ইসলামে জামায়াতবদ্ধ জীবনকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে: ডাঃ শফিকুর রহমান
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন,পবিত্র কালামে পাকের সুরা আল ইমরানের ১০৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো এবং পরস্পর বিভক্ত হয়ো না।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন, ইসলামে জামায়াতবদ্ধ জীবনকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
পবিত্র কালামে পাকের সুরা আল ইমরানের ১০৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো এবং পরস্পর বিভক্ত হয়ো না।’
মুসনাদে আহমদ ও সুনানে তিরমিজিতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘আমি তোমাদেরকে এমন পাঁচটি কথার হুকুম দিচ্ছি যা আল্লাহ আমাকে হুকুম করেছেন। সেগুলো হচ্ছে, সংগঠনবদ্ধ হওয়া, নেতার কথা শুনা, আনুগত্য করা, হিজরত করা ও আল্লাহর পথে জিহাদ করা।’ অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি জামায়াত পরিত্যাগ করল সে ইসলামের শিকল তার গলা থেকে ছুঁড়ে ফেলল।’
তাই কারো পক্ষেই জামায়াতি জিন্দিগীর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তিনি সকল প্রতিকূলতায় ঐক্যবদ্ধ থেকে দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাতে ছাত্র আন্দোলনের সাবেকদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ছাত্র আন্দোলন সাবেকদের নিয়ে এক ভার্চুয়াল প্রীতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ।
আরও বক্তব্য রাখেন সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এ্যাভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এ্যাভোকেট জসিম উদ্দীন সরকার, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আব্দুর রহমান মুসা, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ রাশেদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, ডাঃ ফখরুদ্দীন মানিক, শহীদ মতিউর রহমান নিজামীর বড় ছেলে অধ্যাপক নাকিবুর রহমান তারেক ও শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বড় ছেলে আলী আহমদ মাবরুর প্রমূখ।
ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, দেশ ও জাতি এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। নাগরিকদের নূন্যতম অধিকারও নেই। নেই জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা। ভোটের অধিকারসহ জনগণের সকল অধিকারই একে একে কেড়ে নেয়া হয়েছে।
জামায়াত আমির বলেন, সরকার দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। দেশে কোনো বিনিয়োগ ও ব্যবসা করার পরিবেশ নেই। যারা এদেশ থেকে ইসলামকে ফুৎকারে বিলীন করে দিতে চেয়েছিল, তাদের চেষ্টা কোন কখনো সফল হয়নি বরং উপর্যুপরি ষড়যন্ত্রেও কারণে দেশে ইসলামী ভাবাদর্শ আরো উজ্জ্বল হয়েছে।
ইসলাম বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের হৃৎপিন্ড। জনগণের আস্থায় পরিণত হয়েছে জামায়াত। মূলত, যারা জনগণের সম্পদ লুট করে, ইজ্জত লুট করে তারা কখনো দেশের রক্ষাকারী হতে পারে না।
মুমিনরা কখনো দেশদ্রোহী হয় না। তারা দেশ ও জাতির সম্পদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়। তিনি হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর দিকে এক কদম পরিমাণ অগ্রসর হয় , আল্লাহ তার দিকে দশ কদম অগ্রসর হোন।
তাই আমরা এগিয়ে আসলে আল্লাহর সাহায্য এগিয়ে আসবে। সেদিন মানুষ মানুষের গোলামী থেকে মুক্ত হয়ে খোদায়ী গোলামী করবে। আর সেই দিনই হবে বিজয়ের দিন।
তিনি মানুষের গোলামীর পরিবর্তে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠায় সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, নতুন প্রজন্মকে জান্নাতের পথে চালিত করার জন্য ইসলামী ছাত্রশিবিরের পথচলা শুরু হয়েছিল।
ছাত্রজীবনে দ্বীনের পথে চলার প্রশিক্ষণ নিয়ে বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটানোই শিবিরের আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। মূলত, দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন হচ্ছে সব ফরজের বড় ফরজ। সকল নবী-রাসুল (সা.) এই মিশন দিয়েই দুনিয়াতে প্রেরণ করা হয়েছিল।
তাই এই আন্দোলন থেকে অব্যহতি নেয়ার কোন সুযোগ নেই। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সকলকে বৃহত্তর আন্দোলনে আরও সক্রিয় হওয়ার আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সেলিম উদ্দিন বলেন, ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় বাইয়াতের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অপরিসীম।
মূলত, আর বাইয়াত হলো আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি ও রেজামন্দি হাসিলের লক্ষ্যে নিজের জান ও মালকে ইসলামী জীবনযাত্রার দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা সত্তার নিকট আনুগত্যের শপথের মাধ্যমে আল্লাহর পথে উৎসর্গ করার ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতির নাম।
এ জন্যই রাসূলুল্লাহ (সা.)এর হাতে বাইয়াত নেয়ার অর্থই হলো আল্লাহপাকের নিকট বাইয়াত গ্রহণ করা। কালামে হাকীমের সূরা ফাতহের ১০ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর যারা তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করে, তারা শুধু আল্লাহরই কাছে বাইয়াত গ্রহণ করে, আল্লাহর হাত তাদের ওপর সংস্থাপিত, তারপর যে কেউ অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে তার ওয়াদা ভঙ্গের পরিণাম তারই ওপর বর্তাবে।
আর যে আল্লাহকে দেয়া অঙ্গীকার পূরণ করবে অতিসত্বর আল্লাহ তাকে মহা পুরস্কার প্রদান করবেন।’ তিনি সম্ভব স্বল্প সময়ের মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে বাইয়াত গ্রহণের আহবান জানান। ( প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
এইচএন