নেপালে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে জনতার বিক্ষোভ
Share on:
দক্ষিণ এশিয়ার গণতান্ত্রিক দেশ নেপাল। বর্তমানে দেশটি গণতান্ত্রিক হলেও চলতি শতকের শুরুতে এটি রাজতন্ত্র পরিচালিত ছিল।
নেপালে নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটলেও দেশটিতে রাজতন্ত্রের হাজারও সমর্থক রয়ে গেছেন।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) নেপালের জনগণ রাজতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপালের সাবেক রাজপরিবারের হাজার হাজার সমর্থক বুধবার হিমালয়ের এই দেশটিতে রাজতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে।
এসময় তারা দেশটির সাবেক রাজা পৃথ্বী নারায়ণ শাহের মূর্তির চারপাশে একত্রিত হন। এই রাজাই ১৮ শতকে নেপালে শাহ রাজবংশের সূচনা করেছিলেন।
শাহ রাজবংশের শেষ রাজা ছিলেন জ্ঞানেন্দ্র। নানা নাটকীয়তার পর তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং ২০০৮ সালে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়ে একটি প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় নেপাল।
বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, নেপালে এখনও বহু সমর্থক রয়েছেন, যারা রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চান এবং প্রতি বছর পৃথ্বী নারায়ণের জন্মবার্ষিকীতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। বিগত সময়ে কিছু সমাবেশ অবশ্য বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে সহিংস রূপ নিয়েছে।
১১ জানুয়ারির সমাবেশটি শান্তিপূর্ণ ছিল এবং দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের সরঞ্জাম নিয়ে মোতায়েন থাকা পুলিশ এই বিক্ষোভ সমাবেশের ওপর নিবিড় নজরদারি জারি রেখেছিল।
এদিনের সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা পতাকা ওড়ানোর পাশাপাশি সঙ্গীত বাজানো এবং রাজতন্ত্রের প্রশংসাসূচক নানা স্লোগানও দেন।
প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের নেতৃত্বাধীন নেপালের নতুন সরকার সাবেক রাজা পৃথ্বী নারায়ণের জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করে।
নেপালে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করতে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে মাওবাদী কমিউনিস্ট বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দাহাল।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে প্রাসাদ হত্যাকাণ্ডের পর জ্ঞানেন্দ্র রাজা হন। কিন্তু তিনি জনপ্রিয় ছিলেন না। ফলে রাজনৈতিক দলগুলো মাওবাদী বিদ্রোহীদের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভ সংগঠিত করে এবং ২০০৬ সালে তাকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য করে।
২০০৮ সালে দেশটির পার্লামেন্ট রাজতন্ত্র বাতিলের পক্ষে ভোট দেয়। ৭৫ বছর বয়সী জ্ঞানেন্দ্র বর্তমানে একজন সাধারণ নাগরিক এবং রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় নন।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা সাবেক রাজা পৃথ্বী নারায়ণের জন্মদিন উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণা এবং সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়াকে স্বাগত জানিয়েছে।
রাজতন্ত্রকে নেপালে ফিরিয়ে আনতে হবে জানিয়ে রাম প্রসাদ উপ্রেতি নামে নেপালের একজন অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক বলেন, আমরা একজন আনুষ্ঠানিক রাজা খুঁজছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা একজন নির্বাহী প্রধানমন্ত্রীকে মেনে নিতে রাজি আছি। তবে নেপালের একজন আনুষ্ঠানিক রাজা দরকার।’
এন