tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
অর্থনীতি প্রকাশনার সময়: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:৩৬ এএম

পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে


RMG.jpg

করোনা মহামারীর ভয়াবহতার মধ্যে অর্থনৈতিক ধাক্কা মোকাবেলা করে দেশের তৈরি পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। রপ্তানি আয়ে নতুন করে আশা জেগে উঠেছে। ফলে নতুন বছর ২০২২ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৪৮৫ কোটি ৩ লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ।


করোনা মহামারীর ভয়াবহতার মধ্যে অর্থনৈতিক ধাক্কা মোকাবেলা করে দেশের তৈরি পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। রপ্তানি আয়ে নতুন করে আশা জেগে উঠেছে। ফলে নতুন বছর ২০২২ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৪৮৫ কোটি ৩ লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ।

গত বছরের (২০২১) একই সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩৪৩ কোটি ৬৭ লাখ ৯ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ পূর্বের বছরের তুলনায় রপ্তানি বেড়েছে ১৪১ কোটি ৩৫ লাখ ৮ হাজার মার্কিন ডলার। যা শতাংশের হিসেবে বৃদ্ধি পেয়েছে ৪১ দশমিক ১৩ শতাংশ।

গতকাল বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা যায়।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০৫ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। সেখানে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৮৫ কোটি ৩ লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ ৮০ কোটি ডলার বেশি রপ্তানি আয় হয়েছে। করোনা নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের মাসে যা শতাংশের হিসেবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯ শতাংশের বেশি।

ইপিবির পরিসংখ্যান আরও বলছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত বিশেষত পোশাক, তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানি বেড়েছে। এছাড়া চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি, প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফেরার কারণে সার্বিকভাবে পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

পণ্যের ক্যাটাগরি অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসে নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানিতে ৩২.৮৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। অন্যদিকে ওভেন পোশাকের রপ্তানি ২৭.২৩ শতাংশ বেড়েছে। ফলে সকল পণ্যের রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

রপ্তানি তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, পোশাক খাতের রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ঘুরে দাঁড়ানোর ধারা অব্যাহত রয়েছে। তবে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল মনে করেন, সামনে এই ধারা অব্যাহত রাখতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

তিনি বলেন, ২০২০-২১ সালের জুলাই-জানুয়ারি মাসের রপ্তানির তুলনায় ২০২১-২২ সালের একই মাসে রপ্তানি ৩০.৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল। আর জানুয়ারিতে তা কিছুটা বেড়ে ৪.০৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

প্রোডাক্ট ক্যাটাগরি অনুযায়ী, জুলাই-জানুয়ারি সময়ে নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানিতে ৩২.৮৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। অপরদিকে ওভেন পোশাকের রপ্তানি ২৭.২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ফলে সকল পণ্যের রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে। তবে রপ্তানির এই বৃদ্ধি করোনা পরবর্তী বাজারের পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট।

পোশাক খাতের রপ্তানির ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা গেলেও কিন্তু অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বিভিন্ন কাঁচামাল যেমন টেক্সটাইল, পণ্য জাহাজীকরণ খরচ, রং ও রাসায়নিক দ্রব্যের বাজার অনেক বেড়েছে। কিন্তু পণ্য উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির অনুপাতে পোশাকের দাম সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বাড়ছে না।

এছাড়াও, পোশাক রপ্তানির প্রধান বাজারগুলোতে ওমিক্রন সংক্রমণ ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই ভবিষ্যতের বাজারের পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন। আগামীতে সংক্রমণের গতি প্রকৃতির ওপর নির্ভর করবে এই ধারা কতটা অব্যাহত থাকে। তবে সুযোগ আরও বেশি কাজে লাগাতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এখন সাপ্লাই চেইন ঠিক রেখে সক্ষমতা বাড়ানো।

ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬.৬৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৪ কোটি ৪৯ লাখ ৯ হাজার ডলার।

প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩৮.৭ শতাংশ। সাত মাসে এ খাতে আয় হয়েছে ৮ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। আলোচিত সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি আয়েও প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

এ সময় চামড়া খাত থেকে এসেছে ৬৮ কোটি ২৭ লাখ ডলার। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৯.৬৬ শতাংশ বেশি।

তবে আলোচিত সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে। ডিসেম্বরের শেষে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে ৬৯ কো‌টি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯.১৩ শতাংশ কম।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জন্য ৪ হাজার ৩৫০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।

সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ২ হাজার ৯৫৪ কোটি ৮৯ লাখ ২ হাজার মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯.৭৩ শতাংশ বেশি।

গত ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি করে ৩ হাজার ৮৭৬ কোটি ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে প্রথম সাত মাসে আয় করেছিল ২ হাজার ২৬৭ কোটি ২ লাখ ৪ হাজার মার্কিন ডলার।

এইচএন