tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ২৬ জানুয়ারী ২০২৪, ১৪:৫৯ পিএম

ক্ষুধায় মারা যাওয়া মানুষেরা ‘ইডিয়ট’: উগান্ডার প্রতিমন্ত্রী


henry-okello-oryem-20240126125409

ক্ষুধায় মারা যাওয়া মানুষদের ‘ইডিয়ট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন পূর্ব আফ্রিকার দারিদ্র্যপীড়িত দেশ উগান্ডার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হেনরি ওকেলো ওরিয়েম। তার দাবি, উগান্ডায় অনুকূল জলবায়ু এবং উর্বর জমি রয়েছে। আর তাই ক্ষুধায় মারা যাওয়া মানুষেরা ‘বেকুব’।


অবশ্য এই মন্তব্যের জেরে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ওকেলো ওরিয়েম। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উগান্ডার সরকারের একজন মন্ত্রী তার দেশে যারা ক্ষুধায় মারা গেছে তাদের ‘বেকুব’ বলে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এছাড়া অনেকে হেনরি ওকেলো ওরিয়েমের করা এই মন্তব্যকে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে করছেন।

বিবিসি বলছে, ২০২২ সালে উত্তর-পূর্ব উগান্ডায় ২২০০ জনেরও বেশি মানুষ অনাহারে এবং ক্ষুধা-সম্পর্কিত অসুস্থতায় মারা গেছে বলে সরকারি মানবাধিকার সংস্থার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। কিন্তু ওরিয়েম যুক্তি দিয়ে বলেছেন, উগান্ডার অনুকূল জলবায়ু এবং উর্বর জমির কারণে মানুষকে নিজের জন্য খাদ্য উৎপাদন করতে পারা উচিত।

টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি উগান্ডাকে দেশটির এই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ওই ব্যক্তি কেবল একজন বোকা, সত্যিকারের বোকা, যে উগান্ডায় ক্ষুধায় মারা যেতে পারে।’

তার ভাষায়, ‘আপনি যদি কঠোর পরিশ্রম করেন, (তাহলে আপনার জন্য) উগান্ডায় জমি আছে। জলবায়ু পরিবর্তন সত্ত্বেও জলবায়ু ঠিক আছে। আপনি যদি সকালে বের হয়ে দ্বিগুণ প্রচেষ্টা চালান, চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করেন এবং সঠিকভাবে বীজ রোপণ করেন এবং শেষে নিজের গাছের রক্ষণাবেক্ষণ করেন, তাহলে নিশ্চয়ই কেউ একজন তার খাদ্য জোগাতে ব্যর্থ হয় কী করে?’

বিবিসি বলছে, অনাহার অনেক লোকের প্রাণহানির কারণ হওয়ার পাশাপাশি দেশটির উত্তর-পূর্বে খাদ্য ঘাটতি প্রায় ৫ লাখ মানুষকে ‘তীব্র ক্ষুধা’তে ফেলেছে বলে উগান্ডা মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এদিকে মন্ত্রীর এই মন্তব্যে দেশটিতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কারামোজা অঞ্চলের অংশ চেকউই কাউন্টির আইনপ্রণেতা মোসেস আলেপার বিবিসিকে বলেছেন, ওরিয়েমের মতামত ‘সঠিক নয়’ এবং ‘এই দেশে কী হচ্ছে তা সম্পর্কে অবগত একজন মন্ত্রীর কাছ থেকে এমন মন্তব্য আসাটা দুর্ভাগ্যজনক’।

তিনি বলেন, ‘আমি কারামোজার সবচেয়ে উৎপাদনশীল অংশগুলোর একটি থেকে এসেছি যেখানে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয় এবং আমরা খাদ্য উৎপাদন করি। কিন্তু এমন কিছু পরিস্থিতি আছে যখন আবহাওয়া আমাদের ব্যর্থ করে দেয় এবং অবশ্যই তখন আমরা খাদ্য পেতে ব্যর্থ হই। এরপর সাধারণত লোকেরা দুর্ভিক্ষের শিকার হয়। এবং অবশেষে অনাহারে থাকতে হয়।’

আলেপার আরও বলেন, এই অঞ্চলে ক্ষুধা ‘এমন অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি করে যা প্রায়শই মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ থাকে। ঠিক যেমন ভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের ঘটনা ঘটছে।

উগান্ডার বিশিষ্ট লেখক এবং সাংবাদিক চার্লস ওনিয়াঙ্গো-ওবোও তার দেশের প্রতিমন্ত্রী ওরিয়েমকে আক্রমণ করে বলেছেন, ‘উগান্ডার মতো দেশে ক্ষুধা যে সমস্যা’ তা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।

এনএইচ