সরকার কৃষকদের চরম কষ্টের মধ্যে ফেলেছে: মির্জা ফখরুল
Share on:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার দেশের কৃষকদের শুধু অবহেলা নয়, চরম কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। সারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে কৃষক দল।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার হঠাৎ করে প্রতি কেজি সারে পাঁচ টাকা দাম বাড়িয়েছে। কারণ এই সরকারকে আইএমএফ শর্ত দিয়েছে কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। সারা পৃথিবীতে কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়া হয়। কারণ যদি তাদেরকে ভর্তুকি না দেওয়া হয় তাহলে তারা ফসল ফলাতে পারবে না।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার তার কাছের লোকদের টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করছে। এই সরকার সাধারণ মানুষের সরকার নয়। চাল, ডাল, তেল, লবণ সবকিছুর দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সরকারি ব্যাপারে কিছু বলে না। তারা বলে জিনিসপত্রের দাম সহনশীল পর্যায়ে আছে। তারা বলে আয় বেড়েছে। কাদের আয় বেড়েছে? আয় বেড়েছে আওয়ামী লীগের, আয় বেড়েছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের । যারা চুরি করে, ডাকাতি করে, যারা মানুষের লুট করে খায় তাদের আয় বেড়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এত আগুন লাগছে কেন? কারণ এই ঘটনাগুলো ঘটছে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে । পরিবেশের বিপর্যয় কে করেছে? এই সরকার আজকে যেখানে জায়গা পায় সেখানে বিল্ডিং তৈরি করে দেয়। মার্কেট বানিয়ে দেয়। যাতে করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা চাঁদা তুলতে পারে।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিএনপিকে? কিছু হলেই বিএনপি। উদার পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে চান। ওখানে (নিউ সুপার মার্কেট) তো ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সিটি কর্পোরেশনের পোশাক পরিহিত লোক এসেছিলেন। তারা সামনের ওভারব্রিজ ড্রিল মেশিন দিয়ে ভেঙ্গে দিচ্ছিলেন তখন শর্ট সার্কিট হয়েছিল। এটা ব্যবসায়ীরা নিজেরা দেখেছেন, তারা বলেছেন। তারপরে সেখানে আগুন লেগেছে। সিটি কর্পোরেশন লোকেরা আগুন নেভানোর চেষ্টাও করেছেন। যখন আগুন নেভাতে পারেনি তখন তারা পালিয়ে গিয়েছে। এটা আমার কথা না। এটা সেখানকার ব্যবসায়ীদের কথা।
সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বে আছে কে এমন প্রশ্ন তুলে ফখরুল বলেন , দায়িত্বে আছেন আপনারা, আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে। আগুন লাগার পেছনে আওয়ামী লীগ আছে। দাবি উঠেছে সারের দাম কমাও , তেলের দাম কমাতে হবে। আমাদেরকে বাঁচতে দিতে হবে, ভোটের অধিকার দিতে হবে। এই দাবিগুলোকে পাশ কাটার জন্য আর মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে অন্যদিকে নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগই আগুন লাগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ধৈর্যের একটা সীমা আছে । পরিষ্কার কথা সারের দাম কমাতে হবে। প্রতিবাদ করলে কি? গুলি, গ্রেফতার ,মামলা ,গায়েবী মামলা। তারা মামলায় নাম দেয় ৪০ জনের । আবার অজ্ঞাতনামা দেড় হাজার। এভাবে তারা ধরে নিয়ে যায় আর টাকা নেয়। মানুষের উপরে তাদের কোন দয়া মায়া নেই। কারণ তারা জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হয় না।
মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ আর সহ্য করবে না। পরিষ্কার করে আমরা বলে দিয়েছি, এই সরকারকে সরাতে হবে। এই সরকার যতদিন থাকবে ততদিন মানুষের উপর অত্যাচার বাড়বে। আমাদের সাংবাদিকরা লিখতে এখন ভয় পায় ! লেখার আগে চিন্তা করে কি লিখব! এটা লিখলে আমার নামে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা হবে কিনা। এবার আর সেটা চলবে না। আমরা সবাই একসাথে একযোগে বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য একসাথে নেমেছি। ইনশাআল্লাহ আমরা এই আন্দোলনে জয়ী হব।
কৃষক দল সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকা জেলা কৃষক দলের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী।
এমআই