঝতেই দেবে না। নিজেদের কথা বলে সবখানে কৃতিত্ব দেখাবে। একজন মুসলিম শিক্ষার্থী হিসেবে মহান আল্লাহর দেয়া শিক্ষায় খুব সচেতন থেকে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। দুনিয়ার কোনো ফলাফল অর্জন যেন আমার একমাত্র লক্ষ্য না হয়। পরকালীন মুক্তির জন্যই যেন আমার সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা লজ্জিত মুসলিম দেশ হিসেবে এ জন্য যে আমরা মুসলিম দাবি করলেও জাতীয় সংসদে এখন মহান আল্লাহর প্রশংসা করে এক মিনিটও কোনো আলোচনা করার মতো সদস্য হিসেবে কেউ উপস্থিত নেই। অথচ সেই সংসদে এই দুনিয়ার কোনো এক ব্যক্তির প্রশংসা করে মূল্যবান সময় মিনিটের পর মিনিট অপচয় করা হচ্ছে। ওই সংসদে ৩০০ জনের সকলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার যোগ্য হিসেবে অনুপস্থিত। আল্লাহ তায়ালার প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশে আমাদের ব্যর্থতা থাকার কারণেই সমাজ ও রাষ্ট্রে ভয়াবহ দুর্ভোগ দেখা দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ৩৫০ জন মেধাবী ছাত্র-যুবককে হত্যা করা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরি পালন করা হয়। এগুলো কারা করেছে তাদেরই সহপাঠী অন্য শিক্ষার্থীরা। আশ্চর্য এত পড়ে তাহলে আমরা কী পেলাম? সন্ত্রাসী, খুনী, মাস্তান জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্র এদেশের জন্য, এ জাতির জন্য তাহলে কী কল্যাণ বয়ে আনছে।

একইসাথে এই দেশে সমাজে এটাই সত্য যে ১২৪ বছর পার হয়ে গেলেও অনেক মাদরাসায় কোনো সহপাঠী তার বন্ধুকে সামান্য ফুলের টোকাও দেননি। এটা সম্ভব হয়েছে সেখানে পবিত্র কুরআর ও হাদিস চর্চা হয় বলেই। এটাই পার্থক্য ইসলাম ও কথিত মডার্ন শিক্ষাব্যবস্থায়। টাইটানিকের মতো বিশাল জাহাজ তৈরি করেও দাম্ভিকতা দেখানো হয়েছিল। মুহূর্তের মধ্যে সামান্য বরফ খণ্ডের কাছে ধাক্কা খেয়ে দৃশ্যপট ভয়াবহ হয়ে গেছে। পৃথিবীর কোনো কৃতিত্বের জন্য গৌরব স্থায়ী নয়। মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ই আমাদের সফলতায় প্রথম কথা হওয়া উচিত।’

ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘আজকে আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় সঙ্কট নৈতিকতা সম্পন্ন ভালো মানুষের। এই দুনিয়ার সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করেও একজন ভালো মানুষকে তৈরি করা সম্ভব নয়। অথচ সেই চ্যালেঞ্জিং কাজটিই করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ সা. যে আদর্শের মাধ্যমে তার সাথীদেরকে উন্নত নৈতিকতায় সমৃদ্ধ করে একটি সোনার রাষ্ট্র তৈরি করেছিলেন, আমরাও সেই আদর্শকে ধারণ করে এদেশে একদল মানুষকে সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান ঘুনে ধরা এই সমাজকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনতে মেধাবী শিক্ষার্থীদের সত্যিকার দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে ভূমিকা পালন করতে হবে। নিজেদেরকে সৎ, যোগ্য ও দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কোনো দুর্নীতি, অনিয়ম, অবিচার, অব্যবস্থাপনা ও অশ্লীলতা যেন আমাদের মেধা ও যোগ্যতাকে ম্লান করে না দেয় সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশে সৎ, মেধাবী ও যোগ্য নাগরিক তৈরির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যারা এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। যোগ্য নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে জনগণের সকল সমস্যার সমাধানে সচেষ্ট থাকবে।’

তিনি মেধাবী শিক্ষার্থীদের ছাত্রশিবিরের পতাকাতলে সমবেত হয়ে নিজেদেরকে সৎ ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার উদাত্ত আহ্বান জানান।

ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সভাপতি জাফর সাদিকের সভাপতিত্বে এবং শাখা সেক্রেটারি মুজাহিদ আব্দুল্লাহর সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি