tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ পিএম

চলমান গণআন্দোলন নিয়ে সরকারের কোন ষড়যন্ত্রই সফল হবে না : মাওলানা আব্দুল হালিম


Pic (9)

চলমান গণআন্দোলন নিয়ে সরকারের কোন ষড়যন্ত্রই সফল হবে না বরং সকল জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলা করেই আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম।


তিনি রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের হাতিঝিল অঞ্চল আয়োজিত এক ভার্চুয়াল রুকন ও ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও অঞ্চল পরিচালক হেমায়েত হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য এবং প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মূসা এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য মাওলনা আমিনুল ইসলাম ও জিল্লুর রহমান প্রমূখ।

মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, জামায়াতের ইসলামীর আন্দোলন নবী-রাসূল (সা.)গণের আন্দোলনের ধারাবাহিকতা। এই পথ কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ ছিলো না; এখনো নয় বরং জেল, জুলুম, নির্যাতন এবং ফাঁসির ঝুঁকি মাথায় নিয়েই এই কাজের আঞ্জাম দিতে হয়। এই কাজ করতে গিয়েই জামায়াত প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মওদুদী (রাহি.) ১৯৫৩ সালের ৮ মে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন। অবশ্য তীব্র জনমতের চাপে ১৯৫৫ সালে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেছিলেন। সে ধারাবাহিকতার শিকার হয়ে শহীদ হয়েছেন আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষনেতা। কারাবরণ করেছেন লক্ষাধিক নেতা-কর্মী, ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। তাই জালিমের জুলুম- নির্যাতনে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের হতোদ্দম হওয়ার কোন সুযোগ নেই বরং সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই আন্দোলনকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সকলকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।

তিনি বলেন, জামায়াতকে নিবন্ধন না দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের শহীদ নেতৃবৃন্দের বিচক্ষণতা ও প্রবল জনমতের চাপে তদানীন্তর নির্বাচন কমিশন জামায়াতকে নিবন্ধন দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই ২০০৯ সালে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট হয় এবং ২০১৩ সালে ন্যায়ভ্রষ্ট রায়ে তা বাতিল হয়। সর্বশেষ ১৯ নভেম্বর ২০২৩ আপীল বিভাগে মামলাটি ‘উরংসরংংবফ ভড়ৎ ফবভধঁষঃ’ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এতেই জামায়াতে কর্মতৎরতা ও অগ্রযাত্রা থেমে যাবে না বরং সকল ষড়যন্ত্র ও প্রতিবন্ধকতা রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করা হবে-ইনশাআল্লাহ। তিনি সরকারের পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা, আমীরে জামায়াত ডা.শফিকুর রহমান ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ কারারুদ্ধ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তির গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথের আন্দোলন আরো বেগবান করতে দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহবান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আব্দুর রহমান মূসা বলেন, জামায়াতে ইসলামী সব সময়ই দেশ ও জাতির কল্যাণে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী জাতীয় সংসদে ১০টি আসন লাভ করেছিল। কিন্তু দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য ১৯৮৮ সালে আমরা জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছিলাম। ১৯৯১ সালে ১৮ টি এবং ২০০১ সালে ১৭ টি আসন লাভ করার পর জামায়াকে নিয়ে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। একই সাথে শুরু হয় জুলুম-নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ। কিন্তু জামায়াতের অগ্রযাত্রা থেমে থাকে নি বরং আমরা এখন রাজনৈতিক ময়দানে অপ্রতিরোধ্য শক্তি। তিনি দ্বীনের বিজয় না হওয়া পর্যন্ত সকলকে ময়দানে সক্রিয় থাকার আহবান জানান।

ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আল্লাহ জান্নাতের বিনিময়ে আমাদের জানমাল ক্রয় করে নিয়েছেন। তাই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে সময়, আরাম-আয়েশ পরিত্যাগ করে আল্লাহর রাস্তায় জান-মালের কোরবানী করতে হবে। মূলত, মোমিন জীবনের চুড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন করে জান্নাত লাভ। আর কারা এই সৌভাগ্য অর্জন করবেন তা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনই ভাল জানেন। তাই কোন বাধা-প্রতিবন্ধকতায় হতোদ্দম না হয়ে দ্বীন ও জনগণের ভোট-ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি সরকারের পতন ও কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে হেমায়েত হোসাইন বলেন, সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজপথ উত্তাল হয়ে উঠেছে। গণদাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জনতা রাজপথ ছাড়বে না। তিনি দাবি আদায়ে সকলকে রাজপথে সর্বশক্তি নিয়োগের আহবান জানান।