tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:২৬ পিএম

‘ভারত-বাংলাদেশ স্বামী-স্ত্রী’, সাবেক মন্ত্রীর বক্তব্যর প্রসঙ্গ টানলেন রিজভী


Untitled-1-672dc7e499bd8

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আপনাদের (ভারত) সঙ্গে শেখ হাসিনার বন্ধুত্ব। আপনাদের সঙ্গে গণতন্ত্র হত্যাকারীদের সম্পর্ক।


আপনাদের সঙ্গে তো বাংলার জনগণের সম্পর্ক নেই। আপনারা খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছেন, হৃদয়ে ভয়ংকর জ্বালা, শেখ হাসিনা নাই তাই। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক তা হচ্ছে শেখ হাসিনা ভার্সেস ভারত। বাংলাদেশ আর ভারত নয়। ভারতের পলিসি মেকারদের সঙ্গে এই সম্পর্ক। শেখ হাসিনার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। তাহলে কত গভীর এই সম্পর্ক, এখানে জনগণ কোনো বিষয় নয়।

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকালে শহিদ মিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বাংলার মানুষ যেমন স্বাধীনতা প্রিয়, বাংলার মানুষ যেমন স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। ঠিক তেমনি তারা গণতন্ত্র প্রিয়। সুতরাং কর্তৃত্ববাদী, দুঃশাসন, একদলীয় দুঃশাসন এবং জনগণের উপর স্টিমরোলার চালিয়ে আপনারা কখনোই আপনাদের প্রতিভাকে টিকিয়ে রাখতে পারবেন না।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব আরও বলেন, ‘৫২, ৬২, ৬৯-৭১ এ যেন এক বিপ্লবের রক্তধারা। বাংলার তরুণদের কাছ থেকে শেখ হাসিনা ওটাকে কেড়ে নিতে পারেনি, অনেক চেষ্টা করেছে। অনেক রকম অপপ্রচার করেছে, অনেক ধরনের কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন দিয়ে পাঠ্যপুস্তক রচনা করেছে, বিভিন্ন বই রচনা করেছে। আর আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সত্য যে রচনা করতে গিয়েছে, তাদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যে কথা বলতে গিয়েছে তাকে গুম করে দেওয়া হয়েছে। না হলে লাল দালানের মধ্যে তাকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মাঝখান দিয়ে আবার যখন তারণ্য জেগে উঠল। আন্দোলনে এক ভাই মারা যাচ্ছে আরেক ভাই তার পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে। পুলিশ নিজেই বলেছে এরা তো কমে না, একটা করে গুলি করে মারি আরেকজন এসে দাঁড়ায়।

রিজভী বলেন, যারা বাংলাদেশকে কব্জা করতে চায়, স্বাধীনতাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায় তাদেরকে বলে রাখা উচিত এই বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে আবরার, মুগ্ধ ও আবু সাঈদদের যুগ যুগ ধরে জন্ম হয়েছে। এই বীরত্ব গাথা ইতিহাস হয়তো জানেন না দিল্লি। আপনারা হয়তো জানেন না পার্শ্ববর্তী দেশ- কত বীরের আত্মদানের মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশ। আর আপনারা আধিপত্যবাদী নীতির মধ্য দিয়ে এই দেশকে চালাবেন। আপনারা এই দেশের উপর প্রভুত্ব কায়েম করবেন,কখনই পারবেন না।

ভারতের নীতিনির্ধারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নীতি নির্ধারকদের বলতে চাই তারা যখন একটি উপমহাদেশ ছিল, তখন এই উপমহাদেশে স্বাধীনতার আন্দোলন চলছে এবং ওই সময় যখন আরও অনেক স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করা হয়। তখন তাদেরই একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতা প্রধানমন্ত্রী তিনি এটিকে পছন্দ করেননি। তার একটি বই আছে ‘ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া’ যার রচয়িতা তাদের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু। সেখানে এক জায়গায় তিনি বলেছেন ‘তোমরা যারা এখানে মুসলমানদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র করছ, কেউ খালিস্থান রাষ্ট্রের জন্য আন্দোলন করছ এটা টিকবে না। তোমাদের আমরা একটা সাংস্কৃতিক সাহিত্য শাসন দিতে পারি, কিন্তু তোমাদের স্বাধীন পলিটিক্যাল ইউনিট দেব না।’ এটা হচ্ছে তাদের প্রতিষ্ঠাতা প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য। তারা ওই নীতি নিয়ে চলে। কিন্তু আপনারা কী তাতে সার্থক হয়েছেন? হবেন না। কারণ এই দেশের মৃত্তিকা থেকে আবরার ফাহাদদের জন্ম হয়। মৃত্তিকা থেকে আবু সাঈদদের জন্ম হয়, মুগ্ধর জন্ম হয়। কোনোদিন আপনারা সেটা পারবেন না।

রিজভী বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা অসম একটি চুক্তি করেছিলেন আদানি গ্রুপ লিমিটেডের সঙ্গে ভারতে যারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। অনেক বকেয়া রেখে গেছেন শেখ হাসিনা। সেই বকেয়া কমানোর জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চেষ্টা করছে, অনেক পরিশোধ করেছে- আরও কিছু বাকি আছে। প্রায় ১৭০ মিলিয়ন ডলার এই তিন মাসের মধ্যে তারা বিভিন্নভাবে জমা দিয়েছে, বকেয়া পরিশোধ করেছে। তারপরও উনারা সন্তুষ্ট নন। বাংলাদেশে যে বিদ্যুৎ দেয় সেই বিদ্যুতের উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। হুমকি দিয়েছে যে টোটালি বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেবেন। কেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নেই এজন্য? এজন্যই কি আপনাদের এত রাগ, এত ক্ষোভ?

এনএইচ