পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর রিজভী নিখোঁজ ছিলেন : হাছান মাহমুদ
Share on:
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নিখোঁজ ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, কপর্দকহীন এবং উদ্ভ্রান্তের মতো কথা বলা বিএনপির মজ্জাগত হয়ে গেছে। পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ায় সারাদেশের মানুষ যখন উল্লসিত তখন বিএনপি খেই হারিয়ে ফেলেছে, কী বলবে। বিএনপি এবং পদ্মা সেতু নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছে তাদের যখন মানুষ ধিক্কার দিচ্ছে, তখন তারা খেই হারিয়ে নানা ধরনের উল্টাপাল্টা বক্তব্য দিচ্ছেন।
শনিবার (২ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের বাসায় প্রেস ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
‘সরকার পদ্মা সেতু নিয়ে সংসদে গান করছে। এটার পরিবর্তে বন্যায় দুর্গত মানুষের সহায়তায় যেন আওয়ামী লীগ ঝাঁপিয়ে পড়ে’ রিজভীর এমন বক্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ার পর রিজভী সাহেব কয়েকদিন নিখোঁজ ছিলেন, হঠাৎ বের হয়ে তিনি এখন নানা ধরনের কথা বলছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, বন্যা হওয়ার পর সেখানে বিএনপির কেউ যায়নি এবং বিএনপি বলেছে, ত্রাণ দেওয়া তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য নয়। আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, তখন বন্যা, জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন দুর্যোগ দুর্বিপাকে আওয়ামী লীগ সবসময় দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের নেত্রী ছুটে গেছেন দুর্গতদের পাশে। এবার তারা কিন্তু যায়নি।
মন্ত্রী বলেন, সংসদে এমপি মমতাজ যখন বক্তব্য শেষ করতে যাচ্ছিলেন তখন বিএনপির সংসদীয় দলের নেতা হারুনুর রশীদ আরেকটি গান গাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন মমতাজকে। তার অনুরোধে মমতাজ আরেকটি গান গেয়েছিলেন। সেটি মনে হয় রিজভী সাহেব জানেন না।
‘পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে তাই সরকারকে বিএনপি ধন্যবাদ দেবে না’ দলটির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে সারাদেশের মানুষ উল্লসিত, বিএনপি এবং পদ্মা সেতু নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছে তাদের যখন দেশের মানুষ ধিক্কার দিচ্ছে, তখন তারা খেই হারিয়ে উল্টাপাল্টা বক্তব্য দিচ্ছেন।
‘আওয়ামী লীগের গাফিলতির কারণে দেশে করোনা বাড়ছে’ বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এমন বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে তাহলে কী জন্য বাড়ছে করোনা? ভারতে কী জন্য বাড়ছে? ভারতে বিজেপির কারণে বাড়ছে কি না বিএনপির কাছে এমন প্রশ্ন রেখে সেটার ব্যাখ্যা দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি বন্যা হওয়ার পর বলেছে সরকারের কারণে বন্যা হয়েছে। আসাম এবং মেঘালয়ে দুই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি কি আমাদের সরকারের কারণে হয়েছে? নাকি আওয়ামী লীগের কারণে হয়েছে? সিলেটে একদিনে প্রায় এক হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সেটি কী কারণে হয়েছে। ১২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেজন্যই বন্যা হয়েছে।
‘বন্যা হওয়ার পর আমাদের সরকার এবং দল সর্বাগ্রে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। দল এবং সরকারের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে এবং সাপের কামড়ে কয়েকজন মারা গেছে- সেটা সত্য। কিন্তু অনাহারে কোনো মানুষ মৃত্যুবরণ করেনি।’
ড. হাছান বলেন, নিজেরা বন্যার্ত হবার পরও সেখানে আমাদের দলের নেতারা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের নিজেদের বাড়ির নিচ তলা পানিতে ডুবে গেছে। দ্বিতীয় তলায় নিজেরা আশ্রয় নিয়েছেন। তৃতীয় তলায় বন্যার্ত মানুষদের আশ্রয় দিয়ে খাবার দিয়েছেন। এ ধরনের বহু ঘটনা সিলেট অঞ্চলে হয়েছে।
পদ্মা সেতুর ব্যাপারে যারা বাংলাদেশে থেকে বিরোধিতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা নেবে কি-না এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, হাইকোর্টের একটি রায় আছে। পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করেছে তাদের খুঁজে বের করার জন্য কমিশন গঠন করতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টের রায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কী করা যায় সরকার বিবেচনা করবে।
এর আগে তথ্যমন্ত্রী রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) তৃতীয় সম্প্রচার সম্মেলনে চট্টগ্রাম থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। ঢাকা প্রান্তে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এমআই