সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ৯৬৬ মেগাওয়াট লোডশেডিং
Share on:
গ্রীষ্মের তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার (২১ এপ্রিল) ছিল ৯৬৬ মেগাওয়াট লোডশেডিং। এদিন দেশের কিছু অংশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছেছে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) তথ্য অনুযায়ী, শনিবার দিবাগত রাত ১টা পর্যন্ত ৯৬৬ মেগাওয়াট লোডশেডিং রেকর্ড করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, শহরাঞ্চলে, বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা ও বড় শহরগুলোতে লোডশেডিং এড়াতে সরকার একটি নীতি অনুসরণ করায় গ্রামীণ এলাকার বেশিরভাগই লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হয়েছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও পিজিসিবির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দিনের ব্যস্ত সময়ে দেশে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা হবে ১৫ হাজার মেগাওয়াট এবং সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে তা ১৬ হাজার ২০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে।
সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, এবারের গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা ১৭ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যেতে পারে।
শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সর্বোচ্চ ব্যস্ত সময়ে সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৫ হাজার ৩৫৮ মেগাওয়াট। আর দিনের অন্য ব্যস্ত সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৩ হাজার ৩২৫ মেগাওয়াট।
এনএলডিসির তথ্যে আরও দেখা যায়, দুপুর ১২টায় লোডশেডিংয়ের পরিমাণ কমে ৩৮৭ মেগাওয়াটে নেমে আসে এবং বিদ্যুতের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় আবার ইউ-টার্ন নেয়।
রোববার বিকেল ৩টায় লোডশেডিং রেকর্ড করা হয় ৪১৮ মেগাওয়াট। লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে বিপিডিবি ও পিজিসিবির সরকারি তথ্যে বড় পার্থক্য পাওয়া গেছে।
বিপিডিবির তথ্যে দেখা যায়, শনিবার দেশে সর্বোচ্চ ৩৭৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। আর এদিন সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ৫৩ মেগাওয়াট।
মোট লোডশেডিংয়ের মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে মাত্র ৪০ মেগাওয়াট, কুমিল্লায় ৮৪ মেগাওয়াট, ময়মনসিংহে ২০০ মেগাওয়াট এবং রংপুরে মাত্র ৫০ মেগাওয়াট, সিলেট, বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীতে লোডশেডিং হয়নি।
কিন্তু পিজিসিবি রেকর্ড দেখায যায়, সারাদেশে ৬৪৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে যা বিপিডিবি দেখানো চিত্রের প্রায় দ্বিগুণ। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিপিডিবির কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার সরকারি তথ্যে দেখা যায়, গ্যাসের উৎপাদন বেড়ে দৈনিক ৩০ কোটি ৬৭ লাখ ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে, যা গত কয়েক দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ।
সম্প্রতি গ্যাস উৎপাদনে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে এবং গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ সরবরাহ রেকর্ড করা হয়েছে ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানান, উভয় এলএনজি টার্মিনাল এখন পুরোদমে চলছে এবং এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে এবং শেভরন পরিচালিত বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রও উৎপাদনে ফিরে এসেছে, যা ১২০০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতার বিপরীতে ১০০০ মিলিয়ন ঘটফুট সরবরাহ করেছে।
ফলে সারাদেশে গ্যাস সরবরাহে ভালো উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা। ইউএনবি নিউজ।
এনএইচ