কারও জমি ৬০ বিঘার ওপরে গেলে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে: ভূমিমন্ত্রী
Share on:
বাংলাদেশে কেউ ৬০ বিঘার বেশি জমির মালিক হতে পারবে না উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন তিন ফসলি জমিতে কোনো স্থাপনাও করা যাবে না এবং দুই ফসলি জমিতেও স্থাপনা নির্মাণে নিরুৎসাহিত করা হবে।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলের ঢাকা চেম্বার ভবনে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন। ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণ ও দেশের টেকসই নগরায়ণবিষয়ক এই সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আগামী সংসদ অধিবেশনে ভূমি অপরাধ আইন, ভূমি পুনর্গঠন, সংস্কারসহ আমি তিনটা বিল উপস্থাপন করব। আশা করি, অক্টোবরে এসব পাস করাতে পারব।
তিন ফসলি জমিতে স্থাপনা করতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পরিষ্কার নির্দেশনা আছে, তিন ফসলি জমিতে কোনো স্থাপনা আমরা করতে দেব না। তিন ফসলি জমিতে স্থাপনার এটার (আইন পাস হলে) মাধ্যমে বন্ধ হয়ে যাবে। আর দুই ফসলি জমিতে স্থাপনা করার ক্ষেত্রেও নিরুৎসাহিত করছি।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, কারও জমি ৬০ বিঘার ওপরে গেলে আমাদের মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে। এ ছাড়া পারবে না। যুক্তি দেখাতে হবে, কী কারণে ৬০ বিঘার বেশি।
এক ব্যক্তির ৬০ বিঘার বেশি জমির মালিকানা কেন ঠেকানো হবে, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, দেখা গেল, আপনি চট্টগ্রামে ৬০ বিঘা জমি কিনলেন, আবার রংপুরে ৬০ বিঘা নিচ্ছেন। এটা আর হবে না। আমরা সে জন্য সিস্টেম উন্নয়ন করে দিচ্ছি। সেখানে থাকবে আপনার নামে কতটুকু জমি আছে।
আপনি দেশের যে জায়গায় জমি কিনতে যান, সেখানেই ওইটা দেখা যাবে। কিনতে গেলেই বলবে, আপনার নামে ইতিমধ্যে ৬০ বিঘা জমি আছে।
কৃষি জমি প্রতিবছর কমছে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখতে হবে বলে মনে করেন ভূমিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের কিছু কিছু পকেট কৃষিভিত্তিক অঞ্চল হিসেবে রাখতে হবে। যেমন নওগাঁ, উত্তরবঙ্গের কিছু কিছু পকেট আছে। আমরা শুধু ইন্ডাস্ট্রি করতেই থাকব, তাহলে খাদ্য উৎপাদনের কী হবে? ফলে এখানে কোনো শিল্প হতে পারবে না। তবে সেখানে কৃষিভিত্তিক শিল্প হতে পারবে, যদিও এ ধরনের শিল্প দেশে এখনো চালু হয়নি।
সেমিনারের সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমাদের সবকিছু ঢাকা কেন্দ্রিক, এটাই বাস্তবতা, তবে এটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, সরকার ঢাকার বাইরেও অবকাঠামোখাতে উন্নয়ন করেছে এবং আশা প্রকাশ করেন এর সুফল দেশবাসী সহসাই পাবেন।
গৃহায় ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, ড্যাপের পুরোপুরি সংশোধন না করে, ব্যবসায়ীদের যেন হয়রানি না করা হয়, সে ব্যাপারে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তিনি বলেন, ফ্ল্যাট ও জমি রেজিস্ট্রেশনে করারোপের কারণে জমি ও ফ্ল্যাট বিক্রি বেশ কমে গেছে, তবে বিষয়টি নিয়ে এনবিআর কাজ করছে, আশাকরি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সচিব বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরতে কমপক্ষে ২৫শতাংশ কৃষি জমি সুরক্ষা নিশ্চিত করার কোন বিকল্প নেই।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর নগর আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে তিনি অবকাঠামো উন্নয়নে মান নিশ্চিত করতে হবে, যেন এর মাধ্যমে পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।
এন