পিটিআই নাকি অন্য দল, পাকিস্তানে সরকার গঠন করবে কারা
Share on:
নানা অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন। এদিন দেশটির জাতীয় পরিষদের ২৬৬টি আসনের মধ্যে ২৬৫টি আসনে ভোট হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২৪৫টি আসনের ফলাফল জানা গেছে। সেখানে দেখা গেছে, ৯৮টি আসনে জয়ী হয়েছেন ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) স্বতন্ত্র প্রার্থীরা, ৬৯টি আসন পেয়েছে নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫১টি আসন।
এতে দেখা যাচ্ছে এবারের নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে যে দলই সরকার গঠন করুক না কেন তাদের জোট গঠন করতে হবে। অর্থাৎ পাকিস্তানে জোট সরকার ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে। তবে কোন দলের নেতৃত্ব জোট গঠিত হবে— এবং নির্বাচনে সর্বোচ্চ আসন পাওয়া পিটিআইয়ের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে জোট গঠন করা হবে কি না সেটি এখন দেখার বিষয়।
যদি আদালত এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে পিটিআইয়ের পক্ষে রায় দেন তাহলে নওয়াজের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসবে। তার সঙ্গে, কে প্রধানমন্ত্রী হবেন— সেটি নিয়ে নওয়াজ শরীফের পিমএমএলএন এবং বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপির মধ্যে বিভেদ দেখা যাবে
পাকিস্তানি সাংবাদিক কামাল হায়দার
পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাইঘাম খান কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে বলেছেন, “যে চিত্রটি দেখা যেতে পারে সেটি হলো একটি জোট সরকার। যেই জোটে পিটিআই ছাড়া বাকি রাজনৈতিক দলগুলো থাকবে। এতে থাকবে দেশটির দুই বড় দল পিপিপি এবং পিমএএলএন। সঙ্গে থাকবে এমকিউএম, জামাত-ই-ইসলামী ও অন্যান্যরা।
দ্বিতীয় চিত্র, যেটি হওয়ার সম্ভাবনা কম কিন্তু হতে পারে, সেটি হলো পিটিআইয়ের সঙ্গে পিপিপি যোগ দেবে এবং সরকার গঠন করবে।
এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক আরও জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বেশিরভাগ মানুষ পরবর্তী সরকারের বৈধতাকে বিশ্বাস করেন না ভোট কারচুপির অভিযোগের কারণে। আর এ বিষয়টি পাকিস্তানের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলবে।
তিনি বলেছেন, “রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পাকিস্তানে কয়েকদিনের জন্য থাকবে না।
অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে নওয়াজ শরীফের জোট গঠন সহজ হবে না
আলজাজিরার পাকিস্তান প্রতিনিধি, সাংবাদিক কামাল হায়দার বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের বার্তা হলো— তিনি চান পিপিপি তাদের সঙ্গে যোগ দিক এবং জোট সরকার গঠন করুক। যেমনটি তারা করেছিল ২০২২ সালের এপ্রিলে। ওই জোট গঠনের মাধ্যমে ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল তারা।
কিন্তু কী হবে— এ মুহূর্তে তা বলা কঠিন। পিটিআই কিছু জায়গায় ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছে এবং সেসব আসনের ফলাফল চ্যালেঞ্জ করেছে। যদি আদালত এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে পিটিআইয়ের পক্ষে রায় দেন তাহলে নওয়াজের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসবে। তার সঙ্গে, কে প্রধানমন্ত্রী হবেন— সেটি নিয়ে নওয়াজ শরীফের পিমএমএলএন এবং বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপির মধ্যে পার্থক্য দেখা যাবে। যদিও নওয়াজ একটি জোট গঠনের চেষ্টা চালাবেন। তবে বিষয়টি তার জন্য সহজ হবে না।
সূত্র: আলজাজিরা
এসএম