tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ৩১ জুলাই ২০২৪, ১৮:০৩ পিএম

সারাদেশে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতেও পুলিশের হামলা


Screenshot 2024-07-31 180130

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সারাদেশে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামলে তাদের ওপর হামলা করে পুলিশ।


পরে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ সময় অন্তত ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে।

বুধবার (৩১ জুলাই) নতুন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে রাজপথে নামেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় সারাদেশে জেলায় জেলায় আদালতের সামনে অবস্থান নেন তারা। এ ছাড়া ক্যাম্পাস ও রাজপথেও নামেন আন্দোলনকারীরা।

এর আগে সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর চালানো গণহত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, গুম ও খুনের প্রতিবাদে এ কর্মসূচির ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা; তারা দোয়েল চত্বরে অবস্থান করতে থাকনে। এ সময় নয় দফা দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের নতুন এই কর্মসূচিতে সংহতি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ। তারা জানান, যৌক্তিক আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবেন তারা।

চট্টগ্রামে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ পদযাত্রা কর্মসূচিতে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের কোতোয়ালির লালদীঘির পাড় এলাকার জেলা পরিষদ ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করতে থাকেন তারা।

পরে আইনজীবীদের একপক্ষ আন্দোলনে যোগ দিলে তাদের সহায়তায় আদালত চত্বরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এরপর পুলিশ সড়ক থেকে সরে আসতে আধাঘণ্টার আলটিমেটাম দিলে আইনজীবীদের একটি দল মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেয়। পরে শিক্ষার্থী এবং আইনজীবীদের সম্মিলিত দলটি মিছিল নিয়ে আইনজীবী ভবনের সামনে অবস্থান নেয়।

নতুন কর্মসূচি বাস্তবায়নে খুলনার রয়্যাল মোড় এলাকায় আন্দোলনকারীদের জড়ো হতে দেয়নি পুলিশ। বরং আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে আটক করা হয় ৩০ জনকে। এ ছাড়া দিনাজপুরে শহীদ মিনার চত্বরে বৈষম্যবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালীন ১০ জনকে আটক হয়।

‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনে বরিশালের সদর রোডে প্রথমে জড়ো হন আন্দোলনরতরা। বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশের বাধা অতিক্রম করেই এগিয়ে যান আন্দোলনরতরা। শেষমেশ বাধ্য হয়ে তাদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

পরবর্তীতে সদর রোড থেকে কাকলী সিনেমা হলের সামনে আবারও জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। জাতিসংঘের মাধ্যমে তদন্তপূর্বক বিচারের দাবি এবং ছাত্রসমাজের নয় দফা দাবিও তুলে ধরেন তারা। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থান নিয়ে লাঠিচার্জ শুরু করে। ধরে নেয়ার চেষ্টা করা হলে আন্দোলনরতরা একজোট হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। পুলিশের বাধা অতিক্রম করেই পরবর্তীতে কোর্ট চত্বরে অবস্থান নেন তারা। এ সময় পুলিশের পাশাপাশি রাজপথে বিজিবিও অবস্থান নেয়। এ ঘটনায় অনন্ত ১০ জন আহত হয়েছেন।

সিলেটে মার্চ ফর জাস্টিসে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে নগরীর সুবিদ বাজার পয়েন্টে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনে এগিয়ে গেলে পেছন থেকে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ শুরু করে। এতে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

যশোরেও নয় দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলের চেষ্টা করলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরবর্তীতে আন্দোলনকারীরা আবারও জড়ো হয়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হতে থাকে। দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। এ সময় কয়েকজনকে আটক করা হলে পুলিশের দাবি, তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে।

কর্মসূচিকে ঘিরে ঠাকুরগাঁওয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। আন্দোলনকারীরা জেলা শহরের একাত্তরের অপরাজেয় চত্বরে জড়ো হলে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। পরে আন্দোলনকারীরা তা ভেঙে মূল শহরের দিকে গিয়ে আদালত চত্বরে অবস্থান নেন।

সেখানেও ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ বাধা দিলে তা ভেঙে ফেলা হয়। এতে মারমুখী অবস্থানে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময় কয়েকজন আহত হন। পরে আদালত চত্বরের সামনের সড়কেই অবস্থান নিয়ে দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।

এসএম