কানাডায় বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের মধ্যে বাংলাদেশীয় পণ্যের সমাহার
Share on:
কানাডার ব্যস্ততাময় প্রবাস জীবনের এই সময়টা একটু ভিন্ন ধরনের সময়। গাছের পাতাগুলো ঝরে হলুদের আকার ধারণ করছে। সম্পূর্ণ নাতিশীতোষ্ণ। না শীত না গরম। ছোট ছোট শিশু-কিশোরদের স্কুল শুরু হওয়ায় অনেককেই ঘরে থাকতে দেখা যায়।
ঋতু বৈচিত্র্যের আবাহনে এই সময় ছুটির দিনগুলোতে অনেকেই আবার পরিবার পরিজন নিয়ে বের হন প্রকৃতির দৃশ্য অবলোকনে। আবার ছুটির দিনগুলোতে অনেককেই দেখা যায় পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় গ্রোসারি বাজারগুলো সম্পন্ন করতে।
কর্ম ব্যস্ততময় প্রবাস জীবনে স্বামী অথবা স্ত্রী’র সপ্তাহ শেষে কারো না কারো কাজ থেকেই যায়। তবে অনেকেই পরিবারের সময় দেওয়া এবং সংসারের গ্রোসারি সম্পন্ন করার জন্য রবিবার দিন ছুটি নিয়ে থাকে।
কানাডার ক্যালগেরির বাংলাদেশি দোকানগুলোতে শনি বা রবিবারে একটু বেশি ভীড় দেখা যায়। গ্রোসারি দোকানের মালিকেরাও অপেক্ষায় থাকেন শনি বা রবিবারের জন্য। কারণ এ দিন দুটিতেই বেশি ক্রেতা সাধারণের সমাগম ঘটে।
কানাডার বিভিন্ন গ্রোসারি দোকানগুলো সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে বাংলাদেশি পণ্যের এখন বিশাল সমাহার। প্রবাসী বাঙালিরা তাদের নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী সব ধরনের পণ্যই এখন এসব গ্রোসারি দোকানে পাচ্ছে। এর মধ্যে দেশীয় পরাটা, বিভিন্ন ধরনের রান্না করার মসলা, প্যাকেটজাত ফ্রোজেন সিঙ্গারা, আলুপুরি, ডালপুরি, বাংলাদেশের চিনিগুড়া, কালিজিরাসহ বিভিন্ন ধরনের চাল, আটা, ময়দা, দই ও মিষ্টি থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্যই এখন প্রবাসী বাঙ্গালীদের চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
শুধু তাই নয়, বহুসংস্কৃতির দেশ কানাডায় বাংলাদেশিদের পাশাপাশি অন্যান্য কমিউনিটির ক্রেতা সাধারণও বাংলাদেশি পণ্য কিনছে। এর অন্যতম আরো একটি কারণ, বাংলাদেশী গ্রোসারি স্টোর ছাড়াও কানাডার বিভিন্ন গ্রোসারি স্টোরে বাংলাদেশি পণ্যে সয়লাব।
বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানি যেমন প্রিমিয়াম, প্রাণ, রাঁধুনী, কোম্পানির মালিকেরাও প্রবাসীদের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন ধরনের পণ্য কানাডায় রফতানি করছে।
ক্যালগেরির বাংলাবাজার গ্রোসারি স্টোরে এই প্রতিবেদককের সাথে কথা হলো প্রবাসী বাংলাদেশি আশরাফুর রহমানের সাথে। তিনি মিডিয়াকে বলেন, প্রথম প্রথম বাংলাদেশ থেকে আসার পর খুব খারাপ লাগতো বাংলাদেশি পণ্যের জন্য। আর এখন বাংলাদেশি গ্রোসারি স্টোরে প্রবেশ করলে মনে হয় যেন বাংলাদেশেই আছি। প্রিমিয়াম এর কালিজিরা, চিনি গুড়া চাল ও তাদের বিভিন্ন ধরনের রান্নার মসলা এবং নাস্তা করার জন্য দেশি পরোটা অতুলনীয়। আর সন্ধ্যায় নাস্তার জন্য সিঙ্গারা, ডাল পুরি আর আলুপুরি’র কথা না বললেই নয়। প্রিমিয়ামের এই পণ্যগুলো যেন দেশে না থাকার অভাব পূরণ করে।
ছুটির দিনে বাজার করতে আসা আরো একজন প্রবাসী বাঙালি শাকিল তায়েব জানালেন, আমি পরিবার নিয়ে কানাডায় নতুন এসেছি। কিন্তু গ্রোসারি দোকানগুলোতে আসলে মনে হয় না যে, আমরা কানাডায় এসেছি। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি এসব পণ্য দেখে আমরা রীতিমতো অভিভূত।
প্রিমিয়াম কোম্পানির স্বত্বাধিকারী শেখ আতিকুল ইসলাম কলিন্স মিডিয়াকে বললেন, আমাদের প্রিমিয়াম কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে কানাডার বিভিন্ন শহরে পণ্য সরবরাহ করে চলেছি। আমরা শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সর্বদাই চেষ্টা করে চলেছি কিভাবে গুণগতমান বজায় রেখে পণ্য সামগ্রী ক্রেতা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে তাদের সেবা দেওয়া যায়।
ক্রেতা সন্তুষ্টিই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। প্রবাসী বাঙ্গালীদের ভালবাসায় আমরা সিক্ত।
গ্রোসারি স্টোরগুলোতে বাজার করতে আসা প্রবাসী বাঙালিরা বাংলাদেশি কোম্পানির ও পণ্যের ভূয়সী প্রশংসা করলেন।
এনএইচ