tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২:০৬ পিএম

গ্রেফতার হচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তা কাফী


image-846687-1725379203

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলি চালিয়ে নির্বিচারে ছাত্রজনতাকে হত্যার ঘটনায় পুলিশের কোনো কর্মকর্তা হিসেবে প্রথম গ্রেফতার হতে যাচ্ছেন আব্দুল্লাহিল কাফী।


ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সুপারনিউমারারি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পাওয়া) বিসিএস ২৯ তম ব্যাচের এই কর্মকর্তাকে সোমবার রাত থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

তিনি গোপনে দেশ ত্যাগের সময় সোমবার রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক হন। তার বিরুদ্ধে ছাত্রজনতাকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ ও পরে লাশ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার মতন লোমহর্ষক ঘটনার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। ডিবি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) রবিউল হোসেন ভূঁইয়া মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে যুগান্তরকে বলেন, যেহেতু সে (আব্দুল্লাহিল কাফী) সরকারি কর্মকর্তা সেহেতু তাকে চাইলেই গ্রেফতার দেখাতে পারি না। তাকে গ্রেফতারের অনুমতি চেয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। অনুমতি পেলে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হবে।

পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল কাফীর বাড়ি সিরাজগঞ্জ সদরে। তিনি ২০১১ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে ঘনিষ্টতা ছিল তার।

জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিমানবন্দর থেকে কাফীকে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিএমপির ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। গত ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে ছাত্রজনতাকে গুলি করে হত্যার পর লাশ ভ্যানে স্তুপ করা ও পরবর্তীতে লাশ পোড়ানোর ঘটনায় বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল কাফীর সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখার জন্য আটক করা হয়। পরে তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মাথায় পুলিশের হেলমেট ও সাদাপোশাকের ওপর পুলিশের ভেস্ট পরা এক ব্যক্তি আরেকজনের সহায়তায় চ্যাংদোলা করে নিথর এক যুবকের দুহাত ধরে ভ্যানের ওপর তুলছেন। ভ্যানের ওপর আরও কয়েকটি নিথর দেহ স্তূপ করে রাখা। দেহগুলো থেকে ঝরে পড়া রক্তে ভিজে গেছে সড়কের কিছু অংশ। বিছানার চাঁদরের মতো একটি চাদর দিয়ে তাদের ঢেকে রাখা হয়েছে। পাশেই পুলিশের হেলমেট, ভেস্ট পরা আরও কয়েকজনকে দেখা যায়। এ ঘটনায় সাত জনের মৃত দেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। তারা জানায়, লাশ গুলো আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওর ঘটনাস্থলটি সাভারের আশুলিয়া থানা-সংলগ্ন এলাকার বলে জানা গেছে। এএফপির ফ্যাক্ট চেকিং এডিটর কদরুদ্দীন শিশির তার ফেসবুক টাইমলাইনে ঘটনাটি ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার নিকটবর্তী এলাকায় বলে উল্লেখ করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নির্বিচার গুলি চালালে বেশ কয়েকজন নিহত হন। আহত হন অনেকে।

রাতে আশুলিয়া থানার অদূরে নবীনগর থেকে চন্দ্রাগামী মহাসড়কের এক পাশে পুলিশ লেখা পিকআপের আগুনে ভস্মীভূত মরদেহ দেখেন তারা। এ ছাড়া থানার সামনে আগুনে পোড়া একটি মরদেহ ছিল। পদচারী-সেতুতে উল্টো করে ঝোলানো ছিল ক্ষতবিক্ষত দুই পুলিশ সদস্যের লাশ। ওই রাতে আশুলিয়া থানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে।

এনএইচ