ইবিতে ছাত্রী নির্যাতনের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি
Share on:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফুলপরী খাতুন নামে এক নবীন ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা মিলেছে। গতকাল রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি ও ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
রোববার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।
তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রীকে নির্যাতন ও ভিডিও ধারণের সত্যতা পাওয়া গেছে। নির্যাতনকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মোট ১১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন ও সঙ্গে শতাধিক পৃষ্ঠার সংযুক্তি জমা দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানান, প্রতিবেদনে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা শুনে তদন্ত কমিটির সদস্যরাও বিব্রত হয়েছেন। এমনকি নির্যাতনের কিছু চিত্রের বর্ণনার সময় কমিটির পুরুষ শিক্ষকদের বাইরে যেতে হয়েছে।
এদিকে হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পেয়েছে ছাত্রলীগও। ছাত্রলীগের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন গতকাল রোববার রাতে কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির এক সদস্য এ তথ্য জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির ওই সদস্য বলেন, আমরা ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তাতে ভুক্তভোগীর সঙ্গে সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, এর কিছুটা সত্যতা আমরা পেয়েছি। প্রায় ১১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এখন কেন্দ্রীয় কমিটি বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রতিবেদনের একটি কপি হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী হাইকোর্টে পাঠানো হয়েছে। আর একটি কপি রেজিস্ট্রারের কাছে আছে। উপাচার্যের নির্দেশনা পেলে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে রাত ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে বিবস্ত্র করে মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের পরদিন ভয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান ওই ছাত্রী।
নির্যাতনের অভিযোগ করে ভুক্তভোগী ছাত্রী গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপাচার্য। এতে আইন বিভাগের অধ্যাপক রেবা মন্ডলকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কমিটি ১৮ ফেব্রুয়ারি কার্যক্রম শুরু করে। ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার শেষে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করা হয়। এরপর গতকাল তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী ফুলপরীর বাড়ি পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার শিবপুরে গ্রামে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এমআই