রসুনের গোড়া এক জায়গায়, বিএনপি-জামায়াত ইস্যুতে নানক
Share on:
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট থেকে জামায়াতে ইসলামীর বেরিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘বিএনপিকে ছেড়ে জামায়াত চলে গেছে, না জামায়াতকে ছেড়ে বিএনপি চলে গেছে, তা বোধগম্য নয়। আসলে রসুনের গোড়া এক জায়গায়।’
তিনি বলেন, ‘ওদের চরিত্র এক, ওদের লক্ষ্য এক। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে তারা মুছে ফেলতে চায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য।’
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রোববার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আওয়ামী লীগে ভোট দেওয়ার অপরাধে ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি নেতারা ভাইয়ের সামনে বোনকে ধর্ষণ করেছে, পিতার সামনে কন্যাকে ধর্ষণ করেছে। আমরা তো ইচ্ছে করলে গত সাড়ে ১৩ বছরে আপনাদেরকে পিষে দিতে পারতাম। কিন্তু, নেত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন বলেই আমাদেরকে সেটা করতে দেননি। করতে দেননি বলেই যারা আমাদেরকে রাজনৈতিক অফিসে ঢুকতে দেয় নাই, তারা আজকে গণতন্ত্রের কথা বলে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কথা বলতেই থাকে। তার পরেও বলে আমাদেরকে (বিএনপি) কথা বলতে দিচ্ছে না। এতটা নির্লজ্জ-বেহায়া! তাই, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আসুন, দেখুন কার জনপ্রিয়তা কত বেশি। জনগণ আগুনসন্ত্রাসের পক্ষে রায় দেবে, নাকি শেখ হাসিনার উন্নয়নের পক্ষে রায় দেবে। সেটি প্রমাণ হবে আগামী নির্বাচনে।’
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘এই প্রজন্ম ১৫ আগস্ট দেখেনি, এই প্রজন্ম ২১ আগস্ট দেখেনি, ১৭ আগস্ট সারাদেশে এক যুগে সিরিজ বোমা হামলা দেখেনি। এ প্রজন্ম জিয়াউর রহমানের অত্যাচার দেখেনি। এই প্রজন্ম হাওয়া ভবনের কর্তা দণ্ডিত পলাতক তারেক রহমানের রক্তের হোলি খেলা দেখেনি। এই তরুণ প্রজন্মকে বুঝতে হবে, সমাজের শত্রু কারা, দেশের স্বার্থবিরোধী কারা।’
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘দিন-রাত পরিশ্রম করে দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই, শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা এবং তাকে নিরাপদ রাখা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব এবং কর্তব্য।’
আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘বিএনপির বড় উইকেট পড়ে গেছে। জামায়াতে ইসলাম বলেছে, বিএনপির সাথে তারা আর নেই। বিএনপি নৈরাজ্য করে ক্ষমতায় আসতে পারবে না, নৈরাজ্য করলে ছাত্রলীগ বসে থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি গুমের নামে অনেকে নাটক করে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট ঢাকায় এলে মির্জা ফখরুল ভাবলেন, তাদের ক্ষমতায় বসাবে। তারা যখন বলছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সংকট নেই, তখন বিএনপির মুখ চুপসে গেছে।’
সভায় দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘দেশের অশুভ শক্তির বিষবৃক্ষ কারা, তাদেরকে চিহ্নিত করে প্রতিহত করতে হবে। কোনো ব্যর্থ রাজাকার অথবা কোনো খুনি যাতে দেশে আর একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্যই তরুণ প্রজন্মকে সতর্ক থাকতে হবে। আগামী লড়াই হবে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই। এ লড়াই আমাদের জিততে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ।
এইচএন