এবার ইউরোপের ৩ দেশের সঙ্গে ‘ঠান্ডা লড়াই’ নেতানিয়াহুর!
Share on:
স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির দাবি বহু দিনের। জাতিসংঘের বেশিরভাগ সদস্য রাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বলয়ের বেশকিছু দেশে এখনো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে মানে না।
ফিলিস্তিন ২০১২ সাল থেকে জাতিসংঘের অ-সদস্য পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা পাচ্ছে।
জাতিসংঘে বারবার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির প্রস্তাব উঠলেও যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতে তা খারিজ হয়ে যায়। সম্প্রতি আবারও ফিলিস্তিনকে পূর্ণাঙ্গ সদস্য করার একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসরায়েল।
এর মাঝেই ইহুদি দেশটির সঙ্গে সংঘাত বাড়িয়ে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা করেছে পশ্চিমা বলয়ের দেশ স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এই তিন দেশ থেকে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করেছেন নেতানিয়াহু।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের মর্যাদা দেওয়া মানে সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা।
বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের মর্যাদা দিচ্ছে। এর উদ্দেশ্য একটাই। সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা। শমরিয়া ও জিহুদিয়ার ৮০ শতাংশ ফিলিস্তিনি গত ৭ অক্টোবরের হামলাকে সমর্থন করে। রাষ্ট্র স্বীকৃতি দিলে এটা একটা সন্ত্রাসী দেশ হয়ে উঠবে। আমরা তা কখনই হতে দেব না। সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করলেই শান্তি ফিরবে না।
এর আগে বুধবার ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গাহর স্টোর বলেন, ইসরায়েলের ভালোর জন্যই সেখানে দুই রাষ্ট্রনীতি কার্যকর হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাঙ্কসহ ফিলিস্তিন দেশ প্রতিষ্ঠিত হোক। তাতে দুই দেশের মধ্যে থাকা সংঘাত শেষ হবে ও পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ফিরবে।
তিনি বলেন, আগামী ২৮ মে আমরা ফিলিস্তিনকে দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেব। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরপরই এক সংবাদ সম্মেলন করে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস বলেন, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে এবং স্পেন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের মর্যাদা দেওয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি আরও কিছু দেশ আমাদের উদ্যোগকে অনুসরণ করবে।
একইদিন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজ জানান, আগামী ২৮ মে ফিলিস্তিনকে দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে ৩ দেশের প্রতিনিধিরা একজোট হতে চলেছি। সেখানেই ফিলিস্তিনকে স্বাধীন দেশ হিসেবে মর্যাদা দেব আমরা। তিন দেশের এই ঘোষণার পরই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসরায়েল।
আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে এবং স্পেনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। এই ৩ দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কও ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয় তেল আভিভ। ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে এবং স্পেনে থাকা ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতদের দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে নেতানিয়াহুর সরকার।
বিশ্লেষকদের মতে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে এবার ইউরোপের এই ৩ দেশের সঙ্গে কার্যত ‘ঠান্ডা লড়াই’-য়ে জড়ালেন নেতানিয়াহু। আগামী দিনে এই সংঘাত কোনোদিকে যায় সেদিকেই নজর কূটনৈতিক মহলের।
এনএইচ