ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোট আজ
Share on:
ফ্রান্সের নাগরিকরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে ভোট দিতে দিচ্ছেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বা মেরি লে পেন এই দুজন প্রার্থীর একজনকে তাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেবেন তারা।
রোববার (২৪ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। এর আগে ১০ এপ্রিল, অনুষ্ঠিত ভোটের প্রথম পর্বে ক্ষমতাসীন এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জয় পেয়েছেন।
ডান-বাম এবং মধ্যপন্থী মিলিয়ে প্রথম পর্বে ১২ জন প্রার্থী অংশ নেন। এমানয়েল ম্যাক্রোঁ ২৮ দশমিক ১ থেকে ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন প্রথম ধাপে। যেখানে লে পেন পেয়েছেন ২৩ দশমিক ৩ থেকে ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন জ্যা-লুক মেলেনচন, তিনি পেয়েছেন ২০ শতাংশ ভোট।
২০০২ সালের পর থেকে কোনো ফরাসি প্রেসিডেন্ট পরপর দুবার নির্বাচিত হননি। ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
প্রথম পর্বে জয় পেলেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর জন্য দ্বিতীয় পর্বে জয়ী হওয়া কঠিন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যদিও মতামত জরিপে এগিয়ে রয়েছেন এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জরিপ বলছে, দ্বিতীয় ধাপে এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা ৭৮ শতাংশ। ১৯৬৫ সালে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফ্রান্সে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছিলেন শার্ল দ্য গল। এবারে ম্যাক্রোঁর ভাগ্যে সেরকম কিছু ঘটে কিনা সেটাই দেখার অপেক্ষা।
ফ্রান্সের নির্বাচনে এবার যেসব ইস্যু সামনে এসেছে এবং দুই প্রধান নেতা যেসব প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম জনগণের দৈনন্দিন খরচের লাগাম টেনে ধরা। ডানপন্থী নেতা মেরি লে পেন তার প্রচারণায় এই বিষয়টির ওপর জোর দিয়েছেন।
এ ছাড়া হিজাব নিষিদ্ধে বদ্ধ পরিকর মেরি লে পেন। তার অন্যান্য বড় ধরনের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে সামাজিক আবাসন, ফরাসি নাগরিকদের জন্য তাদের চাকরি ও সামাজিক কল্যাণকে ‘জাতীয় অগ্রাধিকার’ দেওয়া।
অন্যদিকে, উদারপন্থী নেতা বর্তমান প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ভোটারদেরকে ‘আমরা সবাই’ এই স্লোগানের মধ্যে নিয়ে আসতে চাইছেন। এমানুয়েল ম্যাক্রো প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, জ্বালানি খাতে খরচ নাগালের ভেতরে রাখার জন্য তার সরকার ইতোমধ্যে কোটি কোটি ইউরো খরচ করেছে।
এছাড়া তিনি চাকরিদাতাদের প্রস্তাব দিয়েছেন তাদের কর্মীদের ৬০০০ ইউরো পর্যন্ত বোনাস হিসেবে দেওয়ার জন্য। তিনি শিক্ষকদের বেতন বাড়াতে চান এবং টিভি লাইসেন্স ফি বাতিল করতেও প্রস্তুত।
এ ছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার কথা বলেছেন ম্যাক্রোঁ। তিনি এটাও দাবি করেন যে, তার সময়ে অপরাধ কমেছে দেশটিতে। ফ্রান্সে কয়েক বছর ধরে হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে। ফলে ভোটারদের কাছে নিরাপত্তা ইস্যুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ফ্রান্সে কয়েক বছর ধরে সন্ত্রাসী হামলা বেড়ে যাওয়ার পর এমানুয়েল ম্যাক্রোঁও ধর্মীয় ইস্যুতে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। যদিও সম্প্রতি টেলিভিশন বিতর্কে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সতর্ক করে বলেছেন, লে পেন নির্বাচিত হলে দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে।
কারণ তিনি ক্ষমতায় এলে হিজাব বন্ধের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন। বিতর্ক চলাকালে লে পেন বিতর্কিত পরিকল্পনা হিজাব নিষিদ্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে হিজাব মুসলিমদের চাপিয়ে দেওয়া বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে আমার যুদ্ধ ইসলামের বিরুদ্ধে নয়। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।
এইচএন