সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে জামায়াত : ডা. শফিকুর রহমান
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দির্ঘদিন যাবৎ সমাজে ন্যায় বিচার ও ইনসাফ বলে কিছুই ছিল না। দেশের মানুষ তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। জামায়াত সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আয়োজনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখন যারা ধরা পড়ছে তারা বলছে, এটা আমি নিজ থেকে করি নাই, অমুকের হুকুমে করেছি। আর যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন সবসময় বলা হতো- গাছটা এদিকে দুলছে, ওদিকে গাছের পাতা নড়ছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) দেখছেন। সব কিছুতেই উনার অনুমতি লাগবে, উনার নির্দেশনা লাগবে। শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, তাহলে তো আপনার লোকেরাই আপনাকে মাস্টারমাইন্ড এবং গডমাদার বানিয়েছে, আমরা বানাইনি।
শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, “আপনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।’ আপনার কথা যদি সত্যি হতো তাহলে ১৫ বছরের মাথায় আপনাদের এভাবে দেশ ছেড়ে পালাতে হতো না।”
জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবুল হাসেমের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সুজা উদ্দিন জোয়ার্দারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আগামীতে কেউ যেন আবার এদেশের মানুষের ওপর স্বৈরাচারী ব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে না পারে এ ব্যপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। কারা ক্ষমতায় যাবে আর কারা যাবে না ফায়সালা করবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।
জামায়াতের আমীর বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। তারা আওয়ামী বাকশালীদের হাত থেকে একটি বিধ্বস্ত দেশ পেয়েছে। দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও নির্বাচন কমিশন সংস্কারসহ দেশের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও সংশোধনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যৌক্তিক সময় প্রয়োজন। এই সময় দিতে দেশের মানুষ প্রস্তুত রয়েছে।
ছাত্র-জনতার ত্যাগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন। অনেকে অন্ধত্ব বরণ করেছেন। এসব বীর সংগ্রামীরা আমাদের আমানত। তাই যেকোনো সমস্যায় আমাদেরকে সম্মিলিতভাবে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তিনি সাম্প্রতিক আন্দোলনে শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং আহতদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং বিজয়ীদের মোবারকবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, এ দেশ আমাদের সবার। সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ মিলেমিশে সমান নাগরিক অধিকারের ভিত্তিতে একটি সুন্দর দেশ আমরা গড়ে তুলব।
বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চল পরিচালক জনাব মোবারক হোসাইন বলেন, “জামায়াতে ইসলামী সারাদেশের সকল শহীদ পরিবার ও আহতদের সাথে সাক্ষাত করে খোঁজ-খবর নিচ্ছে ও তাদের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেয়ার চেষ্টা করছে। তাদের চিকিৎসা সহযোগিতাসহ প্রয়োজনীয় দায়িত্ব নেয়ারও ঘোষণা দিয়েছে জামায়াত।”
এ সময় কুষ্টিয়া জেলার ১৫ জন শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং প্রত্যক পরিবারকে নগদ ২ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেন প্রধান অতিথি ডা. শফিকুর রহমান।
স্থানীয় আলাউদ্দিন নগর শিক্ষা পল্লী পার্ক অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন অঞ্চল টিম সদস্য খন্দকার এ কে এম আলী মুহসিন, ড. আলমগীর বিশ্বাস, আব্দুল মতিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসাইন ও শাহজাহান আলী মোল্লা, জেলা নায়েবে আমীর আব্দুল গফুর, জেলা ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় জামায়াতের অন্যান্য জেলা নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান শেষে আমীরে জামায়াত টিভি ও মিডিয়ার সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
এমএইচ