মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী কিছুই পেল না রংপুরবাসী
Share on:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে গঠন করা হয়েছে মন্ত্রীসভা। তবে এবার কোনো মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী পাননি রংপুরবাসী। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে রংপুরজুড়ে।
রংপুরের ছয়টি সংসদীয় আসন থেকে এর আগে (একাদশ সংসদ নির্বাচনে) টিপু মুনশিকে বাণিজ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। অবশ্য নানান সমালোচনার কারণে এবার তিনি বাদ পড়েছেন বলে ধারণা সকলের।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদে ডাক পাওয়া মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা শপথ নেন। শপথ নেওয়া মন্ত্রিসভায় সবচেয়ে বেশি মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী পেয়েছে ঢাকা এবং চট্রগ্রাম বিভাগ। তবে একাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভায় রংপুর বিভাগের পাঁচজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী স্থান পেলেও এবার বিভাগের আট জেলার মধ্যে শুধু দিনাজপুর জেলা থেকে দু’জন এমপি স্থান পেয়েছেন। তারা হলেন - দিনাজপুর জেলার আবুল হাসান মাহমুদ আলী (অর্থ মন্ত্রী) এবং খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী)। বিভাগের অন্য সাত জেলার এমপিরা কোনো মন্ত্রিত্ব পাননি।
এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদে এই বিভাগের রংপুরের টিপু মুনশি বাণিজ্য, পঞ্চগড়ের নুরুল ইসলাম রেল ও লালমনিরহাটের নুরুজ্জামান আহমেদ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এছাড়া দিনাজপুরের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং কুড়িগ্রামের মো. জাকির হোসেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভায় রংপুর জেলার ছয়টি সংসদীয় আসন থেকে কেউ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হিসেবে স্থান না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন রংপুরবাসী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ চায়ের দোকান থেকে অভিজাত এলাকা সকল স্থানে এই ইস্যু নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন যে রংপুর বরাবরই অবহেলিত। ধারাবাহিকভাবে এবারও অবহেলার শিকার হয়েছে।
এ বিষয়ে সিটি প্রেসক্লাব রংপুরের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মানিক বলেন, এটা দুঃখজনক। গতবারে একজন মন্ত্রী থাকলেও এবারের মন্ত্রিসভায় কাউকে রাখা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছড়াকার ও গীতিকার এস এম খলিল বাবু। তিনি বলেন, রংপুরের অন্তত একজনকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া উচিৎ। কেননা রংপুর এখন বিভাগীয় নগরী। রংপুরের উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু সারাদেশের অন্যান্য বিভাগীয় নগরী থেকে পিছিয়ে আছে রংপুর।
মন্ত্রিসভা গঠনের পর থেকে বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জবাসী মন্ত্রী চাই আবেদনে বেশ সক্রিয়। কেননা পরপর তিনবার সংসদ সদস্য হয়ে হ্যাট্রিক করেছেন আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক। দুইবার প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাচনী সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রেখেছেন। এজন্য অনেকেই ডিউক মন্ত্রী হবে - এমনটাই ভাবছিলেন। কিন্তু তিনি মন্ত্রিসভায় ডাক না পাওয়ায় হতাশ হয়েছে বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জবাসী।
বদরগঞ্জের আফরোজা বেগম জানান, ডিউক ভাই তিনবারের সংসদ সদস্য, তাই আমরা এবারের মন্ত্রিসভায় তাকে প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু ভাগ্য সহায় হলো না আমাদের। তবে এখনও সুযোগ আছে বলে মনে করেন তিনি।
তবে অন্যকথা বললেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী রংপুরের পুত্রবধু হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রংপুরের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেছেন। তাছাড়া তার সরকার এর আগে প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রী দিয়েছিলেন। তিনি পীরগঞ্জের এমপি ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে জাতীয় সংসদের স্পিকার করেছেন। এবারে এখনও কাউকে মন্ত্রিত্ব দেননি, তবে আগামীতে দিতে পারেন। এখনও অনেক সুযোগ আছে। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
উল্লেখ্য, রংপুরের ছয়টি সংসদীয় আসনে এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে তিনজন, জাতীয় পার্টি থেকে একজন এবং দু’জন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।
এনএইচ