মানুষের মমত্ববোধ ও দায়বদ্ধতা থেকে আমরা ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ছুটে এসেছি : নূরুল ইসলাম বুলবুল
Share on:
ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে মানবিক সহযোগিতা প্রদানকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মু. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমানের নির্দেশনায় এবং মানুষের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ ও দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে গণমানুষের সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের পক্ষ থেকে আমরা আপনাদের কাছে ছুটে এসেছি।
বৃহস্পতিবার ( ৩০ মে ) জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে পটুয়াখালী জেলার বাউফল, দশমিনা ও গলাচিপা উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে নগদ অর্থ, ঘর নির্মাণের জন্য ঢেউটিন সহ মানবিক সহযোগিতা প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে উপকূলীয় ১৯টি জেলায় ১৬ জন নিহত সহ প্রায় ৩৮ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে হাজার হাজার মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গিয়েছে, বিপুল পরিমাণ হাঁস-মুরগি, গরু-মহিষ-ছাগল পানিতে ভেসে গিয়েছে, গাছপালা উপড়ে পড়েছে, অসংখ্য জমির উঠতি ফসল নষ্ট হয়েছে, প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ক্ষয়ক্ষতি সহজে পূরনীয় নয়। আমি নিহতদের মাগফেরাত কামনা ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করছি তিনি যেন অতি দ্রুত আমাদের এই ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার তৌফিক দেন। একইসাথে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মানবিক সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য সরকারের পাশাপাশি স্বচ্ছল ব্যক্তি, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ঘুর্ণিঝড়, বন্যা, মহামারী, অগ্নিকা-ের মতো ভয়াবহ গজব সমুহ আমাদের ওপর চেপে বসেছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদেরকে মাঝে মধ্যে বিপদ ও দুর্যোগে ফেলেন, আবার তিনিই আমাদেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত আমাদেরকে পরীক্ষা করে থাকেন। কোন বিপদই স্থায়ী থাকেনা। আল্লাহ তা’য়ালার পরীক্ষা শেষ হলে বিপদও কেটে যায়। তাই এ অবস্থায় আমাদেরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে বেশি করে সাহায্য চাইতে হবে। দুর্যোগের এই কঠিন পরিস্থিতিতে দুর্গত মানুষের পাশে সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়ানোর দায়িত্ব মূলত সরকারের। অথচ এক্ষেত্রে সরকার বরাবরই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। এই সরকার জনগণের ভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে নাই। ফলে এদেশের মানুষের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শবাদী সংগঠন হিসেবে বরাবরই জনগণের যেকোন বিপদ-আপদে সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর এই গণমুখী প্রয়াস অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, সিলেট, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম সহ দেশের যে কোন প্রান্তে, যে কোন দুর্যোগে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের বিপদে আপদে সবার আগে ছুটে যাচ্ছেন আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান। এমনকি গত ২ দিনে তিনি ঘুর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে ছুটে এসে মানবিক সহায়তা প্রদান করেন। অথচ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে দীর্ঘদিন তাকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রেখেছিলো। একইভাবে বাউফলের কৃতি সন্তান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এলাকার মানুষের সুখে দুঃখে সবার আগে ছুটে আসে। বাউফলের যে কোন দুর্যোগে ব্যাক্তি উদ্যোগে মানবিক সহায়তা নিয়ে সবার আগে হাজির হয় অথচ সরকার তাকেও সম্পুর্ন মিথ্যা মামলায় সাজা প্রদান করেছে। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, কারারুদ্ধ করে, মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করা যাবেনা। তিনি আগামী দিনের কাঙ্ক্ষিত বাউফল গড়তে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পাশে থাকার জন্য উদাত্ত আহবান জানান।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ঘুর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বাউফল নদী প্লাবিত এলাকা হওয়ায় জলোচ্ছাসে ইতোমধ্যেই অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে। আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই, প্রাকৃতিক এই গজব থেকে তিনি যেন বাউফল সহ পুরো বাংলাদেশকে হেফাজত করেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ হতে আমরা এই দুর্যোগময় পরিস্থিতি উত্তরণে আমাদের সীমিত সামর্থ্যের আলোকে বাউফল সহ দেশের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে রয়েছি। তিনি দেশের সামর্থ্যবান ও বিত্তশালীদের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য উদাত্ত আহবান জানান।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলোয়ার হোসাইন ও মুহাম্মদ কামাল হোসাইন, পটুয়াখালী জেলা সেক্রেটারি এবিএম সাইফুল্লাহ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শামসুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, বাউফল উপজেলা আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য শাহীন আহমদ খান ও মেসবাহ উদ্দিন সাঈদ। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি অহিদুল ইসলাম আকিক, বরিশাল মহানগরী সভাপতি রিয়াজ আহমেদ, বরিশাল জেলা পশ্চিমের সভাপতি আল আমীন খান, পটুয়াখালী জেলা সভাপতি মাহদী হাসান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
প্রেসবিজ্ঞপ্তি//এমএইচ