অশান্ত মণিপুর : মন্ত্রীর বাসভবনে বোমা বিস্ফোরণ
Share on:
কুকি ও মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে যে উত্তেজনা চলছে তার জেরে নতুন করে হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুরে।
শনিবার রাতে উখরুলের হামলেইখং এলাকায় রাজ্যের পশুপালন ও পরিবহন মন্ত্রী খাশিম ভাসুমের বাসভবনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। যখন বিস্ফোরণটি ঘটে, তখন ক্ষমতাসীন বিজেপির জোট অংশীদার নাগা পিপলস ফ্রন্ট (এনপিএফ) এর মন্ত্রী খাশিম তার বাসভবনে উপস্থিত ছিলেন না।
উখরুল থানা পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। কোনো হতাহতের খবর এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি ইতিমধ্যেই অস্থির মণিপুরে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে, রাজ্যে ২৪ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘট ঘোষণা করেছে JAC বা জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি।
মর্মান্তিক কাকওয়া নওরেম লেইকাই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় গঠিত জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি (জেএসি) শনিবার মধ্যরাত থেকে ২৪ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। কাকওয়াতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কারণ রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স (RIMS) হাসপাতালে একটি মৃত শিশুর জন্মকে কেন্দ্র করে সিংজামেই থানায় হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। তাদের অভিযোগ , শিশুটির মা সঞ্জিতা দেবীর বাড়ির কাছে পুলিশের টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের জেরে তার গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়।
১১ সেপ্টেম্বর রাতে কাকওয়াতে তার বাড়ি থেকে মাত্র ১০ ফুট দূরে একটি টিয়ার গ্যাসের ক্যানিস্টার বিস্ফোরণের পরে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা সঞ্জিতা দেবী বিপজ্জনকভাবে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও চিকিৎসকরা তার অনাগত সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি। সঞ্জিতা আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে রয়েছেন।
অনাগত শিশুর মৃত্যু রাজ্য জুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে দিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা ইন্দো-মিয়ানমার হাইওয়ে সহ প্রধান সড়ক অবরোধ করে। বিক্ষোভকারী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। জনতা পুলিশের দিকে পাথর ছুঁড়েছে, জবাবে বিক্ষোভকারীদের দিকে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। অস্থিরতার জেরে সরকার অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে। একাধিক অ্যাম্বুলেন্সকে ভিড়ের মধ্যে দিয়ে চলাচল করতে দেখা গেলেও কোনও বিক্ষোভকারী আহত হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।
ইম্ফালে এমন একটি শহর যেখানে দুই দিন কিছুটা শান্তি বিরাজ করলেও নতুন করে আবার অশান্তি শুরু হয়। গত বছর ৩রা মে থেকে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীদুটির মধ্যে যে সহিংসতা শুরু হয়েছিল, তা গত বেশ কয়েকমাস ধরে একরকম বন্ধই ছিল। কিন্তু চলতি বছর সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকে আবারও সহিংসতা শুরু হয়। গত ১০ দিনে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে।
এমএইচ