tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৪৮ পিএম

২৯ বছর ক্ষমতায় থেকে তারা দেশেকে কিছুই দিতে পারেনি : প্রধানমন্ত্রী


17-dp-thied-tarminal-20231007123853

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২৯ বছর যারা ক্ষতমায় ছিলেন তারা দেশের মানুষকে কিছুই দিয়ে যেতে পারেননি। আমরা এ দেশের মানুষকে সব দিয়েছি। আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দেখি বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজ ছিল না, পার্কিং ছিল না।


শনিবার (৭ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকারে আসি তখন আমাদের বিমানবন্দরের কোনো বোডিং ব্রিজ ছিল না, পার্কিং ব্যবস্থা ছিল না, কিছুই ছিল না। আমরা সরকারে এসে বিমানবন্দরের উন্নয়নের উদ্যোগ নিই। চট্টগ্রাম ও সিলেট, এ দুই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও আমরা নির্মাণ করি। সঙ্গে শাহজালাল বিমানবন্দরের উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহণ করি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল, এ সময়ে বিমানবন্দরের উন্নয়নের যাত্রা শুরু হয়। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যদি পারেন তাহলে ১৯৯৬ সালের আগ পর্যন্ত কী উন্নয়ন হয়েছিল, সেটি একটু দেখবেন।

‘যোগাযোগ ব্যবস্থা মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একান্ত অপরিহার্য। আধুনিক যুগের নৌপথ, সড়কপথ ও রেলপথের সঙ্গে সঙ্গে আকাশ-পথও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে, বিদেশের সঙ্গে আমাদের যে যোগাযোগ, সেই যোগাযোগের মূল বাহন হচ্ছে বিমান। অর্থাৎ আকাশযাত্রাটা হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এটিকে গুরুত্ব দিই।’

05-dp-thied-tarminal-20231007123837

সরকার-প্রধান বলেন, আমাদের বিমানবন্দর যাতে আরও আধুনিক এবং এতে আরও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করা যায়, সেজন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। কারণ, আমাদের দেশ থেকে যেয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা বসবাস করেন। তারা বিভিন্ন দেশে কাজ করেন। আমাদের রেমিট্যান্স পাঠান। তারাও যাতায়াত করে। তাদের সুবিধাটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।

এর আগে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এলাকায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় দলীয় দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে সঙ্গে মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানানো হয়। পরে তিনি অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত টার্মিনাল-৩ এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন।

03-dp-thied-tarminal-20231007113217

অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমানসহ বেবিচক ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (বেবিচক) এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এমডি শফিউল আজিম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীসহ অনেকেই উপস্থিত রয়েছেন।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্র জানায়, প্রকল্পের ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ উদ্বোধনের পর করা হবে। আগামী বছরের ডিসেম্বরের দিকে টার্মিনাল ব্যবহারের সুযোগ পাবেন যাত্রীরা।

04-dp-thied-tarminal-20231007113244

তথ্যমতে, দেশের প্রধান বিমানবন্দরের পুরোনো দুটি টার্মিনালের আয়তন ১ লাখ বর্গমিটার। আর তৃতীয় টার্মিনাল তৈরি হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারজুড়ে। নতুন এই টার্মিনালে একসঙ্গে পার্ক করা যাবে ৩৭টি উড়োজাহাজ, পুরোনো দুটিতে করা যায় ২৯টি। থাকছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ এয়ারবাস এ-৩৮০ এর উপযোগী দুইটিসহ মোট ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ।

নতুন এ টার্মিনালে রয়েছে অত্যাধুনিক ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট। স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট নিয়ন্ত্রণ সুবিধাসহ বহির্গমন ও আগমনী ইমিগ্রেশন কাউন্টার ১২৮টি। নিরাপত্তা নিশ্চিতে থাকবে ৪০টি কেবিন এক্সরে মেশিন, ২৭টি ব্যাগেজ ও ১১টি বডি স্ক্যানার। বহির্গমনের জন্য সেলফ চেক-ইন কাউন্টারসহ মোট কাউন্টার ১১৫টি। ১৪টি স্পটে থাকবে ডিউটি ফ্রি শপ, সুপরিসর লাউঞ্জ ও বাণিজ্যিক স্পেস।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, অটোমেটিক চেক হবে চারটি লেয়ারে। এখানে যাত্রীর ব্যাগ দেখার জন্য খোলা লাগবে না। যদি কোনো সন্দেহ হয় তাহলে চার লেভেলে ব্যাগগুলো স্ক্যান হবে।

17-dp-thied-tarminal-20231007123853

সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে উড়োজাহাজ ও রানওয়েতে চলমান যানবহানের অবস্থান নির্ভুলভাবে নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণের সুবিধা রাখা হয়েছে। বহুতল পার্কিংয়ে একসঙ্গে রাখা যাবে ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি। পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য কার্গো টার্মিনালের আয়তন ৩৩ হাজার বর্গমিটার। যেখানে পুরো প্রক্রিয়া চলবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে।

উল্লোখ্য, শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর। সে সময় এর নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে আরও ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের আকার দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির নির্মাণ শুরু হয়।

প্রকল্পটির নির্মাণব্যয়ের বেশির ভাগ আসছে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকার কাছ থেকে। সংস্থাটি ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। আর বাকি ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

এনএইচ