tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:১৫ পিএম

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে যেসব যুক্তি বিএনপির


constition-py-67114671f07dd

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে বিএনপি মহাসচিবের আবেদনে ১০টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে।


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষে বুধবার সুপ্রিম কোর্টের ওই আবেদন করা হয়। ৮০৭ পৃষ্ঠার ওই রিভিউ আবেদন আগামী রোববার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীন।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে ওই আবেদনের বিষয়বস্তু তুলে ধরেন তিনি।

জয়নুল আবেদীন বলেন, রিভিউ আবেদনে দশটি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে- আদালতে প্রকাশ্যে ঘোষিত সংক্ষিপ্ত আদেশ সংবিধান সংশোধনের পর পূর্ণাঙ্গ রায় থেকে বাদ দেওয়া এবং তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের অবসরের ১৮ মাস পর রায় প্রকাশ করা একটি বিচার বিভাগীয় প্রতারণা; বিষয়টি নিয়ে একটি ফৌজদারি মামলাও চলমান রয়েছে; তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক স্তম্ভ ধ্বংস করা হয়েছে; একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, সংবিধান একটি জীবন্ত রাজনৈতিক দলিল। সময়ের প্রয়োজন মেটাতে না পারলে এর কার্যকারিতা থাকে না। সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্ব সংবিধানকে প্রাসঙ্গিকভাবে ব্যাখ্যা করা, যান্ত্রিকভাবে নয়। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অবাধ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিতে এ রায় পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ফলশ্রুতিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী সংশ্লিষ্ট মৌলিক মর্যাদা অর্জন করে। সুপ্রিম কোর্ট এই মৌলিক স্তম্ভ অসাংবিধানিক ঘোষণা করতে পারে না।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে ২০১১ সালের ১০ মে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য (রিভিউ) এ আবেদন করা হয়েছে।

অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পর ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে নজিরবিহীন কারচুপির মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। ফলে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ে। একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির কাঁধে ফ্যাসিবাদ জেঁকে বসে।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ অগাস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটে। পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। মানুষ মুক্তি পায়। দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়।

১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে।

সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, তাতে গণতন্ত্র ‘প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছিল।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পূর্বেই সংশোধন করে তৎকালীন আওয়ামী সরকার। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংসদে বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। আদালতে ঘোষিত রায়ের সঙ্গে প্রকাশিত রায় ভিন্ন ছিল; যা বিচার বিভাগীয় প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব অ্যাডভোকেট কায়সার কামাল, ফোরামের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ফোরামের সহসভাপতি গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী আলাল, অ্যাডভোকেট তৌহিদুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এনএইচ