চালের দাম কমেনি, মাংস ও সবজিতে কিছুটা স্বস্তি
Share on:
গত ৫ আগস্টের আগে সরকার পতনের আন্দোলনের সময় বেশকিছু পণ্যের দাম বেড়েছিল। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য চাল। যা এরপর কেটে যাওয়া একমাসেও কমেনি। বরং নতুন করে চালের দাম বাড়ার শঙ্কার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা।
প্রধান এই খাদ্যপণ্যটির চড়া দাম নিয়ে দারুণ বিপাকে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ। তারা বলছেন, নতুন সরকার অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কমাতে যেমন উদ্যোগ নিচ্ছে, চালের ক্ষেত্রেও তা প্রয়োজন। তারা বাজারে গিয়ে চাল কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর হাজীপাড়া বউবাজারে চাল কিনতে এসে খালেক হোসেন নামের একজন জাগো নিউজকে বলেন, সংসারে প্রতিদিন দেড় কেজি চালের জন্য ১০০ টাকা লাগে। দাম কমছে না। এরমধ্যে ওএমএস বন্ধ। এখন আর তিনবেলা রান্না হয় না। এক কেজি চালে দিন পার করতে হয়।
তিনি বলেন, শাক-সবজি ও মুরগির দাম কমলো, কিন্তু চালের দাম তো আগে কমা দরকার। কারণ, ভাত না জুটলে এগুলো দিয়ে কী হবে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের কয়েক সপ্তাহের মতোই মোটা চালের কেজি ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে আবার অধিকাংশ দোকানেই মিলছে না মোটা জাতের চাল। যে কারণে অনেক ক্রেতাকে বাধ্য হয়ে মাঝারি মানের চাল কিনতে হচ্ছে।
এদিকে, মাঝারি চাল বিআর-২৮ ও পাইজাম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। পাশাপাশি মানভেদে সরু চালের কেজি ৭০ থেকে ৭৮ টাকা।
মাস দেড়েক আগেও মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ ও মাঝারি চালের কেজি ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর সরু চাল বিক্রি হতো কেজিপ্রতি ৬৫ থেকে ৭৬ টাকায়। অর্থাৎ, চালের দাম গত এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৪ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার পেঁয়াজ ও আলুর শুল্ক কমিয়েছে সরকার। তবে একদিনের ব্যবধানে এসব পণ্যের দামে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। প্রকৃতপক্ষে এর প্রভাব পড়তে কিছুটা সময়েরও প্রয়োজন।
এ অবস্থায় গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল রয়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। এখন ব্রয়লারের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭৫ টাকা। পাশাপাশি সোনালি মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দরে। এছাড়া গত সপ্তাহের মতো ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়।
তবে কিছুটা কমেছে গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকায়। সপ্তাহ দুয়েক আগেও গরুর মাংসের কেজি ছিল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা।
রামপুরা বাজারের মাংস ব্যবসায়ী হালিম চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, দাম বেশি থাকার কারণে মাংস বিক্রি খুব কম ছিল। যে কারণে বাধ্য হয়ে অনেক ব্যবসায়ী দাম কিছুটা কমিয়ে দিয়েছেন।
ক্রেতারা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন সবজির বাজারে। সরকার পতনের পর থেকে বেশিরভাগ সবজির দাম ক্রেতার নাগালে রয়েছে। ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পটোলের কেজি। এক মাস আগেও পটোলের কেজি ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। পটোলের মতো বেশিরভাগ সবজির দাম নেমেছে অর্ধেকের কাছাকাছি। এক মাস আগের ১৫০ টাকা কেজির বেগুন ও করলার কেজি এখন কেনা যাচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।
মৌসুমের মাঝামাঝি এসে বাজারে ইলিশের সরবরাহও বেশ বেড়েছে। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী কমেনি দাম। ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজির কিছুটা বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ১৫৫০ টাকায়। কমবেশি ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা। আর ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেনা যাচ্ছে ৯০০ থেকে ১১০০ টাকায়। ছোট ইলিশের কেজি ৬০০ টাকা।\
এফএইচ