tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ২১:০৭ পিএম

অন্যায়-অশ্লীলতা দূর করতে রাসূল সা. এর পথ অনুসরণ জরুরি: এ টিএম মাসুম


এটিএম মা’ছুম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাসুম বলেছেন, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু সাল্লামের আদর্শ এই পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে পারলে পৃথিবী শান্তিময় হয়ে উঠবে। সমাজ আজ কুলুষিত, সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে, অলিতে-গলিতে খুন-খারাবি অন্যায়-অশ্লীল প্রতারণা জালিয়াতি চলছে। সমাজের এই অন্যায়-অশ্লীলতা দূর করতে রাসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু সাল্লামের দেখানো পথ অনুসরণ করতে হবে।


শনিবার রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর উদ্যোগে সীরাতুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উদযাপন উপলক্ষে এক ভার্চুয়ালি সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর জামায়াতের আমির বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল জব্বারের সভাপতিত্বে ও মহানগরীর সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের অন্যতম সদস্য মাওলানা আবদুল কাইয়ুমের সঞ্চালনায় সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্য পেশ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা পেশ করেন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি জেনারেল তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা ড. খলিলুর রহমান মাদানী। আলোচনা পেশ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের অন্যতম সদস্য নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সাবেক আমির আলহাজ্ব মাওলানা মইনুদ্দীন আহমাদ, আরো আলোচনা পেশ করেন তামিরুল মিল্লাত মহিলা কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান।

এ সময় এটি এম মাসুম বলেন, রাসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু সাল্লামেরর আগমনের পূর্বে আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যেই অন্ধকার পৃথিবীময় নেমে এসেছিল তিনি তার আদর্শ এবং কোরআনের শাসন পরিচালনার মাধ্যমে এই পৃথিবী থেকে অন্ধকার দূরীভূত করেছিলেন।

তিনি বলেন, রাসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বিদায় হজের ভাষণে বলেছিলেন- তোমরা যতদিন পর্যন্ত দুটি জিনিসকে আঁকড়ে ধরে রাখবে ততদিন পর্যন্ত বিপথগামী হবে না। সেই কোরআন এবং হাদিস তো আমাদের সামনেই রয়েছে কিন্তু আফসোসের বিষয় হচ্ছে- আমরা সেগুলো নিয়ে গবেষণা করি না, যতটুকু জানি আমল করি না, তাই আমাদের মাঝ থেকে এই অন্যায়-অশ্লীল দূরাচার-প্রতারণা জালিয়াতি খুন-খারাবি দূর হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলনের সকল নেতা এবং কর্মীদেরকে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লামের আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে এই জমিন থেকে সকল প্রকার অন্যায় দূর করার জন্য চেষ্টা প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের জন্য প্রয়োজন আদর্শবাদী একটি সংগঠন, আর সেই সংগঠন হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আর সেই দলের কর্মী হচ্ছেন আপনারা, আমরা। তাই আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধি বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করি।

আত্মশুদ্ধির শ্রেষ্ঠ শিক্ষক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এই বিষয় নিয়ে আলোচনা পেশ করেন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন আমিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সম্মানিত উপাধ্যক্ষ বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল শায়েখ মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী। তিনি বলেন, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে শিক্ষক হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করার মাধ্যমে বলে দিয়েছেন, আপনাকে পাঠানো হয়েছে মানুষদেরকে পরিশুদ্ধি করার জন্য। রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম সেই কাজটি করেছিলেন। জাহেলিয়াতের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেও হজরত আবু বকর, ওমর, ওসমান, হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালার মতো এবং হজরত আয়েশা, খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহার মতো সুন্দর মানুষ উপহার দিয়েছিলেন।

আদর্শ দায়ী হিসেবে রাসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এই সম্পর্কিত আলোচনা পেশ করেন মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমাদ তিনি বলেন, দায়ী হিসেবে রাসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম যে সীমাহীন ত্যাগ কোরবানির মাধ্যমে আরবের অলিতে গলিতে দাওয়াতের মিশন নিয়ে গিয়েছিলেন তা আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠ দায়ী। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সূরা হা-মীম আস সেজদায় বলে দিলেন যারা মানুষদেরকে কল্যাণের দিকে আহ্বান করে নিজে নেক আমল করে এবং নিজেকে মুসলমান হিসেবে দাবি করে তার চেয়ে বড় মানুষ আর কেউ হতে পারে না।

তিনি বলেন, আসুন আমরা সকলেই রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লামের মতো দাওয়াতি কাজের মিশন নিয়ে সমাজে ছড়িয়ে পড়ি।

নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা পেশ করেন মাওলানা মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেয়া হত, স্বামী মারা যাওয়ার পরে স্ত্রীদের কোনো অধিকার দেয়া হত না, রাসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু সাল্লামের আবির্ভাবের পরে তিনি কন্যা সন্তানদেরকে অনেক সম্মান দান করলেন, তিনি ঘোষণা দিলেন যে ঘরে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে সে জান্নাতি, আরো ঘোষণা দিলেন- কন্যা সন্তানদের সম্পত্তির ব্যাপারে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সেই অমীয় বাণী ছেলে সন্তান একজন যা পাবে কন্যা সন্তান দুইজন তা পাবে, স্বামীর মোহরানা পাবে কন্যা সন্তান। তিনি আরো ঘোষণা দিলেন- মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত। এইভাবে করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে কন্যা সন্তানদের সম্মান দান করলেন।

সভাপতির বক্তব্যে মহানগরী আমির বলেন, এই সিম্পোজিয়াম আমরা যদি কোনো হলরুমে করতে পারতাম তাহলে আরো অনেক উপকার হত। ইনশাআল্লাহ আগামীতে আমরা এ ধরনের প্রোগ্রাম হলরুমে করবো এই আশা ব্যক্ত করছি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি