পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি
Share on:
পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং তার ছেলে পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হামজা শেহবাজের বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত চিনি দুর্নীতি ও অর্থপাচার মামলায় এখন পর্যন্ত দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে দেশটির আদালত।
মঙ্গলবার ( ১৪ জুন ) শেহবাজ শরিফ ও তার ছেলে হামজা শেহবাজের করা আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে এই আদেশ দিয়েছেন লাহোরের বিশেষ আদালত, যেখানে এই মামলার বিচারকাজ চলছে।
বিচারক মঙ্গলবার জানিয়েছেন, মামলার বাদিপক্ষ পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ইনভেস্টিগেটিভ এজেন্সি (এফআইএ) আসামিদের হয়রানি করার মনোভাব নিয়ে মামলা পরিচালনা করেছেন বলেও আদালতের পর্যবেক্ষণে এসেছে ।
অভিযোগে বলা হয়, ২০০৮ সালে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে আখ ক্রয়, চিনি উৎপাদন ও বিপণন প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি লোপাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে শেহবাজ শরিফ, তার দুই ছেলে ও এজাহারভূক্ত অন্যান্য আসামিদের। পাঞ্জাব প্রদেশের কয়েকজন চিনি কল মালিকও এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত।
এতে আরও বলা হয়, বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে শেহবাজের পরিবারের সদস্যদের বেনামে ২৮টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেসব ব্যাংকে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে এ অর্থ। রাজনীতির পাশপাশি চিনির ব্যবসা রয়েছে পাকিস্তানের শরিফ পরিবারের। আল-আরাবিয়া মিলস নামে একাধিক চিনির কারখানা রয়েছে এই পরিবারের।
শেহবাজ শরিফ অবশ্য বরাবরই তার ও তার ছেলের বিরুদ্ধে আনা এই দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন।
গত ৪ জুন শেহবাজ শরিফসহ মামলার আসামিদের ‘যে কোনো সময়’ গ্রেপ্তারের আদেশ চেয়ে আবেদন করেছিল এফআইএ।
আদালত মঙ্গলবারের আগাম জামিন আবেদন শুনানিতে বলেন, ‘দুর্নীতি, কর্তৃপক্ষের ক্ষমতার অপব্যবহার, মুদ্রাপাচার প্রভৃতির যে অভিযোগ এই মামলায় আনা হয়েছে, সেসব নিয়ে আরও বিস্তারিত তদন্ত প্রয়োজন বলে মনে করে আদালত।
কারণ, মামলার এই পর্যায়ে এসেও এখন পর্যন্ত অভিযোগের পক্ষে কোনো অকাট্য প্রমাণ হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছে বাদিপক্ষ।’
আসামিদের হয়রানির প্রসঙ্গে আদালত বলেন, ‘এই অভিযোগে প্রথমে ন্যাশনাল অ্যাকউন্টিবিলিটি ব্যুরো (ন্যাব-পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ও সাংবিধানিক দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা) অভিযুক্তদের হেফাজতে নিয়েছিল।
গত ২০২১ সালের ডিসেম্বেরে অভিযুক্তরা ন্যাবের হেফাজত থেকে ছাড়া পাওয়ার পর দুইবার তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এফআইএ— ২০২১ সালের ১৮ ডিসেম্বর ও ২০২২ সালের ৮ জানুয়ারি। তারপর গত ৫ মাসে এজারভুক্ত কোনো আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি এফাআইএ।’
‘আদালতের পর্যবেক্ষণ বলছে, বাদিপক্ষ ন্যাবের অনুসন্ধান থেকে মুক্তিলাভের পর পরই তাদের পুনরায় গ্রেপ্তার করার পরিকল্পনা নিয়ে মামলা পরিচালনা করছিল আদালত।’
‘আদালত মনে করে, অভিযুক্তদের হয়রানির উদ্দেশেই এ পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোনো হচ্ছিল।’ সূত্র: জিইও টিভি।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ১ হাজার ৬০০ কোটি রুপি বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। ২০২০ সালে এ বিষয়ে লাহোরের বিশেষ আদালতে শেহবাজ, তার দুই ছেলে হামজা ও সুলেমানসহ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এফআইএ।
এইচএন