দুর্বল হচ্ছে শিশুদের দৃষ্টিশক্তি
Share on:
বিশ্বজুড়ে শিশুদের দৃষ্টিশক্তি দিন দিন দুর্বল হচ্ছে। কাছের বস্তু দেখতে অসুবিধা না হলেও দূরের ক্ষেত্রে সমস্যা হয় তাদের। এ সমস্যার মূলে রয়েছে বাড়তি স্ক্রিনটাইম। সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। খবর সিনেট।
দূরের বস্তু ঝাপসা দেখার সমস্যাটিকে বলা হয় মায়োপিয়া। ব্রিটিশ জার্নাল অব অফথালমোলজিতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত কয়েক বছরে আরো বেশিসংখ্যক শিশু মায়োপিয়া সমস্যায় ভুগছে। গবেষকরা বলেছেন, মোবাইল, টেলিভিশন, ভিডিও গেমের মতো দৃষ্টির কম দূরত্বের কর্মকাণ্ডের জন্য সমস্যাটি বেড়েছে। বিশেষ করে কভিড-১৯ মহামারী সময় থেকে শিশুদের স্ক্রিনটাইন অনেক বাড়ে। মায়োপিয়ার বর্তমান প্রবণতা বুঝতে গবেষণার উপাত্ত বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সমস্যাটি জেনেটিক কারণে হতে পারে, আবার বাহ্যিক প্রভাবে চোখের মাংসপেশির বাড়তি সংকোচন-প্রসারণও ভূমিকা রাখতে পারে। সাধারণত শৈশবকালে শুরু হয় এবং বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মায়োপিয়া বাড়তে থাকে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছয় উপমহাদেশের ৫০টি দেশের ৫০ লাখের বেশি শিশু ও কিশোরদের মধ্যে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। এতে দেখা যায়, বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর এসব শিশু ও কিশোরদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই মায়োপিয়ায় ভুগছে। পাশাপাশি ২০৫০ সাল নাগাদ মায়োপিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
শুধু যে মহামারীর সময় থেকে এ সংখ্যা বেড়েছে তা কিন্তু নয়। গত তিন দশকে মায়োপিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ থেকে বেড়ে ৩৬ শতাংশ হয়েছে। আগামী ২৫ বছরে তা আরো ৯ শতাংশ বাড়তে পারে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
মায়োপিয়ায় আক্রান্তের দিক থেকে ৮৬, ৭৪ ও ৪৬ শতাংশ নিয়ে যথাক্রমে এগিয়ে আছে জাপান, কোরিয়া ও রাশিয়া।
চিকিৎসকরা বলছেন, চোখের সমস্যা ছাড়াও অতিরিক্ত স্ত্রিন টাইম শিশুদের জন্য অনেক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন উদ্বেগ ও বিষণ্নতা বাড়ানো, জীবনযাত্রার মান কমানো, স্কুলের পারফরম্যান্স খারাপ হওয়া ও আত্মবিশ্বাস কম হওয়া। এর প্রভাব নির্ভর করে তারা কোন ধরনের মিডিয়া দেখছে। যেমন মজার টিভি শো দেখা একটি শিক্ষামূলক ডকুমেন্টারি দেখার থেকে ভিন্ন, অথবা একটি সাধারণ ভিডিও গেম খেলার থেকে এমন একটি গেম খেলা, যেখানে সমস্যা সমাধানে টিমওয়ার্কের প্রয়োজন। এছাড়া স্ক্রিনে বেশি সময় কাটানোর ফলে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ওজনজনিত সমস্যাও হতে পারে।
এফএইচ